মৃত মালিকের এটিএম পিন জানা ছিল। সেটা ব্যবহার করেই আস্তে আস্তে ব্যাঙ্ক থেকে টাকা সরাচ্ছিল ৪৫ বছরের রিতা রায়। যদিও শেষ রক্ষা হল না। সে ধরা পড়ে গেল কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের জালে। এরকম কেস অত্যন্ত বিরল বলে জানিয়েছে পুলিশ।
জানা গিয়েছে, আনওয়ার শাহ রোডে এক বিলাসবহুল কমপ্লেক্সে থাকতেন সত্যনারায়ণ আগরওয়াল। ইয়েস ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট ছিল তাঁর। সেই ফ্ল্যাটে কাজ করত রিতা। সত্যনারায়ণবাবুর কিছুতেই এটিএম পিন মনে থাকত না। তাই তাঁর ছেলে অনুরাগ তাঁকে পিন নম্বরটি মেসেজ করে দিয়েছিল। সত্যনারায়ণবাবুর মৃত্যুর পর কোনও ভাবে ফোন থেকে এই পিন নম্বরটি উদ্ধার করে পরিচারিকা, বলে জানান পুলিশ যুগ্ম কমিশনার মুরলীধর শর্মা।
অভিযুক্ত এরপর তাঁর জুই জামাইকে টাকা চুরির কাজে লাগায়। ধীরে ধীরে ৭১ দিনে ৩৪.৯০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় বলাগড়ের নিবাসী ৪৫ বছরের সৌমিত্র সরকার এবং করিমপুরের বাসিন্দা, বছর ৩১-শের রঞ্জিত মল্লিক।
অনুরাগ আগরওয়াল এরপর বুঝতে পারেন যে অ্যাকাউন্ট থেকে অনেকটা টাকা কেউ সরিয়ে নিয়েছে। যাদবপুর থানায় পয়লা জুন তিনি অভিযোগ দায়ের করেন। এরপর লালবাজারের গোয়েন্দা দফতরের কাছে এই কেস যায়।
ইয়েস ব্যাঙ্কের থেকে জানা যায় যে ওই অ্যাকাউন্ট থেকে মার্চের ২০ তারিখ থেকে মে মাসের ৩০ তারিখের মধ্যে বারবার টাকা তোলা হয়েছে। নদিয়ার করিমপুর, কৃষ্ণনগর ও রাণাঘাট এবং হুগলির গুপ্তিপাড়া থেকে টাকা তোলা হয়েছে বলে জানা যায়।
সিসিটিভি থেকে জানা যায় যে মাস্ক ও টুপি পরে এই টাকা তোলা হয়েছে। কিন্তু তদন্তে নেমে সন্দেহ যায় পরিচারিকার ওপর। স্থানীয় লোকদের সাহায্যে অগস্টের ১৩ তারিখ রিতার দুই জামাইকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এরপর পুলিশের তদন্তে ভেঙে পড়ে তারা। পুরো ঘটনার কথা স্বীকার করে এই দুই অভিযুক্ত। এরপর রিতাকে তার নাকাশিপাড়ার বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়। এখনও পর্যন্ত চুরি হওয়া ৩৫ লাখের মধ্যে ২৭ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। আপাতত ২৫ তারিখ অবধি পুলিশ হেফাজতে আছে এই তিন অভিযুক্ত।