তারাবাতি, তুবড়ি, চড়কা, রকেট— এমন হরেকরকম আতসবাজি, পটকা আর আইনের নজর এড়িয়ে নিষিদ্ধ শব্দবাজি। এ সব ছাড়া বাংলায় কালীপুজো বা দীপাবলি ভাবাই দুষ্কর। কিন্তু এবার সেই অসম্ভব সম্ভব করে দেখাল কলকাতাবাসী। শনিবার রাতে কলকাতা হাইকোর্টের বাজিহীন কালীপুজোর আদেশ মানলেন শহরবাসী।
কিছু কিছু এলাকায় আদালতের নির্দেশ অমান্য করে বাজি পোড়ানো, পটকা ফাটানো হলেও এই প্রথম কোনও বায়ুদূষণ বা শব্দদূষণ ছাড়াই কালীপুজো দেখল কলকাতা। রবিবারও মোটের ওপর একই ছবি শহর ও শহরতলি জুড়ে। যদিও শনিবার রাতে কলকাতা পুলিশ এলাকায় ২৯৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাজেয়াপ্ত হয়েছে ১০৫৪ কেজি বাজি।
করোনা আক্রান্তদের স্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখে এবার যাতে কোনওরকম বায়ুদূষণ না হয় তাই আতসবাজি ক্রয়–বিক্রয় ও পোড়ানোতে এবার নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে কলকাতা হাইকোর্ট। শহরবাসী যে আদালতের নিষেধাজ্ঞা মেনেছেন তা জানাতে শনিবার রাতের কলকাতার ফাঁকা দূষণহীন আকাশের ছবি টুইট করে কলকাতা পুলিশ।
রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী তথা কলকাতা পুরসভার প্রধান প্রশাসন ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘এটি কেবল নাগরিকদের মধ্যে সচেতনতার জন্যই সম্ভব হয়েছে। সমাজের স্বার্থে আদালতের বিধিনিষেধ মেনে চলেছেন মানুষ।’ গড়িয়াহাটের প্রবীণ বাসিন্দা ৭৫ বছর বয়সী শরদিন্দু রায় বলেন, ‘আমি এটা বিশ্বাস করতে পারছি না। আমার মতো হাঁপানিতে আক্রান্ত প্রবীণদের জন্য এই আলোর উৎসব প্রতিবছর একটি দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়। কিন্তু এবার আমি খুব স্বস্তি বোধ করেছি।’
একইসঙ্গে স্বস্তিতে রাস্তার সারমেয় ও বাড়ির পোষ্যরা। শব্দদানবের দাপটে তাদের কাছে কালীপুজো বা দীপাবলি আতঙ্কের উৎসবে পরিণত হয়। কিন্তু এবার ওরা অনেকটাই নিশ্চিন্ত। দুমদাম পটকা অনেক কম ফাটছে। হয়তো একইসঙ্গে খুশি আর অবাক চারপেয়েরা।