আবারও কলকাতা মেট্রোয় আত্মহত্যার ঘটনা ঘটল! যার জেরে বেশ কিছুক্ষণ ব্যাহত হল ট্রেন চলাচল! স্বাভাবিক পরিষেবা বন্ধ রাখতে হল প্রায় আধঘণ্টা।
প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, বুধবার বিকেল সোয়া চারটে থেকে সাড়ে চারটের মধ্যে এসপ্ল্যানেড মেট্রো স্টেশনে আত্মহত্যার ঘটনাটি ঘটে। ফলত, ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, আত্মহত্যার পর মূলত তিন স্টেশনে ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। এই তিনটি স্টেশন হল - চাঁদনি চক, এসপ্ল্য়ানেড এবং পার্ক স্ট্রিট।
এই তিনটি স্টেশন বাদ দিয়ে একদিকে, দক্ষিণেশ্বর থেকে সেন্ট্রাল পর্যন্ত মেট্রো চলাচল করানো হয়। অন্যদিকে, কবি সুভাষ থেকে ময়দান পর্যন্ত মেট্রো চলাচল জারি রাখা হয়। এর ফলে বেজায় সমস্যায় পড়েন যাত্রীরা।
বিশেষ করে এই সময়টা থেকেই প্রধানত অফিস ফেরত যাত্রীদের যাতায়াত শুরু হয়। সবথেকে সমস্যা পড়েন তাঁরা।
ঘটনার সময় রবীন্দ্র সরোবর মেট্রো স্টেশনে উপস্থিত হিন্দুস্তান টাইস বাংলা-র প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, এসুপ্ল্য়ানেড স্টেশনে ঘটা এই আত্মহত্যার ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর বেশ কিছুক্ষণ ধরে দমদম, নোয়াপাড়া, দক্ষিণেশ্বরগামী যাত্রীদের টোকেন দেওয়ার প্রক্রিয়া বন্ধ রাখা হয়। ফলত, স্টেশনে ধীরে ধীরে যাত্রীদের ভিড় কিছুটা বাড়তে শুরু করে। ঘটনার প্রায় আধঘণ্টা পর ট্রেন চলাচল পুনরায় স্বাভাবিক করার চেষ্টা শুরু হয়।
প্রসঙ্গত, মাঝে কিছুদিন বন্ধ থাকার পর আবারও মেট্রোয় আত্মহত্যার প্রবণতা বাড়ছে। এই ধরনের ঘটনা ঠেকাতে রেলের তরফে প্রত্যেকটি মেট্রো স্টেশনে আরপিএফ জওয়ান মোতায়েন করা থেকে শুরু করে সিসিটিভি ক্যামেরায় সর্বক্ষণ নজরদারি চালানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। কিন্তু, তাতেও বিশেষ লাভ হয়নি।
কলকাতা মেট্রোর লাইনে ঝাঁপ মেরে আত্মহত্যার ঘটনা মূলত উত্তর-দক্ষিণ শাখাতেই ঘটে। কারণ, কলকাতার এই মেট্রো রুটই সবথেকে পুরোনো। এই রুটের প্ল্যাটফর্মগুলি পুরোনো ধাঁচে নির্মিত। এখানে কোনও সুরক্ষা প্রাচীর নেই। ফলত, আত্মহত্যার ঘটনা বারবার ঘটছে।
এই ধরনের ঘটনা রুখতে সম্প্রতি কালীঘাট মেট্রো স্টেশনে গার্ডরেল বসানোর ব্যবস্থা করে কর্তৃপক্ষ। কিন্তু, তাতে হিতে বিপরীত হয়। আদৌ ওভাবে আত্মহত্য়া ঠেকানো সম্ভব কিনা, তা নিয়ে যাত্রীদের পাশাপাশি নানা মহলের তরফে প্রশ্ন তোলা হয়।
উপরন্তু, বহু ক্ষেত্রেই গার্ডরেলের সামনে ট্রেনের স্বয়ংক্রিয় দরজা খোলায় সমস্যার পড়েন যাত্রীরা। ফলত, মেট্রো কর্তৃপক্ষ গার্ডরেল বসানোর কাজ বন্ধ করে দেয়।
উল্লেখ্য, আত্মহত্যা ঘটনা যাতে না ঘটে, না নিশ্চিত করতেই ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো রেলের প্রত্যেকটি প্ল্যাটফর্মে লাইনের ধার ধরে কাচের দেওয়াল এবং স্বয়ংক্রিয় দরজা লাগানো হয়েছে। অত্যাধুনিক এই ব্যবস্থাপনা পরিষেবা আরও সুরক্ষিত করে তুলেছে। কিন্তু, উত্তর-দক্ষিণ রুটে এমন কোনও ব্যবস্থাপনা না থাকাতেই সমস্য়ার সমাধান করা সম্ভব হচ্ছে বলে মত ওয়াকিবহাল মহলের।