বাংলার মাটিতে ভোট হচ্ছে। অথচ ভোটের ব্যালটে বাংলা ভাষাই জায়গা পেল না বলে অভিযোগ। এই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে চারটি সংগঠন। আর তাদের নাম লেখা হিন্দি এবং ইংরেজিতে। এইরকম ব্যালট নিয়েই তুমুল বিতর্ক শুরু হয়েছে। যে রাজ্যে নির্বাচন সেখানের ভাষা থাকা উচিত। সেটা কেন ব্যালটে থাকল না? তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন মেট্রো রেলের কর্মীরা। বুধবার এবং বৃহস্পতিবার মেট্রো রেলের এই নির্বাচন হচ্ছে। একদফা ভোটগ্রহণ হয়ে গিয়েছে। আগামীকাল বাকি দফার নির্বাচন হবে। আর এখানে বাম, কংগ্রেস, তৃণমূল ও আরএসএস প্রভাবিত সংগঠনের সদস্যরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। সেখানেই ব্যালট বিতর্ক তৈরি হয়েছে।
বামেরা এখানে গোলাপ ফুল চিহ্ন নিয়ে লড়ছেন। তৃণমূল কংগ্রেসের চিহ্ন রেলইঞ্জিন। বই চিহ্ন আছে কংগ্রেসের। আর ভারতীয় মজদুর সংঘের শ্রমিক সংগঠনের প্রতীক মুষ্টিবদ্ধ হাতে ধানের শিষ। এই নির্বাচন অরাজনৈতিক বলা হলেও সেখানে রয়েছে, ডান–বাম–বিজেপি। এই নির্বাচন নিয়ে সরগরম মেট্রো ভবন। ব্যালট দেখে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে সব সংগঠনের। ২০১৩ সালে শেষ নির্বাচন হয়েছিল। তারপর আবার এই ২০২৪ সালে হচ্ছে। গত নির্বাচনে বামফ্রন্ট প্রভাবিত মেট্রো রেলওয়ে মেনস ইউনিয়ন জয়ী হয়েছিল। টানা ১১ বছর ধরে মেট্রোর স্বীকৃত সংগঠন রয়েছে। এবার নানা ইস্যুকে সামনে রেখে নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বিতা চলছে।
আরও পড়ুন: দমদমের যুবতী পর্যটকের মৃত্যু সান্দাকফুতে, টুমলিঙে থেকে নেমে অসুস্থ, কী হয়েছিল?
এখানে মোট ৩৩২৭ জন ভোট দেবেন। বুধবার ভোট চলছে। বৃহস্পতিবারও তা চলবে। কিন্তু ব্যালটে কেন বাংলা ভাষা নেই? এই প্রশ্ন তুলে সরব হয়েছে সব সংগঠনই। মেট্রো রেলওয়ে প্রগতিশীল শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সহ সভাপতি শুভাশিষ সেনগুপ্ত বলেন, ‘কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ম আছে, তিন ভাষাতেই রাখতে হবে ব্যালটে। হিন্দি, ইংরেজি এবং আঞ্চলিক ভাষা। কিন্তু এক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।’ মেট্রো রেলওয়ে মেনস ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সুজিত ঘোষের বক্তব্য, ‘এটা আমাদের চোখে ধরা পড়েছে। কিন্তু এখন আর কিছু করার নেই। বাঙলায় অবশ্যই সংগঠনের নাম ব্যালটে লেখা থাকা উচিত ছিল।’
কদিন আগে ভাষাকে কেন্দ্র করে দুই মহিলা যাত্রীর মধ্যে তুমুল অশান্তি হয়েছিল। তাও আবার মেট্রো রেলে। সেই ভিডিয়ো ভাইরাল হয়ে যায়। ওই ভিডিয়োয় শোনা যায়, এক মহিলাকে অন্য যাত্রী বলছেন, ‘ভারতে থেকে আপনি বাংলা বলতে পারেন আর হিন্দি বলতে পারেন না?’ জবাবে বাংলা ভাষায় কড়া জবাব দেন আর এক মহিলা যাত্রীও। আর ওই অবাঙালি মহিলাকে বলতে থাকেন, ‘এটা বাংলাদেশ নয়, এটা ভারত।’ আর তা নিয়ে আলোড়ন পড়ে যায় সোশ্যাল মিডিয়ায়। প্রতিবাদ করতে দেখা যায় একাধিক সংগঠনকে। আর এবার মেট্রো রেলের নির্বাচনেই বাংলা ভাষাকে সরিয়ে রাখা হল বলে অভিযোগ।