পুজোর আগেই কলকাতা শহরে বেশ কিছু পরিবর্তন আনার লক্ষ্য রয়েছে কলকাতা পুরসভার। প্লাস্টিকের ছাউনি দেওয়া ফুড স্টলও শহর থেকে ধাপ ধাপে সরিয়ে ফেলতে চায় পুরসভা। আসেই লক্ষ্যেই শহরের তিনটি এলাকায় হকারদের জন্য পরিবেশবান্ধব ফুড জোন তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুর-কর্তৃপক্ষ। পাইলট প্রজেক্ট হিসেবে রাসেল স্ট্রিট, পাটুলি এবং টালা পার্কে এই ফুড জোনগুলির কাজ শুরু হয়েছে।
পুরসভার এক কর্তা জানাচ্ছেন, প্লাস্টিকমুক্ত এই স্টলগুলি আগামীদিনে আট থেকে আশি সকলের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হবে। এই সব জোনের নাম দেওয়া হয়েছে ‘কলকাতা ফুড ওয়াক’। সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত নানা ধরনের খাবার পাওয়া যাবে সামান্য অর্থের বিনিময়ে। সব কিছু ঠিক থাকলে পুজোর আগেই খুলে দেওয়া হবে এই তিন ফুড জোন। আগামী দু’বছরের মধ্যে আরও ১৫টি ফুড জোন তৈরির লক্ষ্য রয়েছে।
আরও পড়ুন। আমূল বদলাবে কলকাতা পুরসভার পরিষেবা, নয়া ব্যবস্থা চালু হতে পারে শীঘ্রই
এই সময়ের প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রতিটি ফুড জোনে থাকবে ১৬টি দোকান। টালা পার্ক এবং পাটুলিতে ফুড জোন তৈরির কাজ প্রায় শেষ। টালা পার্ক চত্বরে ফুটপাথে বসানো হয়েছে নতুন পেভার ব্লক, বসার জন্য তৈরি হয়েছে বেঞ্চ। স্টল তৈরির কাজও প্রায় শেষের পথে। এখানে বসবে বেসিন এবং বায়ো টয়লেট। পুরো এলাকাটি সাজানো হবে নানা রঙের আলো দিয়ে।
পুরসভার কর্তাদের দাবি, এই ফুড জোনগুলিতে শহরের নামজাদা রেস্তোরাঁর খাবারও পাওয়া যাবে অর্ধেক দামে। পাওয়া যাবে বিরিয়ানি, চাউমিন, রোল, ফ্রায়েড রাইস, মোমো, ধোসা, ইডলি, চা-কফি, মশলা-মুড়ি সহ আরও অনেক খাবার। দোকানিদের দেওয়া হবে বিশেষ ট্রেনিং। খাবারের মান যাচাইয়ে প্রতি মাসে সারপ্রাইজ ভিজিট করবেন পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মীরা। অস্বাস্থ্যকর খাবার বিক্রি করলে দোকানির লাইসেন্স বাতিল করা হবে।
আরও পড়ুন। বদলে গেল বাংলায় রোড ট্যাক্সের বিধি, এবার থেকে দিতে হবে কত টাকা? জানুন বিশদ
এই উদ্যোগ প্রসঙ্গে মেয়র পারিষদ স্বপন সমাদ্দার বলেন, ‘শহরে নতুন করে প্লাস্টিকযুক্ত স্টল যাতে না হয়, সে জন্যেই এই ধরনের ফুড জোন তৈরি করা হচ্ছে। এক জায়গাতেই নানা ধরনের খাবার মিলবে।’
পুরসভার এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন গড়িয়াহাটের হকার সংগ্রাম কমিটির নেতা দেবরাজ ঘোষ। তিনি বলেন, ‘এই পদক্ষেপের ফলে অনেক বেকার ছেলের কর্মসংস্থান হবে। আমরা সব রকম সহযোগিতায় প্রস্তুত।’
কলকাতা পুরসভার এই পরিবেশবান্ধব উদ্যোগ শহরের নাগরিকদের মধ্যে সাড়া ফেলবে বলে মনে করছেন পুর কর্তারা। তাঁদের আশা, নতুন ফুড জোনগুলি শীঘ্রই কলকাতার জনপ্রিয় খাবারের গন্তব্যে পরিণত হবে।