রাজ্যজুড়ে নামতে শুরু করেছে তাপমাত্রা পারদ। তারপরে অব্যাহত রয়েছে ডেঙ্গির দাপট। বিশেষ করে এই সময়ও ডেঙ্গির সংখ্যা বাড়ছে কলকাতায়। স্বাস্থ্য ভবন সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ২ সপ্তাহে কলকাতায় নতুন করে ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়েছেন ২৫০ জন। আর চলতি বছরে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত কলকাতায় মোট ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা হল ১১০১ জন। এই অবস্থায় নতুন করে যাতে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি না পায় তার জন্য শহরের সব বরোকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত মশা দমনের কর্মসূচি চালিয়ে যেতে পুরসভার তরফে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: আরজি কর হাসপাতালে ডেঙ্গি আক্রান্তের মৃত্যু, স্বাস্থ্যভবনকে তদন্তের নির্দেশ মেয়র
জানা যাচ্ছে, সাধারণত শিয়ালদা, কসবা, টালিগঞ্জ, নিউ আলিপুর, বেহালা প্রভৃতি এলাকায় ডেঙ্গির প্রকোপ বেশি। তার ওপর শনিবার বেশ কিছু জায়গায় বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি হয়েছে। এর ফলে ডিসেম্বর পর্যন্ত কলকাতায় মশাবাহিত রোগের প্রকোপ থাকতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন পতঙ্গবিদরা। তাই এইসব ডেঙ্গিপ্রবণ এলাকাগুলিতে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের আধিকারিকদের বাড়তি নজরদারি চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে প্রশ্ন উঠছে শনিবার বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি হলেও বেশ কয়েকদিন ধরেই বৃষ্টি হয়নি। তা সত্ত্বেও কেন ডেঙ্গির দাপট অব্যাহত রয়েছে কলকাতায়? বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, শীত পড়লেই যে ডেঙ্গি দাপট কমে যায় সেই ধারণা পুরোপুরি ঠিক নয়। কারণ জমা দল থাকলেই ডেঙ্গি মশা বংশবৃদ্ধি করে। তাছাড়া, জলবায়ু যেভাবে বদলাচ্ছে তাতে ডেঙ্গির ধরনও বদলাচ্ছে।
এ বিষয়ে কলকাতা পুরসভার এক বিশেষজ্ঞ জানান, সাধারণত তাপমাত্রা ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা নিচে নেমে গেলে ডেঙ্গি মশার বংশবিস্তার কমে যায়। তবে কলকাতার আবহাওয়ার পরিবর্তন হচ্ছে। শীতেও বাতাসে আদ্রতার পরিমাণ বেশি থাকছে। যারফলে সারা বছর ধরেই ডেঙ্গি হচ্ছে কলকাতায়।
প্রসঙ্গত, বাড়িতে যাতে জল জমে না থাকে তা নিয়ে পুরসভার তরফে নিয়মিত সচেতন করা হয় নাগরিকদের। তা সত্ত্বেও অনেক বাড়িতেই জল জমে থাকছে বলে অভিযোগ। পুর আধিকারিকদের একাংশের বক্তব্য, ফ্রিজের পিছনে ট্রে’তে থাকা জল অথবা ফুলের টবে থাকা জল থেকে মশার বংশ বিস্তার হচ্ছে। উল্লেখ্য, কত ৫ বছরের মধ্যে কলকাতায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি ঘটেছিল ২০২৩ সালে। সেই কথা মাথায় রেখেই এবার বিশেষ পদক্ষেপ করেছিল কলকাতা পুরসভা। তাতে ডেঙ্গি কমানো সম্ভব হয়েছে। এবার ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ৯২ শতাংশ কম বলে জানাচ্ছেন আধিকারিকরা।