সন্দেশখালি কাণ্ড নিয়ে বিজেপিকে আক্রমণ শানাতে গিয়ে সম্প্রতি রেখা পাত্রকে 'হেরো মাল' বলে উল্লেখ করে চরম অস্বস্তিতে ফিরহাদ হাকিম। তৃণমূল নেতা তথা রাজ্যের মন্ত্রীর পক্ষে তাই এবার ব্যাট করতে ময়দানে নামলেন কুণাল ঘোষ। এই 'কুমন্তব্য কাণ্ডে' কুণালের যুক্তি, সেই বক্তৃতাতেই রেখা পাত্রকে 'ভদ্রমহিলা' বলে সম্বোধ করেছিলেন ফিরহাদ। এই আবহে ফিরহাদ কোনও ভাবেই রেখাকে অসম্মান করতে চাননি। বরং ফিরহাদের বক্তব্যের সেই 'হেরো মাল' অংশটি চালিয়ে তাঁর ভাবমূর্তি নষ্ট করার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে কুণালের পালটা অভিযোগ। (আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে হিন্দুদের বাড়িতে বাহিনীর হামলার অভিযোগ, বাংলাদেশের ইউনুস সরকারকে কড়া বার্তা ভারতের)
সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে এই নিয়ে কুণাল বলেন, 'ফিরহাদ হাকিমর গোটা বক্তব্যটা আমি শুনেছি। ওই 'বিপ' অংশটা ছাড়া তিনি কিছু নির্দিষ্ট পরিপ্রেক্ষিতে কথ বলছিলেন। ওই বক্তব্যেই ফিরহাদ হাকিম উল্লেখিত নারীকে 'ভদ্রমহিলা' বলে সম্বোধন করেছেন। ওই বক্তৃতাতেই আছে সেটা। ফলে একটা 'বিপ' দেখিয়ে তাঁর ভাবমূর্তি নষ্ট করার চেষ্টা ঠিক নয়। ফিরহাদ হাকিম তাঁকে ভদ্রমহিলা বলছেন। বলেছেন যে সেটা সেই ভিডিয়োতেই রয়েছে। তার মানে কোথাও কাউকে অসম্মান করার ইচ্ছা, অসম্মান করার চেষ্টা তাঁর ছিল না।'
ফিরহাদকে তোপ বিজেপির
উল্লেখ্য, আসন্ন বিধানসভা উপনির্বাচনে হাড়োয়া কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী রবিউল ইসলামের হয়ে প্রচারে গিয়েছিলেন ফিরহাদ। সেখানেই তিনি সন্দেশখালি ইস্যুতে বিজেপিকে আক্রমণ শানিয়েছিলেন। সেই ভাষণের একটা অংশের ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে ফিরহাদকে পালটা আক্রমণ শানান বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। ফিরহাদ হাকিমের ভিডিয়ো (ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি হিন্দুস্তান টাইমস বাংলা) পোস্ট করে বিরোধী দলনেতা অভিযোগ করেন, রেখা পাত্রকে অপমান করেছেন ফিরহাদ। শুধু তাই নয়, এসসি পাউন্ড্র-ক্ষত্রিয় সম্প্রদায়কেও ফিরহাদ অপমান করেছেন বলে দাবি করেন শুভেন্দু। এদিকে এই বিষয়ে মুখ খোলেন বিজেপি নেত্রী রেখাও। সংবাদমাধ্যমে তিনি বলেন, 'আমাকে যে ভাষায় আক্রমণ করেছেন, সেটা খুবই নিন্দনীয়। অপমান করা হয়েছে, তা আমার মতো খেটে খাওয়া পরিবারের মেয়েকে অপমান করা হয়েছে। এই অপমান গোটা সন্দেশখালির মা-বোনেদের অপমান।' এই আবহে ফিরহাদের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ প্রদর্শনও করেছে বিজেপি।
কী বলেছিলেন ফিরহাদ হাকিম?
ভাইরাল হওয়া ভিডিয়োতে ফিরহাদ হাকিমকে বলতে শোনা যায়, 'সন্দেশখালিতে আমার এক বন্ধু ছিল। তাঁর মেয়ের বিয়ে ঠিক হয়েছিল ক্যানিংয়ে। সেই বিয়ে ভেঙে দেয় ছেলের বাড়ি। তারা বলে, সন্দেশখালি থেকে মেয়ে আনলে পাড়ায় লোকেরা বলবে, এই মেয়ে হয়ত পবিত্র নয়। বাপটা হাউ হাউ করে কাঁদছে, মাটা হাউ হাউ করে কাঁদছে। আর কয়েকদিন আগে এখানে এসেছিলেন এক দাড়িওয়ালা। আরে নামটা বলেন না... দাড়িওয়ালার... নামটা হল নরেন্দ্র মোদী। কাঁদছিলেন... মেরে সন্দেশখালিকে মা, বেহেন... কী কান্না বাবা! আপনাদের এখানে প্রার্থী দিয়ে দিল সন্দেশখালি থেকে। সেই ভদ্রমহিলা কোথায়? এই তো হাজি নুরুলের বিরুদ্ধে কেস করেছিল। হেরে গেল। হেরো মাল। কয়েক লাখ ভোটে হেরে গেল। তারপর কেস করল। কিন্তু বিজেপি মানুষের পাশে আসবে না।'