মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্তুতি করতে গিয়ে একেবারে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর সঙ্গে তুলনা করে বসেছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। সে নিয়ে বিস্তর বিতর্ক শুরু হয়েছে। তবে তাতেও নিজের অবস্থানে অনড় থাকলেন কুণাল ঘোষ। এর আগে কুণাল বলেছিলেন, 'সত্যি কথা বলতে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুও আলাদা দল করেও দলীয় রাজনীতিতে সফল হতে পারেননি। তিনি ঐতিহাসিক বিপ্লবী। তবে সংসদীয় রাজনীতিতে দল গড়ে ব্যর্থ হয়েছেন। অপ্রিয় সত্যি যে, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুও কিন্তু আলাদা দল নিয়ে দলীয় রাজনীতিতে সফল হয়তে পারেননি। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একমাত্র সফল।' আর তাঁর এই বক্তব্য নিয়ে চর্চার মাঝেই ফের মুখ খুললেন কুণাল। বললেন, 'কংগ্রেস থেকে বেরিয়ে এসে একা দল গড়ে ভারতের সংসদীয় গণতন্ত্রে ছাপ ফেলা, এটায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এক নম্বর। আমি ভুলটা কী বলেছি?' (আরও পড়ুন: 'জুলাই বিপ্লবের' নেতাকে মঞ্চে উঠে মার হাসিনা বিরোধীদেরই! উভয় সঙ্কটে ইউনুস)
আরও পড়ুন: পদ্ম সম্মান পেতে UPA জমানায় দিতে হত কোটি টাকা ঘুষ! সোরোসকে দেখে মনে পড়ল রাজীবের
আরও পড়ুন: ভোররাতে ধস্তাধস্তি, প্রশান্ত কিশোরকে তুলে নিয়ে গেল পুলিশ, দেখুন ভিডিয়ো
অবশ্য চলমান বিতর্কের আগুনে জল ঢালতে কুণাল নেতাজি স্তুতিও করলেন এই দফায়। বললেন, 'নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু দেশবরেণ্য, আন্তর্জাতিক নায়ক। নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর প্রথম প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত হওয়ার কথা। আজাদ হিন্দ সরকার তিনি গঠন করেছিলেন। ৬টা দেশ তাকে স্বীকৃত দিয়েছিল। যতদিনের জন্যই হোক, হয়েছিলেন তো। তাঁর সেই পার্টটা- স্বাধীনতাযোদ্ধা, বিপ্লবী, দেশনায়ক নেতাজি সেটা আলাদা।' উল্লেখ্য, উত্তর কলকাতায় সোমেন মিত্রের মূর্তি উন্মোচনের অনুষ্ঠানে এসে প্রদীপ ভট্টাচার্য অতীতকে টেনে এনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পক্ষে সওয়াল করেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বহিষ্কারের প্রায়শ্চিত্ত করতে হচ্ছে কংগ্রেসকে বলে নিজের মত ব্যক্ত করেছিলেন তিনি। এই আবহে কুণাল বলেছিলেন, 'কংগ্রেস রাজনীতির দিকে যদি দেখেন, খুব সত্যি কথা বলতে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুও আলাদা দল করেও দলীয় রাজনীতিতে সফল হতে পারেননি। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একমাত্র সফল।' (আরও পড়ুন: বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দাবি মানবে না ইউনুস সরকার? বাংলাদেশে এবার হবে কী?)
আরও পড়ুন: অনৈতিক ভাবে কাটা হচ্ছিল বেতন, বাংলাদেশে হিন্দু মহিলার প্রাণ কাড়ল 'কাজের চাপ'
আর তা নিয়ে বিতর্ক হতেই কুণাল ব্যাখ্যা দিলেন, 'দল থেকে বেরিয়ে ব্যক্তিগত ক্যারিশ্মায় দল তৈরি করে মানুষের আশীর্বাদ পাওয়া। এই প্রসঙ্গে কথা হচ্ছিল। বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা প্রদীপ ভট্টাচার্য মন্তব্য করেছেন যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বহিষ্কার করা ভুল ছিল। সেই প্রসঙ্গে আলোচনা হচ্ছিল। সেই আলোচনা প্রসঙ্গে আমি কথাটা বলেছি।' তাঁর কথায়, 'কংগ্রেস থেকে বেরিয়ে যাঁরা দল গঠন করেছেন। সেটা সুভাষচন্দ্র বসু বলুন কিংবা প্রণব মুখোপাধ্যায়। কেউ সফল হননি। নেতাজি ফরওয়ার্ড ব্লক তৈরি করেছেন। প্রণববাবু একটি দল করেছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একমাত্র নেত্রী বাংলার বুকে, যিনি একক ক্যারিশ্মায় দল থেকে বেরনোর পর কিংবা বহিষ্কারের পর, একক কৃতিত্বে সংসদীয় রাজনীতিতে তাঁর দলকে সাফল্য এনে দিয়েছেন। জাতীয় রাজনীতিতে প্রভাব ফেলেছেন। আবার বাংলায় পরপর তিনবার সরকার গঠন করেছেন। চতুর্থবার হবে। আমি এই তুলনাটা করেছি। নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু কিংবা প্রণব মুখোপাধ্যায়, তাঁরা নিজের জায়গায় আকাশছোঁয়া ব্যক্তিত্ব। কিন্তু, একা দল গড়ে ভারতের সংসদীয় গণতন্ত্রে ছাপ ফেলা, এটায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এক নম্বর। আমি ভুলটা কী বলেছি? এবার আমায় কে কী বললেন, আমার ঘোড়ার ডিম।'