রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে, সেই ঘটনার তদন্তে বিশেষ দল গঠন করল কলকাতা পুলিশ। সূত্রের খবর, ডেপুটি কমিশনার (সেন্ট্রাল ডিভিশন) ইন্দিরা মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে সেই বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন করা হয়েছে। সেই দলই রাজ্যপালের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির যে অভিযোগ তুলেছেন রাজভবনের এক অস্থায়ী কর্মী, তা তদন্ত করে দেখবে। যদিও কলকাতা পুলিশের সেই সিদ্ধান্ত নিয়ে রাজভবনের তরফে নতুন করে কোনও মন্তব্য করা হয়নি। বৃহস্পতিবারই অবশ্য ‘অনুমোদনহীন, বেআইনি, মিথ্যা এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত তদন্তের আড়ালে নিজেদের রাজনৈতিক বসদের মন জয় করতে’ না পারে, তাই তাদেরও ঢোকার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন রাজ্যপাল।
সেইসঙ্গে রাজ্যপাল স্পষ্টভাবে দাবি করেছেন, তাঁর বিরুদ্ধে যে অভিযোগ তোলা হয়েছে, তা সম্পূর্ণ ভুয়ো। সেই অভিযোগের পিছনে যা রাজনৈতিক উদ্দেশ্য আছে, তাও একাধিক বিবৃতির মাধ্যমে স্পষ্ট করে দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার ওই যুবতী অভিযোগ করার পর থেকে একবারও জনসমক্ষে না এলেও বিবৃতি জারি এবং অডিয়োবার্তার মাধ্যমে রাজ্যপাল দাবি করেছেন যে 'সাজানো অভিযোগের সামনে মাথানত করতে রাজি নই আমি। আমায় কালিমালিপ্ত করে কেউ যদি রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে চান, ঈশ্বর তাঁদের মঙ্গল করুক।’
রাজ্যপালের বিরুদ্ধে কি কোনও পদক্ষেপ করতে পারবে পুলিশ?
কলকাতা পুলিশের তরফে বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন করা হলেও আদৌও কোনও পদক্ষেপ করতে পারবে কিনা, তা নিয়ে ধন্দ আছে। কারণ ভারতীয় সংবিধানের ৩৬১ নম্বর ধারা অনুযায়ী, কোনও রাজ্যপালের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলার তদন্ত করতে পারে না পুলিশ। তদন্ত শুরুর নির্দেশ দিতে পারে না আদালত। রাজ্য সরকারের হাতেও কোনও ক্ষমতা নেই।
সেক্ষেত্রে একমাত্র সংসদের হাতে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করার ক্ষমতা আছে বলে বিশেষজ্ঞদের মত। তাঁদের মতে, রাজ্যপালের বিরুদ্ধে তদন্ত করার জন্য প্রাথমিকভাবে লোকসভায় একটি প্রস্তাব পেশ করতে হবে। লোকসভায় পাশ হলে তারপর সেই প্রস্তাব যাবে রাজ্যসভায়। সংসদের উচ্চকক্ষে যদি সেই প্রস্তাব পাশ হয়, তাহলেই রাজ্যপালের বিরুদ্ধে তদন্ত করা যাবে বলে সংশ্লিষ্ট মহলের মত। অর্থাৎ বোস যতদিন রাজ্যপাল আছেন, ততদিন সংসদের হস্তক্ষেপ ছাড়া তাঁর বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করতে পারবে না পুলিশ।