এবার গেমিং প্রতারণা কাণ্ডে কলকাতা পুলিশের হাতে গ্রেফতার হল পাঁচজন। পাঁচ জায়গায় তল্লাশি চালিয়ে গ্রেফতার করা হয় এই পাঁচজনকে। তার মধ্যে গ্রেফতার হওয়া সোমা নস্করের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে উদ্ধার হয়েছে ৩০ কোটি টাকা। গার্ডেনরিচের আমির খান গ্রেফতার হওয়ার পর তদন্তে নেমে একাধিক অ্যাকাউন্টের খোঁজ পায় পুলিশ। আর সেখানেই এবার ৩০ কোটি টাকার হদিশ মিলেছে।
কী জানতে পেরেছেন গোয়েন্দারা? গোয়েন্দা সূত্রে খবর, মোট পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা হল— প্রসেনজিৎ সরকার (৩২), রাহুল পাল (৩৭), সমিত মণ্ডল (৩৭), প্রতীর বাজবেই (২৯) এবং সোমা নস্কর (২৮)। আর এই সোমা নস্করের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টেই বিদেশ থেকে ঢুকেছিল নগদ অর্থ। সোমার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ঢোকা টাকা আমির খান–সহ একাধিক ব্যক্তির কাছে পাঠানো হতো। যারা গ্রেফতার হয়েছে তাদের প্রত্যেকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টেই টাকার হদিশ মিলেছে। তবে সোমার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে উদ্ধার হয়েছে নগদ ৩০ কোটি টাকা। এই চারজনের পাশাপাশি আমিরের অফিসের ম্যানেজারকেও গ্রেফতার করা হয়েছে।
আর কী জানা গিয়েছে? আমির খান গ্রেফতার হওয়ার পরও শহরে চলছিল প্রতারণার কলসেন্টার। অফিস বাইরে থেকে বন্ধ মনে হলেও দুবাই থেকে রিমোট কন্ট্রোলের মাধ্যমে চলছিল কাজকর্ম। শুধু কলকাতা বা দেশের মধ্যে নয়, বিশ্বের একাধিক জায়গায় জালিয়াতি চালাচ্ছে আমিরের সঙ্গী দুবাইয়ের বাসিন্দা শুভজিৎ শ্রীমণি। আমির খানের বাড়ির খাটের তলা থেকে নোটের গাদা উদ্ধার করেছিলেন তদন্তকারী আধিকারিকরা। ওই টাকা পরিবহণ ব্যবসায়ীর ছেলে আমির খানের প্রতারণা চক্রের। ই–নাগেটস নামে একটি অনলাইন মোবাইল গেমিং অ্যাপের মাধ্যমে চলত প্রতারণার কারবার।
ইডি কী তথ্য পেয়েছে? ইডির তদন্তকারী আধিকারিকরা এবার প্রতারণার টাকা বিটকয়েনে বিনিয়োগ করার তথ্য জানতে পেরেছে। ইতিমধ্যেই ই–নাগেট গেমিং প্রতারণার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে প্রায় ১২ কোটি ৮৩ লাখ টাকা মূল্যের বিটকয়েন ফ্রিজ করেছে ইডি। বেহালার বাসিন্দা সোমা নস্করকে জেরা করা হলে ওই যুবতী জানায়, চাকরি দেওয়ার নাম করে তাকে ডেকেছিল আমির এবং তার সহযোগীরা। চাকরি না দিয়ে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের বিস্তারিত নেয় তারা। আর মাসে মাসে সামান্য কিছু টাকা দিতে থাকে। এরপর যুবতীকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কললিস্ট খতিয়ে দেখে গোয়েন্দারা দেখেন, আমির খানের একাধিক সহযোগীর সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে সোমার। তারপরই চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে আসে।