বুধবার রাতে তাণ্ডবের সময় রোগীর কম্বলের তলায় লুকিয়ে পড়েছিল পুলিশ। এমনই অভিযোগ করলেন আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালের নার্সরা। বৃহস্পতিবার বিক্ষোভের মধ্যেই নার্সরা অভিযোগ করেন, গতরাতে যখন হাসপাতালে তাণ্ডব চলেছে, তখন পুলিশকেই 'প্রোটেকশন' দিতে হয়েছে। নার্সদের ওয়ার্ডে ঢুকে যান পুলিশ অফিসাররা। এমনকী পুলিশ আধিকারিকরা স্ত্রীরোগ বিভাগের বাথরুমে গিয়েও আশ্রয় নেন বলে অভিযোগ করেছেন নার্সরা। আরজি করের নয়া অধ্যক্ষ সুহৃতা পালকে ঘিরে ধরেও তাঁরা বিক্ষোভ দেখান। তাঁরা দাবি করেন যে সুরক্ষা নিয়ে লিখিত প্রতিশ্রুতি দিতে হবে। তবেই কাজে যোগ দেবেন।
‘পেশেন্টের কম্বলের মধ্যে ঢুকে গিয়েছিল’ পুলিশ
বৃহস্পতিবার দুপুরে আরজি হাসপাতালে অধ্যক্ষ আসতেই গতরাতের তাণ্ডবের ঘটনা নিয়ে ক্ষোভ উগরে দেন নার্সরা। ক্ষোভে ফুঁসতে-ফুঁসতে ভিড়ের মধ্যে থেকে এক নার্স বলেন, 'ম্যাডাম কাল দু'গাড়ি র্যাফ দাঁড়িয়েছিল। পুলিশ ছিল। তারা নির্বাক হয়ে দেখছিল। গাইনি বিল্ডিংয়ে তারা আশ্রয় নিয়েছিল। এমনকী পেশেন্টের কম্বলের মধ্যে ঢুকে গিয়েছিল। এরকমও হয়েছে। তাহলে তাদের উপরে ভরসা করে কীভাবে আমরা ডিউটিতে নামব?'
পুলিশ কমিশনারের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ নার্সরা
সেইসঙ্গে তিনি বলেন, ‘কাল কি কম অতিরিক্ত ফোর্স আরজি কর হাসপাতালে ছিল? তারা কী করছিল? তারা কেন নির্বাক হয়েছিল? তারপর রাতে পুলিশ কমিশনার (কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল) এসে উলটো-পালটা কথা বলছিলেন। (বলছিলেন যে) মিডিয়ার জন্য এতকিছু হয়েছে, এই হয়েছে, ওই হয়েছে। একবারও বলেননি যে তাঁর পুলিশ নিষ্ক্রিয় হয়েছিল। আমরা রাতে কী করব?’
হামলা চালিয়ে তছনছ করে দেওয়া হয় RG কর হাসপাতাল
বুধবার মধ্যরাতে আরজি কর হাসপাতালে তাণ্ডব চালানো হয়। তছনছ করে দেওয়া হয় হাসপাতাল। আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালের তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং খুনের প্রতিবাদে যে বিক্ষোভ চলছিল, সেই মঞ্চ গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তারদের দাবি, ওই ঘটনার প্রতিবাদে বুধবার রাতে যে 'রাত দখল' কর্মসূচি ছিল, সেটার মিছিল শুরু হওয়ার আগেই হামলা চালানো হয়। ভাঙচুর চালানো হয় জরুরি বিভাগের বিভিন্ন জায়গায়। নষ্ট করা হয় ওষুধও।
সেই ঘটনার পরেই ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন নার্সরা। ‘নো সেফটি, নো ডিউটি’-র দাবিতে সরব হয়েছেন। তারইমধ্যে আরজি করের তাণ্ডবের ঘটনায় তিনটি স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। সূত্রের খবর, চিকিৎসকদের উপরে হামলা, হাসপাতালের সম্পত্তি ধ্বংস এবং পুলিশের হামলার অভিযোগে মামলা রুজু করা হয়েছে। সূত্রের খবর, ইতিমধ্যে হামলার ঘটনায় ন'জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।