বুধবারও দেখা গিয়েছিল সন্তানকে কোলে নিয়ে মা আত্মহত্যা করতে মেট্রোর সামনে ঝাঁপ দিয়েছেন। এমন ঘটনা প্রায়ই ঘটছে কলকাতা মেট্রো রেলে। সিসিটিভি থেকে শুরু করে রেল পুলিশ দিয়ে এটা আটকানোর চেষ্টা করা হয়েছিল। তাতে অনেকটা রোখা গেলেও সম্পূর্ণ সম্ভব হয়নি। বরং ইদানিং মেট্রো রেলে আত্মহত্যার ঘটনা বেড়েই চলেছে। সেটা কবি সুভাষ থেকে শুরু করে দমদম, দক্ষিণেশ্বর সর্বত্র আত্মহত্যা করার জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে এই পাতালপথকে। তার জেরে যাত্রীরা বিপাকে পড়ছেন। কারণ এমন ঘটনা ঘটলে ট্রেন থামিয়ে দিতে হচ্ছে। বন্ধ রাখতে হচ্ছে বেশ কিছুক্ষণ পরিষেবা।
এদিকে কলকাতায় ১৯৮৪ সালের ২৪ অক্টোবর দেশের প্রথম মেট্রোর বাণিজ্যিকভাবে চালু হয়। এখন ৪০ বছরের ইতিহাস তৈরি করেছে কলকাতা মেট্রো। এই চার দশকে কয়েক হাজার মানুষজন আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন এখানে। অনেকের প্রাণ গিয়েছে, আবার অনেককে বাঁচানোও গিয়েছে। নানা উদ্যোগ নেওয়া হলেও সম্পূর্ণ শেষ করা যায়নি এই প্রচেষ্টার। যা কপালে ভাঁজ ফেলেছিল মেট্রো কর্তৃপক্ষের। এবার নাগরিকদের মরণঝাঁপ ঠেকাতে এবং জীবন বাঁচাতে উদ্যোগী হল মেট্রো রেল। এবার স্টিলের গার্ডরেল বসিয়ে মানুষজনের জীবন বাঁচাতে আরও সক্রিয় হল মেট্রো। যা অবশ্যই প্রশংসনীয়।
আরও পড়ুন: প্রোমোটার তথা তৃণমূল নেতাকে গুলি করে খুন, শিবপুরের বুকে রোমহর্ষক হত্যাকাণ্ড
অন্যদিকে কালীঘাট মেট্রো স্টেশনে এখন ডাউন প্ল্যাটফর্মে পরীক্ষামূলকভাবে এই ‘গার্ডরেল’ বসানোর কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। আগামী দিনে মেট্রোর সমস্ত স্টেশনে এই ‘গার্ডরেল’ বসানো হবে। অনেকে মনে করছেন, এই গার্ডরেলের জেরে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে যাত্রীদের। তাড়াহুড়ো করলে তাতে ধাক্কা লাগতে পারে। এতে হিতে বিপরীত হতে পারে। সেটা যাতে না হয় তার জন্য মেট্রো বিষয়টি প্রচারে নিয়ে আসবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যাত্রীরা ট্রেন ধরতে যাওয়ার সময় মাইকিং করা হবে। সেই ঘোষণা সকলে শুনে সতর্ক হবেন। সেক্ষেত্রে দুর্ঘটনা ঘটবে না বলে মনে করছেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ।
এছাড়া ইস্ট–ওয়েস্ট মেট্রো করিডরে প্ল্যাটফর্মের দু’ধারে কাচের দেওয়াল আছে। যা স্লাইডিংভাবে খুলে যায়। হাওড়ার ক্ষেত্রেও এমন ব্যবস্থা রয়েছে। আসলে এগুলি পরে তৈরি হওয়ায় আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা গিয়েছে। কিন্তু বাকি স্টেশন বহু আগে তৈরি হওয়ায় তখন সেসব করা যায়নি। সেক্ষেত্রে এখনও এমন সমস্যা দেখা দেওয়ায় উদ্যোগ নিল মেট্রো কর্তৃপক্ষ। মানুষের জীবন বাঁচাতে ট্রেনে ওঠার আগে গার্ডরেল রাখা হচ্ছে। যাতে রেল পুলিশ সুযোগ পায় এমন অঘটন আটকাতে। মানুষকে সচেতন করার জন্য ঘোষণা করা হবে।