লালবাজার এবার পুলিশ কর্মীদের উদ্দেশে একটি নির্দেশিকা জারি করেছে। আর তা নিয়ে বিস্তর চর্চা শুরু হয়েছে। কারণ এই পুলিশকর্মীদের একাংশ সোশ্যাল মিডিয়ায় আসক্ত হয়ে পড়ছেন বলে অভিযোগ। শুধু কলকাতা পুলিশ নয়, রাজ্য পুলিশেও এই রোগ দেখা গিয়েছে। এমনকী যাঁরা সম্প্রতি পুলিশ বাহিনীতে যোগ দিয়েছেন তাঁদের মধ্যে এই রোগ সবচেয়ে বেশি বলে মনে করছেন পুলিশের শীর্ষকর্তারা। অনেকেই উর্দি পরে ‘রিল’ বানাচ্ছেন। আর তা সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করছেন। কেউ নিজেকে ‘হিরো’ প্রমাণ করতে অভিযানের ভিডিয়ো পোস্ট করে দিচ্ছেন বলে অভিযোগ। তাতেই বেড়েছে উদ্বেগ।
আর তাই এসব লক্ষ্য করার পর গত ২৩ ডিসেম্বর একটি নির্দেশিকা জারি করেছেন কলকাতা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত গোয়েন্দা প্রধান রূপেশ কুমার। ওই নির্দেশিকা এখন কলকাতা পুলিশের সমস্ত ডিসিদের কাছে পৌঁছে গিয়েছে। ব্যুরো অফ পুলিশ রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট গাইডলাইনকে উল্লেখ করেই এই নির্দেশিকা তৈরি হয়েছে। যার জেরে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারের নিয়মনীতি বেঁধে দিয়ে কোপ ফেলা হয়েছে। সুতরাং এখন থেকে পুলিশ কর্মীরা আর ব্যক্তিগত পোস্ট করার ক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় প্রতীক, পুলিশের ব্যাজ, ইউনিফর্ম ব্যবহার করতে পারবেন না। এমনকী অফিসের ছবি ব্যবহার করে কোনও রিল বানাতে পারবেন না বলে সূত্রের খবর।
আরও পড়ুন: বিজেপির রাজ্য সভাপতি কে হবেন? বিতর্কের মধ্যেই এবার মুখ খুললেন সুকান্ত মজুমদার
এখানেই শেষ নয়, লালবাজার সূত্রে খবর, ব্যক্তিগত প্রোফাইল থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় যদি কোনও পোস্ট করা হয় তাহলে সেখানে যেন পুলিশের গাড়ি, অফিস চেম্বার অথবা বিল্ডিংয়ের ছবি ব্যবহার করা না হয়। ওই নির্দেশিকায় আরও উল্লেখ রয়েছে, পুলিশ কর্মীরা কোনও মামলার তথ্য সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করতে পারবেন না। আগাম অভিযান, কাজের পদ্ধতিও সোশ্যাল মিডিয়ায় দেওয়া যাবে না। নিষিদ্ধ অ্যাপ ব্যবহার করতে না পারা–সহ স্মার্টফোনের লোকেশন, জিও ট্যাগিং সিস্টেম বন্ধ করে রাখতে হবে।
এই নির্দেশিকা নিয়ে এখন কেউ মুখ খুলতে চাইছেন না। তবে কানাঘুষো যেটুকু চর্চা হচ্ছে তাতে উঠে এসেছে, এই বিষয়টি অনেকদিন ধরে লক্ষ্য রাখা হয়েছিল। তারপর এমন ফরমান জারি করা হয়েছে। পুলিশ একটি শৃঙ্খলাপরায়ণ বাহিনী। তাই তাঁদের সম্পর্কে খারাপ বার্তা যাক এটা কেউ চান না। আবার পুলিশের তথ্য বাইরে বেরিয়ে যাওয়া ঠেকাতে এমন পদক্ষেপ করা হয়েছে। তবে লালবাজারের পাঠানো নির্দেশিকায় পরিষ্কার উল্লেখ করা হয়েছে, এই নির্দেশিকা অমান্য করলে অফিশিয়াল সিক্রেট আইন, সেন্ট্রাল সিভিল সার্ভিস কন্ডাক্ট রুল, তথ্যপ্রযুক্তি আইন, অল ইন্ডিয়া সার্ভিস কন্ডাক্ট রুল অনুযায়ী শাস্তি হবে বলে সূত্রের খবর।