আরজি করের সেমিনার হলে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ-খুন। ওই চিকিৎসককে যে খুন করা হয়েছে কে দেখেছিলেন সবার আগে? এরপর ৯ অগস্ট সকাল ৯টা ৩০ মিনিট থেকে কী কী হল আরজি করে? তারই টাইমলাইন সুপ্রিম কোর্টে জমা দিয়েছে কলকাতা পুলিশ।
কী আছে সেই টাইমলাইনে?
টাইমস অফ ইন্ডিয়ার প্রতিবেদন অনুসারে গোটা বিষয়টি সামনে এসেছে।
৯ অগস্ট, সকাল ৯টা ৩০ মিনিট-প্রথম বর্ষের এক পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ট্রেনি প্রথম দেখেছিলেন ওই দেহটিকে। এরপর তিনি অন্যান্য চিকিৎসকদের খবর দেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকেও সতর্ক করা হয়।
সকাল ১০টা ১০- টালা থানায় খবর যায়। আরজি কর পুলিশ আউটপোস্ট থেকে খবর যায়। পুলিশকে বলা হয়েছিল একজন মহিলার দেহ অচেতন অবস্থায় সেমিনার রুমের কাঠের প্লাটফর্মের উপর পড়ে রয়েছে। সেমিনার রুমের ভেতর দেহটি পড়ে রয়েছে। তখন বলা হয়েছিল দেহটি অর্ধনগ্ন অবস্থায় রয়েছে। এরপরই জেনারেল ডায়েরি হিসাবে নোট করে পুলিশ স্পটের দিকে বেরিয়ে যায়।
সকাল ১০টা ৩০ - পুলিশ আধিকারিকরা ঘটনাস্থলে যান। পদস্থ আধিকারিকদের খবর দেওয়া হয়।
সকাল ১০টা ৫২ মিনিট- অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপার মৃতের বাড়ির সদস্যদের ফোন করে বলেন যাতে তাঁরা তাড়াতাড়ি চলে আসেন।
সকাল ১১টা- হোমিসাইড শাখা স্পটে আসে।
দুপুর ১২টা ২৫- গোয়েন্দা বিভাগের ফটোগ্রাফার ও ভিডিওগ্রাফাররা স্পটে যান। ১২টা ২৯ মিনিটে প্রথম ছবি তোলা হয়েছিল। এরপর ফিঙ্গারপ্রিন্ট ও ফুটপ্রিন্ট বিশেষজ্ঞরা আসেন। ফরেনসিক টিম ডাকা হয়।
দুপুর ১২টা ৪৪ -কর্তব্যরত চিকিৎসকরা দেহ পরীক্ষা করে জানান তিনি মারা গিয়েছেন।
দুপুর ১টা- মৃত চিকিৎসকের অভিভাবকরা হাসপাতালে আসেন। কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দেখা করেন। ১০ মিনিটের মধ্যে তাঁদের সেমিনার রুমে নিয়ে যাওয়া হয়।
দুপুর ১টা ৪৭ মিনিট- মেডিক্যাল সার্টিফিকেট ও ডেথ সার্টিফিকেট ইস্যু করা হয়। পুলিশ আধিকারিকরা ওই দেহের কোথায় আঘাত রয়েছে তা নোট করেন। এমনকী তাঁর গোপন অঙ্গেও আঘাত ছিল। এরপর অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করা হয়।
দুপুর ৩টে- মৃতের পরিবার ও সহকর্মীরা ইন-কোয়েস্ট ও বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে পোস্ট মর্টেমের দাবি জানান। ভিডিওগ্রাফির দাবি জানানো হয়। প্রথমে মৌখিকভাবে ও তারপর লিখিতভাবে জানান তাঁরা।
বিকাল ৪টে ১০- জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আসেন। ৪.২০-৪.৪০ মিনিটের মধ্য়ে ইনকোয়েস্ট হয়। মৃতের পরিবার, কলিগরা উপস্থিত ছিলেন। ভিডিয়োগ্রাফি করা হয়।
৬-১০- ৭-১০- পোস্ট মর্টেম হয়। ফরেনসিক চিকিৎসকদের টিমের উপস্থিতিতে পোস্ট মর্টেম হয়। সেই সময় পরিবারের সদস্যরা, কলিগরা উপস্থিত ছিলেন।
৮টা-ডগ স্কোয়াড আসে ঘটনাস্থলে। ৮টা ৩৭ থেকে ৮টা ৫২ থ্রি ডি ম্যাপিং হয়।
সাড়ে আটটা থেকে রাত ১০টা ৪৫ মিনিট- ৪০টি বিষয় বাজেয়াপ্ত করে ফরেনসিক টিম। ভিডিয়োগ্রাফি করা হয়। দেহ দেওয়া হয় পরিবারের হাতে।
রাত ১১টা ৪৫ মিনিট- মৃতের বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে এফআইআর হয়।ধর্ষণ ও খুনের। পরের দিন সকাল ১০টায় গ্রেফতার করা হয় সঞ্জয় রায়কে। টানা জেরায় সে দোষের কথা স্বীকার করে।
তবে সবথেকে বড় প্রশ্ন হল দেহ মিলল সাড়ে ৯টায় আর মৃত বলে নিশ্চিত হল ১২টা ৪৪ মিনিটে। তিন ঘণ্টা পরে। তবে কলকাতা পুলিশের টাইম লাইনে পরিবারের দাবির কথা উল্লেখ করা নেই। যেখানে পরিবার বলেছিল হাসপাতাল থেকে ফোন এসেছিল আপনার মেয়ে আত্মহত্যা করেছে।