নবান্ন অভিযানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করতে পথে নেমেছিলেন তিনি। কিন্তু গাড়িতে উড়ে আসে ইট। তার আঘাতে বাঁ–চোখ ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তারপর থেকে ওই বাঁ–চোখে আর তেমন দেখতে পাচ্ছেন না তিনি। হ্যাঁ, তিনি কলকাতা পুলিশের সার্জেন্ট দেবাশিস চক্রবর্তী। এবার তাঁর চোখের উন্নত চিকিৎসার জন্য আজ তাঁকে নিয়ে যাওয়া হল হায়দরাবাদে। এই ঘটনাকে সামনে রেখে এবার কলকাতা পুলিশের পক্ষ থেকে এক্স হ্যান্ডেলে শান্তির বার্তা দেওয়া হল। এই বার্তা দেবাশিস পড়তে না পারলেও তাঁকে শুনিয়ে দেবেন তাঁর স্ত্রী। আর যারা আন্দোলন করবে পরবর্তী সময়ে তাদের বিশেষ পরামর্শ দেওয়া হল।
নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছিল ছাত্রসমাজ। আর সেদিনই হামলা হয় পুলিশের উপর। যার জেরে রক্তাক্ত হয় কলকাতা পুলিশ। আর চোখ হারাতে বসেছেন সার্জেন্ট দেবাশিস চক্রবর্তী। এই আবহে আজ কলকাতা পুলিশের পক্ষ থেকে এক্স হ্যান্ডেলে লেখা হয়, ‘আমরা আমাদের সহকর্মীর জন্য শুভেচ্ছা বার্তা দিচ্ছি। যিনি গত ২৭ অগস্ট হামলার শিকার হয়েছেন এবং চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমরা এই ঘটনার পর সোশ্যাল মিডিয়া খতিয়ে দেখেছি, যেখানে কিছু পর্যবেক্ষণ দেখে আমরা দুঃখিত। কারণ এই ঘটনাকে কেউ কেউ বলেছেন পেশাদার বিপদ।’
এই চিকিৎসার পরই বোঝা যাবে দেবাশিস চক্রবর্তী চোখে দেখতে পাবেন কিনা। গত ২৭ অগস্ট ‘পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজ’ সংগঠনের ডাকে নবান্ন অভিযান হয়। তখন কর্তব্যরত পুলিশ সার্জেন্ট দেবাশিস স্ট্র্যান্ড রোডে ডিউটি করছিলেন। তখন পুলিশের গাড়ি লক্ষ্য করে ইট ছোড়ে আন্দোলনকারীরা। সেই গাড়িতেই তখন ছিলেন দেবাশিস। তাঁর চোখে ইট লাগে। রক্ত ঝরতে থাকে চোখ দিয়ে। এই ঘটনায় কলকাতা পুলিশ এক্স হ্যান্ডেলে লেখা হয়েছে, ‘যিনি আক্রান্ত হয়েছেন তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ করা এবং তাঁকে লজ্জিত করা দুর্ভাগ্যজনকভাবে একটা অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। এভাবেই অপরাধ ও হিংসাকে যুক্তিগ্রাহ্য করা হচ্ছে। কারও উপর হামলা করা অপরাধ। এই শহর যুদ্ধক্ষেত্র নয়।’ যা নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছে।
আরও পড়ুন: নবান্ন অভিযানে জখম পুলিশ সার্জেন্টকে হায়দরাবাদে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, চোখের আলো ফেরাতে
এরপর দেবাশিস চক্রবর্তীর চোখ নিয়ে শুরু হয় চিকিৎসা। প্রাথমিক চিকিৎসার পর অবস্থা অনেকটা স্থিতিশীল হয়। কিন্তু চোখে সব আবছা দেখছেন পুলিশ সার্জেন্ট। তাই উন্নত চিকিৎসার জন্য হায়দরাবাদে নিয়ে যাওয়া হল তাঁকে। এই বিষয়ে কলকাতা পুলিশ আজ, রবিবার এক্স হ্যান্ডেলে লেখা হয়েছে, ‘শান্তিপূর্ণ অবস্থান–বিক্ষোভে আদালতের এবং প্রশাসনের কিছু করার নেই। হিংসাকে সমর্থন করবেন না। সদয় হন। শক্তিশালী হন।’