কালীপুজো এলেই শব্দবাজির তাণ্ডব শুনতে পাওয়া যায় কলকাতা এবং শহরতলিতে। আর তাতে প্রাণ ওষ্ঠাগত অবস্থা হয় প্রবীণ নাগরিক থেকে শিশুদের। এই নিয়ে মামলা পর্যন্ত হয় কলকাতা হাইকোর্টে। সেই মামলার শুনানিতে সবুজ বাজি বিক্রি এবং ব্যবহার নিশ্চিত করতে রাজ্য পুলিশকে কঠোর হতে নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। একইসঙ্গে পুলিশের সঙ্গে এই কাজে নজরদারি চালাবে দুই কেন্দ্রীয় প্রতিষ্ঠান বলেও নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। ন্যাশানাল এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং রিসার্চ ইনস্টিটিউট এবং পেট্রোলিয়াম অ্যান্ড এক্সপ্লোসিভস সেফটি অরগানাইজেশন–কে রাজ্যের বাজি বাজারে নজরদারির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ফলে পরিবেশবান্ধব বাতাবরণ রাখাই মূল লক্ষ্য বোঝা যাচ্ছে।
কেন এমন নির্দেশ দিল আদালত? কলকাতা হাইকোর্ট সূত্রে খবর, এই বিষয়টি নিয়ে ২০২১ সালে একটি মামলা হয়। সেখানে রাজ্যের পক্ষ থেকে আদালতে জানানো হয়েছিল, এখানে পরিবেশবান্ধব বা ‘সবুজ’ বাজি তৈরি করার পরিকাঠামো নেই। এরপর বিষয়টি নিয়ে আরও কিছু তথ্য আসে আদালতের কাছে। তাই এবার আদালতের নির্দেশে সেই ধরনের বাজি তৈরি এবং বিক্রির বিষয়টি তদারকি করতে দুই সংস্থাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সঙ্গে পুলিশ থাকবে।
ঠিক কী জানিয়েছে আদালত? আজ, মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চে বাজি মামলা উঠতেই জানিয়ে দেওয়া হয়, কলকাতার বাজি বাজারে যাতে শুধুই সবুজ বাজি বিক্রি হয় সেটা নিশ্চিত করতে পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়। এই নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করা হল কিনা কলকাতার পুলিশ কমিশনারকে তার রিপোর্ট আদালতকে দিতে হবে। আদালত খুলতেই একসপ্তাহের মধ্যে এই রিপোর্ট জমা দিতে হবে বলেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এখানেই বিচারপতি জানান, সুপ্রিম কোর্ট এবং পরিবেশ আদালতের নির্দেশ মেনে সবুজ বাজি তৈরি এবং বিক্রিতে সাহায্য করবে কেন্দ্রীয় সরকারি দুই প্রতিষ্ঠান এবং কড়া নজরদারি চালাতে হবে।
কেন সবুজ বাজিতে জোর দিচ্ছে আদালত? জানা গিয়েছে, এই সবুজ বাজি তৈরি এবং বিক্রি নিশ্চিত করতে পারলে তিনটি বিষয় একসঙ্গে ঘটবে। এক, শব্দের তীব্রতা থাকবে না। ফলে প্রাণ ওষ্ঠাগত অবস্থা দেখা দেবে না। দুই, বাতাসে দূষণ ছড়াবে না। ফলে বাতাসের মান খারাপ হবে না। আর তিন, পরিবেশবান্ধব বাতাবরণ তৈরি হবে। যা এখন খুব প্রয়োজন সর্বত্র। একই সঙ্গে নিষিদ্ধ বাজি এবং শব্দবাজি সহজেই বাজেয়াপ্ত হবে।