কলকাতা শহরজুড়ে মেট্রো সম্প্রসারণ হয়েই চলেছে। একদিকে হাওড়া পর্যন্ত গিয়েছে মেট্রো। আবার অপরদিকে নোয়াপাড়া, দমদম ক্যান্টনমেন্ট, যশোর রোড এবং বিমানবন্দর পর্যন্ত অংশের নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। এবার কলকাতা মেট্রো ইয়েলো লাইনের নির্মাণে গতি নিয়ে আসছে। বিমানবন্দর থেকে বিরাটির মধ্যে ৬.৮ কিমির দূরত্ব এবং বাকি পুরোটাই ভূগর্ভস্থ পথে এগিয়েছে ইয়েলো লাইন। বিমানবন্দর থেকে বিরাটি পর্যন্ত অংশের নির্মাণের জন্য ১৮ মিটার দৈর্ঘ্যের ক্রেন প্রয়োজন হয়। এত বড় ক্রেন ব্যবহার করা নিয়ে প্রথমে রাজি হচ্ছিল না এয়ারপোর্ট অথরিটি অফ ইন্ডিয়া (এএআই)। পরে অবশ্য তাতে সাড়া মেলে।
এই অনুমতি পাওয়ার পরই নতুন নির্মাণের জন্য টেন্ডার ডেকেছে রেল বিকাশ নিগম লিমিটেড। বিমানবন্দর থেকে বারাসত পর্যন্ত পথ হিসাব করলে দেখা যায় প্রায় ১১ কিলোমিটার। এই দীর্ঘ ভূগর্ভস্থ মেট্রো তৈরি করার জন্য প্রাথমিক ১৩,৩২০ কোটি টাকা ধার্য করা হয়েছিল। যদিও ২০২৪ সালের পূর্ণাঙ্গ বাজেটে এই কাজ শুরু করার জন্য মাত্র ২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। তাতে গোটা কাজটি সম্ভব হবে কিনা তা নিয়ে সন্দিহান সবপক্ষই। তবে লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে ২০২৭ সালের শুরুতে বিমানবন্দর থেকে বারাসত পর্যন্ত অংশের কাজ শেষ করা হবে। কলকাতা মেট্রো সূত্রে খবর, এই বিমানবন্দরের বাউন্ডারি ওয়ালের মধ্যে ইয়েলো লাইনের যে কাজ হবে সেটা সম্পূর্ণ করা হবে রিইনফোর্সড সিমেন্ট কংক্রিট দিয়ে।
আরও পড়ুন: ‘নয়াদিল্লিতে গিয়েছেন কিছু সময় কাটানোর জন্য’, নতুন বার্তা দিলেন শেখ হাসিনা তনয়
এই ইয়েলো লাইনের কাজ সম্পূর্ণ হলে বিপুল পরিমাণ জনগণের উপকার হবে। কারণ এই লাইনে দ্রুততা এবং আরামদায়ক সফর করতে পারবেন তাঁরা। বিমানবন্দরের মতো এলাকায় ভবিষ্যতে যাতে মেট্রোর এই লাইনে কাজ করার জন্য কোনও সমস্যা দেখা না দেয়, তার জন্যই বিশেষ ধরনের সিমেন্ট দিয়ে এই এলাকার কাজ করা হবে। গুরুত্বের বিচারে বিমানবন্দর এলাকা অত্যন্ত স্পর্শকাতর। তাই এখানে টানেল বোরিং মেশিন ব্যবহার করা হবে না। এখানে তার পরিবর্তে বক্স পুশিং মেথডে সুড়ঙ্গ কাটার কাজ করা হবে। তাতে সময় কম লাগবে। নিরাপদ থাকবে।
এই পথের নির্মাণ শেষ হয়ে ট্রেনের চাকা গড়াতে শুরু করলে অনেকটা কাজ এগিয়ে যাবে। তখন কলকাতা মেট্রোর ইয়েলো লাইনের নোয়াপাড়া থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত অংশে মেট্রো চলাচলে আমজনতা এগিয়ে আসবে। বিশেষ করে অফিস টাইমে। লোকাল ট্রেনে যে বাদুড়ঝোলা ভিড় হয় সেটা অনেকটা কমবে বলে মনে করা হচ্ছে। কাজটি খুব তাড়াতাড়ি শুরু করে দেওয়া হবে। এই অংশের চারটি স্টেশনই এখন যাত্রী পরিবহণের জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত। কদিন আগেই নোয়াপাড়া থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত অংশে রেক চলার মহড়াও শুরু হয়েছে। আর কয়েক মাসের মধ্যেই এই অংশে বাণিজ্যিকভাবে যাত্রী পরিবহণের অনুমোদন মিলবে কমিশনার অফ রেলওয়ে সেফটি থেকে বলে আশা করা হচ্ছে।