আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণের পরে ‘ঘুম’ ভাঙল কলকাতা পুলিশের। মহিলা চিকিৎসক, ছাত্রী-সহ সার্বিকভাবে নারী সুরক্ষার জন্য ১৫ দফার নির্দেশিকা জারি করল লালবাজার। গত বৃহস্পতিবার রাতে আরজিকর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালের সেমিনার রুমে এক তরুণী চিকিৎসককে (স্নাতকোত্তরের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী) ধর্ষণ করে যে খুনের অভিযোগ উঠেছে, সেই ঘটনার পরে সুরক্ষা ব্যবস্থায় একাধিক ফাঁকফোকর উঠে এসেছে। অভিযোগ উঠেছে যে সেমিনার রুমে কোনও সিসিটিভি ক্যামেরা ছিল না। শুধু তাই নয়, কীভাবে সকলের নজর এড়িয়ে ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ার সেমিনার রুমে পৌঁছে গিয়েছিল, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। সেই পরিস্থিতিতে কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল আশ্বাস দেন যে অপরাধী ছাড় পাবে না। আর তারপরই মহিলাদের সুরক্ষা নিয়ে ১৫ দফার নির্দেশিকা জারি করা হল।
১৫ দফায় নির্দেশিকায় কী কী বলা হয়েছে?
১) সরকারি হাসপাতাল, মহিলাদের হস্টেলের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় কোনও ফাঁকফোকর আছে কিনা, তা অবিলম্বে খতিয়ে দেখতে হবে। কোথাও ফাঁকফোকর থাকলে বা কোথাও নজরদারির অভাব থাকলে তা নিয়ে অবিলম্বে পদক্ষেপ করতে হবে। একই কাজ করতে হবে হোমের ক্ষেত্রে।
২) শহরের মহিলা চিকিৎসকদের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়াতে হবে। কেউ নিরাপত্তার অভাবে ভুগছেন কিনা, তা জানতে হবে পুলিশকে। তাঁদের কোনও প্রয়োজন আছে কিনা, তা জানতে হবে। একই কাজ করতে হবে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের ক্ষেত্রেও। সেজন্য মহিলা পুলিশ অফিসারদের সাহায্য নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সুরক্ষা সংক্রান্ত কোনও ফাঁক আছে কিনা, তা জানতে হবে।
৩) অবিলম্বে অপরাধপ্রবণ এলাকা চিহ্নিত করতে হবে।
আরও পড়ুন: RG Kar Doctor Murder Case: 'আমার ছেলে পুলিশ', পাঁচবার বিয়ে, আরজিকরে খুনের ঘটনায় ধৃতের অতীতটা জানুন
৪) মহিলাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। সেজন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার নির্দেশ দিয়েছে লালবাজার।
৫) শহরের বিভিন্ন প্রান্তে আরও বেশি সংখ্যক সিসিটিভি বসাতে হবে, যাতে সর্বত্র ‘নজরদারি’ চালানো যায়।
৬) হাসপাতাল এবং মেডিক্যাল কলেজে গিয়ে পরিদর্শন করতে হবে মহিলা পুলিশ অফিয়ারদের।
৭) মহিলাদের নিরাপত্তা নিয়ে মানুষকে আরও বেশি সচেতন করতে হবে।
৮) কলকাতার মহিলা পুলিশের ‘উইনার’ টিমকে আরও সক্রিয় হতে বলা হয়েছে। সাদা পোশাকে তাঁদের শহরের বিভিন্ন এলাকায় টহল দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে লালবাজার।
৯) কোথায় কোথায় সুরক্ষার খামতি আছে, তা চিহ্নিত করার জন্য হাসপাতালের চিকিৎসক এবং কর্মীদের সঙ্গে কথা বলতে হবে।
আরও পড়ুন: RG Kar Hospital Latest Update: চিকিৎসক খুন ও ধর্ষণের নৃশংস ঘটনার ২ দিন পর অপসারিত আরজি করের সুপার
১০) অধঃস্তন কর্মীদের সচেতন করতে হবে হাসপাতালের অধিকারিকদের।
১১) হেল্পলাইন নম্বর ছড়িয়ে দিতে হবে।
১২) মহিলা এবং বয়স্ক মানুষদের সঙ্গে কীরকম আচরণ করতে হবে, তা নিয়ে শিক্ষা দিতে হবে।
১৩) পুলিশ ফোর্সের মধ্যেও নজরদারি বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছে লালবাজার।
১৪) আইন ভাঙলে একেবারে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি নিতে হবে। সিভিক ভলান্টিয়ার, চুক্তিভিত্তিক কর্মী, গ্রিন পুলিশের কেউ কোনও অপরাধ করলে তাঁদের বিরুদ্ধেও নিতে হবে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি।
১৫) যাবতীয় নির্দেশ মেনে চলতে হবে।