আরজি করে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার প্রতিবাদে যে জুনিয়র চিকিৎসকরা সরব হয়েছেন, তীব্র আন্দোলন গড়ে তুলেছেন, তাঁরাই কি অন্য কোনও গুরুতর অপরাধের ঘটনায় অভিযুক্তকে আড়াল করছেন?
এই প্রশ্ন তুলেছেন তৃণমূল কংগ্রেস নেতা কুণাল ঘোষ। যার নেপথ্যে রয়েছে আরও এক তরুণী ডাক্তারি পড়ুয়ার অকাল এবং অপমৃত্যু। এই প্রসঙ্গে শুক্রবার সকালে নিজের এক্স হ্যান্ডেলে কুণাল ঘোষ এক পোস্ট করেছেন।
সেই পোস্টে তৃণমূলের এই নেতা যে তথ্য তুলে ধরেছেন, তা হল - 'মধুমিতা ঘোষ, রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজের ছাত্রী ছিলেন। ২৬শে জানুয়ারী ২০২১, তাকে হোস্টেলের ঘরে ঝুলন্ত অবস্থায় যখন পাওয়া যায় ততক্ষনে তার মৃত্যু হয়েছে। মেয়েটির বাবা মা ওই কলেজের প্রথম বর্ষের মেডিক্যাল ছাত্র শাহবাজ শেখের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন। কলেজে দাদাগিরি, থ্রেট কালচারের সাথে মধুমিতা ঘোষের খুনে অভিযুক্ত সেদিনের সেই শাহবাজ এখন থ্রেট কালচারের বিরুদ্ধে ডায়ালগ দিচ্ছে সাথে জাস্টিসের স্লোগান। আর অনিকেত মাহাতোদের দেওয়া নটোরিয়াস ক্রিমিনালের(!) লিস্টে কিন্তু এর নাম থাকে না, কারণ উনি অনিকেতদের লবির।'
কুণাল ঘোষ তাঁর এই লেখার সঙ্গে '২০২১ সালের সেই এফআইআর কপি এবং মধুমিতার বাবার অভিযোগপত্র'টিরও ছবি তুলে সেগুলি ওই পোস্টে জুড়ে দিয়েছেন।
সঙ্গে দিয়েছেন আরও একটি ছবি। যেটি সাম্প্রতিক। দেখে বোঝা যাচ্ছে, আরজি কর কাণ্ডের পরবর্তী সময়কার। খুব সম্ভবত কোনও প্রতিবাদ কর্মসূচির। তার সামনের সারিতে জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনের অন্যতম মুখ দেবাশিস হালদারকে দেখা যাচ্ছে।
দেবাশিসের বেশ খানিকটা পিছনে অন্য এক যুবকের মুখ লাল রঙে গোল করে চিহ্নিত করে দিয়েছেন কুণাল। তাঁর দাবি, ওই যুবকই হলেন শাহবাজ শেখ। পাশাপাশি, শাহবাজ শেখের ফেসবুক প্রোফাইলের হোম পেজের ছবিও এই পোস্টের সঙ্গে শেয়ার করেছেন কুণাল।
তৃণমূল নেতার বার্তা খুবই স্পষ্ট, সম্প্রতি স্বাস্থ্য দফতরকে না জানিয়ে একতরফাভাবে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের ৫৩ জন ডাক্তারি পড়ুয়াকে সাসপেন্ড করার অভিযোগ উঠেছিল বর্তমান অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে।
যা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। জানতে চেয়েছিলেন, এই ধরনের আচরণ কি থ্রেট কালচারের মধ্যে পড়ে না? ঘটনাটি ঘটেছিল আন্দোলনরত জুনিয়র চিকিৎসকদের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর নবান্নের বৈঠকের সময়।
সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জুনিয়র চিকিৎসক তথা আরজি কর আন্দোলনের অন্যতম মুখ অনিকেত মাহাতোও। তিনি সঙ্গে সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে বলেছিলেন, 'ম্যাডাম, ওরা (সাসপেন্ড হওয়া ৫৩ জন মেডিক্যাল পড়ুয়া) নটোরিয়াস ক্রিমিনাল'!
এখানেই কুণালের প্রশ্ন, যে অনিকেতরা সংশ্লিষ্ট ৫৩ জন চিকিৎসক পড়ুয়াকে 'নটোরিয়াস ক্রিমিনাল' বলছেন, তাঁদের সুবিচার চাওয়ার আন্দোলনে আর এক ডাক্তারি পড়ুয়া মধুমিতা ঘোষের মৃত্যুর ঘটনায় অভিযুক্ত যুবক সামিল হলেন কীভাবে?
অনিকেতদের উদ্দেশে কুণালের প্রশ্ন, 'এই শাহবাজ শেখ (যাকে ছবিতে দেখা যাচ্ছে গোল চিহ্নিত করা) তিনি সমাজসেবী নাকি নটোরিয়াস ক্রিমিনাল?' কুণাল জানিয়েছেন, তিনি এই প্রশ্নের উত্তরের অপেক্ষায় থাকবেন।