জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনকে একেবারে প্রথম থেকে কটাক্ষ করছেন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ। একের পর এক তির তিনি ছুঁড়ছেন রোজ। কিন্তু তারপরেও আন্দোলনকারীদের মনোবলে এতটুকু চিড় ধরাতে পারেননি। এবার তিনি দ্রোহের কার্নিভালকে খোঁচা দিলেন। তাঁর মতে, কার্নিভাল ভাঙিয়ে প্রচারের চেষ্টা। তবে কুণাল ঘোষ একথা লিখতেই পালটা দিলেন নেট পাড়া। কার্যত কুণাল ঘোষের বিরুদ্ধে একের পর আক্রমণ করছেন নেটিজেনরা।
কুণাল ঘোষ লিখেছেন,
যাঁরা পুজোর কার্নিভালে যাবেন, তাঁরা, বিপুল মানুষ, বাংলার উৎসব সংস্কৃতিতে আছেন; বিচ্ছিন্ন কুৎসিত সামাজিক অপরাধের নিন্দা ও ন্যায়বিচারের দাবিতেও আছেন। যাঁরা রেড রোডে থাকবেন, তাঁরাও ধর্ষক, খুনির ফাঁসি চান।
অন্যদিকে যাঁরা তথাকথিত দ্রোহের ( অপকার, অনিষ্ট) কার্নিভালে থাকবেন, নির্দিষ্ট কিছু রাজনৈতিক সংগঠনের সামান্য কিছু অরাজনীতির মুখোশধারী, তাঁরা ন্যায়বিচারের নামে চেয়ারের রাজনীতি করছেন, লক্ষ্য অরাজকতা, চেষ্টা বাংলার কার্নিভালের বদনামের। পুজো, উৎসব বয়কটের ডাকে জল ঢেলেছেন কোটি কোটি মানুষ, নিজেরাও দ্বিচারিতায় ধরা পড়েছেন অনেকে; এখন কার্নিভাল ভাঙিয়ে নিজেদের প্রচারের চেষ্টা।
যেমন পুজো মানি না বলে মণ্ডপের পাশে স্টল করে বই বিক্রি; তেমনই কার্নিভালের কাছে নাটক।
লিখেছেন কুণাল ঘোষ
এই পোস্টের জবাবে এক নেটিজেন লিখেছেন, একদিকে স্তাবকবৃন্দের ভিড় আর অন্যদিকে বিদ্রোহের ডাকে জনজাগরণ। একদিকে জনগণের টাকার শ্রাদ্ধ করে মোচ্ছব আর অন্যদিকে সমাজ শোধন। পক্ষ নেওয়ার সময় এটাই।
অপর এক নেটিজেন লিখেছেন, যারা রেড রোডে নকল কার্নিভালের আয়োজন করছে তারাই তো ধর্ষক ও খুনীদের আসল সহকারি।…আসল কার্নিভাল দেখে আসুন রানি রাসমণি রোডে।
অপর একজন লিখেছেন কম্পিটিশনে পড়ে গেলেন। এতদিনের ফাঁকা মাঠ হাতছাড়া।
তবে এসব মন্তব্য শোনার পরেও থামেননি কুণাল ঘোষ। তিনি অপর একটি পোস্টে লিখেছেন, ভাগ্যিস মুখ্যমন্ত্রী কার্নিভালের মত একটি উজ্জ্বল কর্মসূচির আয়োজন করেন।
কিছু জনভিত্তিহীন অবসাদগ্রস্ত সুযোগসন্ধানী তাই আজ পাল্টা কর্মসূচির নামে দিনক্ষণ দেখে সেটা ভাঙিয়ে টিভিতে মুখ দেখাবে।
এই পোস্ট করার পরে কুণাল ঘোষকে নিশানা করে যে সমস্ত বাক্যবাণ বর্ষিত হয়েছে তা দলের পক্ষেও যথেষ্ট অপমানজনক।
তবে পুজোর কার্নিভালকে কোনওরকমভাবেই বাধা দেবেন না জুনিয়র ডাক্তাররা।
আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তারদের অন্যতম দেবাশিস হালদার সোমবার রাতে জানিয়েছেন , আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালের তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনার পরে ৬৫ দিন কেটে গিয়েছে। এখনও বিচার মেলেনি। ৫ অক্টোবর থেকে কয়েকজন সহযোদ্ধা আমরণ অনশন করছেন। সেই পরিস্থিতিতে তাঁরা পুজোর কার্নিভাল নয়, ‘দ্রোহের কার্নিভাল’ করবেন। ধর্মতলা থেকে তৈরি করা হবে মানববন্ধন। তাঁরা নিজেদের মতো করে প্রতিবাদ জানাবেন। রাজ্য সরকারের আয়োজিত পুজোর কার্নিভালে কোনও বাধা দেওয়া হবে না বলে আশ্বাস দিয়েছেন জুনিয়র ডাক্তাররা।