গোটা বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে পরিষ্কার এবং পরিচ্ছন্ন শহর কোনটি? এই প্রশ্ন এখন জোর চর্চায় উঠে এসেছে। কারণ পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, কলকাতা হচ্ছে সবচেয়ে পরিষ্কার এবং পরিচ্ছন্ন শহরের মধ্যে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। তবে এই বিষয়ে পরীক্ষা কলকাতা পুরসভা করেনি। বরং এই পরীক্ষা করে দেখেছে, আইআইটি–দিল্লির সেন্টার ফর এক্সেলেন্স ফর রিসার্চ ইন ক্লাইমেট অ্যান্ড এয়ার পলিউশন। বাতাসের মানের দিক থেকেও কলকাতা এতটাই উন্নত যে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছে। এমনকী কলকাতার বাতাসের মান ভাল থাকার জন্য মানুষের রোগভোগ এখানে কম।
তবে চেন্নাইয়ের শহরও পরিষ্কার–পরিচ্ছন্নের দিক থেকে অত্যন্ত ভাল জায়গায় রয়েছে। কিন্তু অবাক করার বিষয় হল, দিল্লিতে চূড়ান্ত বায়ুদূষণ রয়েছে। আর কলকাতা থেকে ঢাকার দূরত্ব ৪০৬ কিমি। ওপার বাংলার এই শহর সবচেয়ে দূষিত বলে চিহ্নিত হয়েছে। এই বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গ দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের চেয়ারম্যান কল্যাণ রুদ্র বলেছেন, ‘এখানে বাতাসের মানের উন্নতি ঘটেছে। কলকাতা শহরে দূষণ কমানোর লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছিল। পরিবেশ অনুকূল রাখার চেষ্টা করা হয়েছিল। তাই পরীক্ষায় এমন তথ্য উঠে এসেছে।’ বারবার কলকাতায় নানা দূষণ নিয়ে পরিবেশ আদালত ধাক্কা দিয়েছিল রাজ্য সরকারকে। সেখানে এই সাফল্য বেশ তাৎপর্যপূর্ণ।
এখানে কলকাতা পুরসভা যে ভাল কাজ করেছে সেটাও উঠে এসেছে। কলকাতা পুরসভা সূত্রে খবর, শহরে বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ করা হয়েছিল। যাতে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকে তিলোত্তমা কলকাতা। সারা শহরে এক কোটি গাছ লাগানোর লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছিল। যা চলছে। ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট, প্লাস্টিক পুনর্ব্যবহারযোগ্য করে তোলা, পরিশুদ্ধ জল, ইলেকট্রিক যানবাহনের সংখ্যা বাড়ানো, মেকানিক্যাল সুইপার ব্যবস্থা এবং কলকারখানা থেকে শহরে দূষণ ছড়িয়ে পড়ছে কিনা সেদিকে কড়া দৃষ্টি রাখা হয়েছে। এইসব কারণগুলিই কলকাতাকে দ্বিতীয় স্থানে নিয়ে গিয়েছে। এখন আরও কাজ করতে হবে।
আরও পড়ুন: ত্রিপুরার পঞ্চায়েত নির্বাচন কবে হতে চলেছে? জানিয়ে দিলেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনার
এই খবর প্রকাশ্যে আসে কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিম এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করার পর। সেখানে তিনি এই বিষয়ে লিখেছেন। মেয়র লেখেন, ‘২০১৯ সালে ন্যাশানাল ক্লিন এয়ার প্রোগ্রাম কলকাতাকে প্রথম ১০টি দূষিত শহরের মধ্যে একটি বলে চিহ্নিত করেছিল। আজ আমার বুক গর্বে ভরে উঠেছে যখন কলকাতাকে বিশ্বের মেট্রো শহরগুলির মধ্যে দ্বিতীয় স্থানে রাখা হয়েছে। গাছ লাগানো থেকে শুরু করে একাধিক পদক্ষেপের ফলেই এটা সম্ভব হয়েছে। তাই আবার আমি আমার শহরের নাগরিকদের কাছে আবেদন জানাবো, চলুন একসঙ্গে লড়াই করি, শপথ নিই শহরকে পরিচ্ছন এবং সবুজ রাখতে। যা পরের প্রজন্মের জন্য রেখে যেতে পারি।’