রাজ্য–রাজনীতি এবং জাতীয় রাজনীতিতে এখন অপ্রাসঙ্গিক বামেরা। ইন্ডিয়া জোটে আছে বটে, তেমন গুরুত্ব নেই। কারণ অন্যান্য রাজ্যেও বিরাট কোনও প্রভাব ফেলতে তারা পারেনি। আর বাংলায় একদা ক্ষমতায় থেকেও এখন শূন্যতা কাটাতে পারেনি। এই আবহে ভারতীয় রেলের কর্মচারী ইউনিয়নের নির্বাচনে লালপার্টি প্রভাবিত কর্মচারী সংগঠন নিজেদের প্রতিপত্তি ধরে রাখতে পারল। একইভাবে কলকাতা মেট্রো রেলের নির্বাচনে আবার একবার কর্মচারী ইউনিয়ন দখলে রাখল বাম প্রভাবিত মেট্রো রেলওয়েমেন’স ইউনিয়ন। যা বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। গত ৪ এবং ৫ ডিসেম্বর মেট্রো রেলের ইউনিয়ন গঠনের জন্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। আর বৃহস্পতিবার সেই নির্বাচনের ফল প্রকাশিত হয়েছে।
আর এই ফলাফল সামনে আসতেই আশার আলো দেখতে শুরু করেছেন বামপন্থীরা। কারণ এই নির্বাচনে বিজেপি, তৃণমূল এবং কংগ্রেস প্রভাবিত কর্মচারী ইউনিয়নকে তুরি মেরে হারিয়ে দিয়েছে বাম প্রভাবিত কর্মচারী ইউনিয়ন। আর এখান থেকেই এখন আশার আলো দেখছেন অনেকে। যদিও মেট্রো রেলের নির্বাচনেও বামেদের রক্তক্ষরণ অব্যাহত রয়েছে। কারণ ২০১৩ সালের মেট্রোর নির্বাচনে বাম প্রভাবিত কর্মী সংগঠন বৈধ ভোটের ৪৬ শতাংশ পেয়ে ইউনিয়ন জিতেছিল। এবার সেখানে ১০ শতাংশ কমে গিয়েছে। আর তাই মেনস ইউনিয়নের প্রাপ্ত ভোটের হার এখন দাঁড়িয়েছে ৩৬.৫১ শতাংশে।
আরও পড়ুন: শীতের রাতে দু’দফায় নাকা চেকিং কলকাতা পুলিশের, কড়া নির্দেশ দিলেন নগরপাল
বামেদের মেনস ইউনিয়ন জিতলেও ভোট কমেছে। এটাই রক্তক্ষরণ। তবে এই জয় ছোট করে দেখছেন না বামপন্থীরা। এভাবেও ফিরে আসা যায় বলে মনে করছেন তাঁরা। যদিও বাংলায় রাম–বাম সমীকরণের প্রভাব পড়েছে মেট্রো রেলের নির্বাচনেও। ভোট ট্রান্সফার হয়েছে। তাই ১০ শতাংশ কমেছে বামেদের ভোট। গতবারের নির্বাচনে বিজেপি প্রভাবিত কলকাতা মেট্রো রেলওয়ে কর্মচারী সংঘের জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছিল। বৈধ ভোটের মাত্র ১ শতাংশ পেয়েছিল পদ্মশিবির সমর্থিত কর্মী ইউনিয়ন। এবার সেখানে একলাফে বেড়ে হয়েছে ১১.৯৯ শতাংশ। আর এই বাড়তি ভোট এসেছে বামেদের থেকেই বলে খবর।
এবার আসা যাক বাংলার শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মী ইউনিয়নের ফলাফলে। এই নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের সরকারের জমানায় পরপর দু’বার মেট্রো রেলে ইউনিয়ন গঠনে জিততে ব্যর্থ হল তারা। তৃণমূল কংগ্রেসের প্রভাবিত মেট্রো রেলওয়ে প্রগতিশীল কর্মচারী ইউনিয়ন এবার বৈধ ভোটের ৩২.৪৬ শতাংশ পেয়েছে। যদিও এই ইউনিয়ন দখলের অন্যতম শর্ত মোট বৈধ ভোটের অন্তত ৩৫ শতাংশ পেতেই হবে। আর সেটা ২০১৩ সালের মতো আবার একবার সেই যাদু সংখ্যা স্পর্শ করতে পারল না ঘাসফুল শিবির। যা একপ্রকার সেটব্যাক।