এমনিতে দিনে গড়ে ৫০ জন ক্রেতা হয়। কিন্তু লকডাউনের আগেরদিন সেই সংখ্যাটা ১০০-তে ঠেকেছে। তার জেরে সন্ধ্যার মধ্যেই দোকানে নুডলস, বিস্কুটের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস কার্যত উবে গিয়েছে। যে কটা পড়ে আছে, তা হাতেগোনা। এমনটাই সিঁথির রতন প্রামাণিক।
একা তিনি নন, কলকাতার কনটেনমেন্ট জোন লাগোয়া দোকানগুলির কার্যত একই অবস্থা। দোকানিদের বক্তব্য, কার্যত দোকানের উপর হামলে পড়ছেন স্থানীয়রা। সকাল থেকে হত্যে হয়ে দোকানে দাঁড়িয়ে থাকছেন ক্রেতারা। একটাই আতঙ্ক - সম্পূর্ণ লকডাউন কার্যকর হলে দোকানে যদি কিছু পড়ে না থাকে!
সেই আতঙ্ক গ্রাস করেছে গৃহবধূ সুস্মিতা বিশ্বাসকেও। আনন্দপুরের বাসিন্দা বলেন, ‘যখন প্রথমবার লকডাউন হল, তখন যে অভিজ্ঞতা হয়েছিল, সেটা ভেবে আর ঝুঁকি নিতে চাই না। যদি জোগান বন্ধ হয়ে যায়? আমি চাল, আটা, কয়েক কিলো আলু, চিনি, তেল-সহ প্রয়োজনীয় কয়েকটি জিনিস কিনে রেখেছি। ওগুলো তো পচে যাবে না।’ একই বক্তব্য উল্টোডাঙার তাপস দাসের। তিনি জানান, চাল-ডাল-আলুর মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী রেখেছেন। যাতে অত্যন্ত খাবার কোনও সমস্যা না হয়।
যদিও রাজ্য সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, প্রাথমিকভাবে সাত দিন লকডাউন চলবে। তারপর পরিস্থিতি বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। কিন্তু কলকাতায় যেভাবে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে, তাতে উদ্বিগ্ন আমজনতা। বুধবারই কলকাতায় ৩৬৬ জন আক্রান্তের হদিশ পাওয়া গিয়েছে। ফলে মহানগরীতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮,০৪৬। ওই সময়ের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ছ'জনের। ফলে শুধু কলকাতা মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৪৪৪। অর্থাৎ রাজ্যের ৫০ শতাংশের বেশি মানুষের মৃত্যু মহানগরীতেই হয়েছে। যদিও সুস্থ রোগীর সংখ্যাও বাড়ছে। বুধবার পর্যন্ত ৪,৭৮৮ জন কলকাতাবাসী করোনাকে হারিয়ে দিয়েছেন।