টানা চতুর্থবার দেশের সবচেয়ে নিরাপদ শহরের শিরোপা জিতল কলকাতা। ২০২০, ২০২১, ২০২২ এর পর ২০২৩ সালেও অপরাধের হার সবচেয়ে কম বলে জানাল কেন্দ্রীয় ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরো (এনসিআরবি)। সদ্য প্রকাশিত ওই রিপোর্টে দেখা গিয়েছে, দেশের ১৯টি মেট্রোপলিটন শহরের মধ্যে অপরাধের নিরিখে কলকাতা রয়েছে একেবারে শেষ স্থানে। অর্থাৎ, ‘সিটি অব জয়’-ই ফের ‘সেইফেস্ট সিটি অব ইন্ডিয়া’। প্রসঙ্গত, আরজি কর কাণ্ড ঘটেছিল ২০২৪ সালের অগস্টে। তবে এই রিপোর্ট ২০২৩ সাল পর্যন্ত।
আরও পড়ুন: NCRB Report: অ্যাসিড হামলায় যোগীর রাজ্যকে পিছনে ফেলে আবারও এগিয়ে বাংলা
রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২৩ সালে কলকাতায় প্রতি এক লক্ষ জনসংখ্যায় গুরুতর বা আদালতগ্রাহ্য অপরাধের সংখ্যা মাত্র ৮৩.৯। যা গোটা দেশের মধ্যে সবচেয়ে কম। অপরদিকে, এই তালিকার শীর্ষে রয়েছে কেরালার কোচি, দিল্লি ও গুজরাতের সুরাট যেখানে অপরাধের হার যথাক্রমে ২১০৫.৩ এবং ১৩৭৭.১। এনসিআরবির তথ্য বলছে, ২০২১ থেকে ২০২৩ পর্যন্ত কলকাতায় অপরাধের হার ক্রমাগত কমেছে। ২০২১ সালে মোট অপরাধের সংখ্যা ছিল ১৪ হাজার ৫৯১, অপরাধের হার ১০৩.৫। ২০২২ সালে তা নেমে হয় ১২ হাজার ২১৩, হার কমে দাঁড়ায় ৮৬.৫। আর ২০২৩ সালের রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, অপরাধের সংখ্যা আরও কমে হয়েছে ১১ হাজার ৮৪৩।
বিশেষ ও সামাজিক আইনের অধীনে অপরাধের হার প্রতি লক্ষে ৬.৪, আর আইপিসি বা বর্তমানের বিএনএস-এর আওতাভুক্ত অপরাধের হার ৭৭.৫। সামগ্রিকভাবে আদালতগ্রাহ্য অপরাধের হার প্রতি এক লক্ষে ৮৩.৯ যা দেশের যে কোনও বড় শহরের তুলনায় সর্বনিম্ন।মহিলাদের নিরাপত্তার ক্ষেত্রেও সাফল্যের নজির গড়েছে কলকাতা। রিপোর্ট বলছে, প্রতি এক লক্ষ মহিলার মধ্যে অপরাধের শিকার হচ্ছেন মাত্র ২৫.৭ জন। এই সূচকে কলকাতা দেশের মধ্যে দ্বিতীয় নিরাপদ শহর।
কলকাতা পুলিশের দাবি, ২০২৩ সালে শহরে মোট খুনের ঘটনা ঘটেছে ৪৩টি এবং প্রতিটি ক্ষেত্রেই চার্জশিট জমা পড়েছে। নির্ভুল চার্জশিট দাখিল ও গতি এই দুই মানদণ্ডে দেশের মধ্যে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে লালবাজার।
রিপোর্ট প্রকাশের পরই উচ্ছ্বাস ফুটে উঠেছে তৃণমূল কংগ্রেস ও কলকাতা পুলিশের মুখে। তৃণমূলের এক্স হ্যান্ডেল থেকে বলা হয়েছে, বাংলার গর্ব কলকাতা দেশের সবচেয়ে নিরাপদ শহর। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জিরো টলারেন্স নীতিই এই সাফল্যের মূল ভিত্তি। মুখ্যমন্ত্রী নিজেও বারবার বলেছেন, নাগরিক নিরাপত্তাই প্রশাসনের প্রথম দায়িত্ব এবং সবচেয়ে বড় জনসেবা। অন্যদিকে, কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে সমালোচনার ঝড় উঠেছে রিপোর্ট প্রকাশে বিলম্ব হওয়া নিয়ে। ২০২২ সালের পর দুই বছর ধরে এনসিআরবির রিপোর্ট প্রকাশিত হয়নি। অবশেষে ২০২৫ সালের অক্টোবরে ২০২৩ সালের তথ্য প্রকাশ পায়।