বিভিন্ন সময় পথ দুর্ঘটনায় প্রাণ গিয়েছে দু'চাকার যানে সওয়ার খুদে যাত্রীর। অধিকাংশ সময়েই দেখা গিয়েছে, মাথায় হেলমেট না থাকাতেই আটকানো যায়নি অকালমৃত্যু। অথচ, তারপরও হুঁশ ফেরে না বাবা-মায়েদের।
প্রায়শই দেখা যায় - স্কুটার বা মোটরবাইকে সওয়ার খুদের মাথায় হেলমেট নেই। যেন - ছোট বলে তার মাথার কোনও দামই নেই! এ নিয়ে কলকাতা পুলিশের তরফে লাগাতার আমজনতাকে সচেতন করা হলেও লাভ বিশেষ হয়নি।
এবার তাই কড়া হাতে বেয়াড়া বাবা-মায়েদের এহেন আচরণ বন্ধ করার কথা ভাবছে কলকাতা পুলিশ। সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুসারে, এবার থেকে যদি দেখা যায়, খুদে সন্তানকে হেলমেট না পরিয়ে বাইক বা স্কুটারে চড়ানো হয়েছে, তাহলে সেই ছোট্ট সওয়ারির বাবা-মাকেই আর্থিক জরিমানা করা হবে।
তবে, এক্ষেত্রে কড়া হাতে পরিস্থিতি মোকাবিলা করার কথা বললেও কিছুটা শিথিলতাও অবলম্বন করা হতে পারে। মূলত, যে অভিভাবকরা লাগাতার এমন কাণ্ড ঘটাবেন, তাঁদেরই জরিমানা গুনতে হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
টাইমস অফ ইন্ডিয়া-এ প্রকাশিত প্রতিবেদনে লালবাজারের এক উচ্চপদস্থ পুলিশ আধিকারিককে উদ্ধৃত করে জানানো হয়েছে, শহরের স্কুলগুলির গেটের বাইরে আরও বেশি করে সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানো হবে। যাতে নিয়মভঙ্গকারীদের উপর লাগাতার নজর রাখা এবং তাঁদের চিহ্নিত করা পুলিশের পক্ষে সহজ হয়।
এরই পাশাপাশি, নজরদারির এই কাজে সংশ্লিষ্ট স্কুল কর্তৃপক্ষ এবং পড়ুয়াদেরও 'দলে টানার' কথা ভাবছে পুলিশ। যাতে তারাও নজর রাখতে পারে, স্কুলের কোন কোন ছাত্রছাত্রীর বাবা-মায়েরা স্কুটার বা মোটরবাইকে যাতায়াতের সময় তাঁদের সন্তানকে হেলমেট পরাচ্ছেন না।
লালবাজারের ওই আধিকারিক টাইমস অফ ইন্ডিয়া-কে জানিয়েছেন, হেলমেটহীন শিশু বা নাবালক সওয়ারি-সহ কোনও ব্যক্তিকে থামানো হলেই অধিকাংশ ক্ষেত্রে তাঁরা আজব সমস্ত যুক্তি পেশ করেন।
যেমন অনেক বাবা-মায়েরই বক্তব্য হল - 'বাচ্চাদের জন্য হেলমেট পাওয়া যায় না।' যা সর্বৈব মিথ্যা। পুলিশের সাফ কথা, এসব ভিত্তিহীন যুক্তি আর মানা হবে না। তাদের তরফে আরও জানানো হয়েছে, শুধু হেলমেট পরলে বা পরালেই হবে না। সেই হেলমেট হতে হবে আইএসআই মার্কযুক্ত। এবং তার ওজন হতে হবে ৭০০ গ্রাম থেকে ১ কেজি ২০০ গ্রামের মধ্যে।
কারণ, দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি - অনেকই নিজে এবং সন্তানদের হেলমেট পরেন বা পরান, শুধুমাত্র পুলিশের জরিমানার হাত থেকে বাঁচতে! তাঁরা হেলমেটের প্রয়োজন এবং তার গুণমান নিয়ে আদৌ চিন্তিত নন! ফলত, কলকাতা পুলিশকেই হেলমেটের মানদণ্ড ঠিক করে দিতে হচ্ছে!