আরজি কর ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় নিহত চিকিৎসক পড়ুয়ার জন্মদিনে আয়োজিত মিছিল নিয়ে ফের একবার চাঁচাছোলা ভাষায় আয়োজকদের আক্রমণ করলেন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ। তুললেন গুরুতর অভিযোগ।
রবিবার (৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫) ছিল আরজি কর কাণ্ডে নিহত তরুণীর জন্মদিন। আগাম ঘোষণা অনুসারে, এই উপলক্ষে এদিন কলেজ স্ট্রিট থেকে একটি মিছিল শুরু হয়। যার আহ্বায়ক ছিল 'অভয়া মঞ্চ' এবং মিছিলের গন্তব্য ছিল আরজি কর হাসপাতাল।
কিন্তু, মিছিল যখন হাসপাতালে পৌঁছয়, তখনই শুরু হয় অশান্তি। হাসপাতালের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কেন্দ্রীয়বাহিনী ও পুলিশ একসঙ্গে এত লোককে ভিতরে ঢুকতে বাধা দেয়। তা নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে চরম বাদানুবাদ চলে। ঘটনার জেরে দীর্ঘক্ষণ হাসপাতালের সামনের রাস্তা কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে বলে অভিযোগ।
এই ঘটনার পরই নিজের এক্স হ্যান্ডেলে এ নিয়ে সরব হন কুণাল ঘোষ। তাঁর মতে, আরজি করে অভয়া মঞ্চের নামে বহিরাগত ঢোকার চেষ্টা করেছিল। সেই কারণেই কেন্দ্রীয়বাহিনী ও পুলিশ তাঁদের বাধা দেয়। এমনকী, এই ঘটনা নিয়ে সংবাদমাধ্যমের একাংশ 'নাটক' করছে বলেও তোপ দাগেন কুণাল।
তাঁর এই পোস্টেই আরও একটি গুরুতর অভিযোগ এবং দাবি করেছেন কুণাল ঘোষ। তাঁর অভিযোগ, যাঁরা আরজি কর কাণ্ডে নিহত তরুণীর নামে সুবিচার চেয়ে এই সমস্ত আন্দোলন করছেন, তাঁরা আদতে এই ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত সঞ্জয় রায়কে বাঁচানোর অপচেষ্টা করছেন এবং তাঁরা আইন, আদালত, তদন্ত - কিছুই মানছেন না!
কুণাল লিখেছেন, 'সঞ্জয়ের বিচারে যাবজ্জীবন হয়েছে। আমরা ফাঁসি চাই। ওরা (আন্দোলনকারীরা) তাও চায় না। ওরা পুলিশ, সিবিআই, শিয়ালদা কোর্ট, সুপ্রিম কোর্ট কিছুই মানে না। তদন্ত এখনও চলছে সিবিআই-এর। তাহলে বিচার চাই বলার মানে কী?'
বস্তুত, এই ঘটনায় নিহত তরুণী চিকিৎসক পড়ুয়ার বাবা-মা থেকে শুরু করে আন্দোলনকারী - সকলেরই দাবি, সঞ্জয় রায় একা এই ঘটনা ঘটাতে পারে না। তার সঙ্গে নিশ্চয় আরও অনেক লোক ছিল। সেই 'আসল' দোষীদের আড়াল করার জন্যই সঞ্জয়কে শিখণ্ডী করা হচ্ছে বলে দাবি করছেন নিহত চিকিৎসকের পরিবার, পরিজন, বন্ধু ও আন্দোলনকারীরা। তাই, তাঁদের পক্ষ থেকে সেভাবে সঞ্জয় রায়ের ফাঁসির দাবি তোলা হয়নি।
উলটো দিকে, রাজ্যের সরকার এবং পরবর্তীতে সিবিআই-ও সঞ্জয়ের ফাঁসি চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে। আর এই জায়গা থেকেই কুণালের বক্তব্য হল, 'আরও দোষী??? যে বা যারা বলছে একা সঞ্জয় নয়, আরও অনেকে ধর্ষণ, খুনে আছে; তাদের অবিলম্বে তলব করুক সিবিআই। হয় এরা তথ্য প্রমাণ দিক। না হলে মানতে হবে সঞ্জয়কে বাঁচাতে এরা সক্রিয়।'
এদিকে, আরজি কর আন্দোলনকে সামনে রেখে জুনিয়র চিকিৎসকদের একাংশের বিরুদ্ধে বিপুল পরিমাণ অর্থ অনুদান হিসাবে জমা করারও অভিযোগ উঠেছে। যা নিয়ে আন্দোলনকারীদের কয়েকজনকে তলব পর্যন্ত করা হয়েছে।
কুণাল ঘোষ সেই বিষয়টি নিয়েও কটাক্ষ করতে ছাড়েননি। তিনি লিখেছেন, 'আগে ওরা জবাব দিক ক্রাউড ফান্ডিংয়ের টাকা ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানিতে গেছে কেন?'
প্রসঙ্গত, এদিনের এই মিছিলে নিগৃহীতা ও নিহত চিকিৎসক পড়ুয়ার বাবা-মাও অংশগ্রহণ করেছিলেন।