খাস কলকাতায় বেআইনি কল সেন্টারের পর্দাফাঁস করল পুলিশ। এই কল সেন্টারের আড়ালে প্রতারণা চক্র চলত বলে অভিযোগ। বালিগঞ্জের মুলেন রোডে অভিযান চালিয়ে একেবারে ১৯ জনকে গ্রেফতার করল কলকাতা পুলিশ। একাধিক মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ সেখান থেকে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। পাশাপাশি কল সেন্টারটি সিল করে দেওয়া হয়েছে। অ্যান্টি ভাইরাস ইনস্টল করার টোপ দিয়ে মেশিন হ্যাক করে যাবতীয় তথ্য চুরি করা হতো বলে অভিযোগ। তারপর ডলারের বিনিময়ে গিফট কুপন দেওয়া হবে বলে টাকা হাতিয়ে নিজেদের অ্যাকাউন্টে নিয়ে আসা হতো। এমনই তথ্য পেয়ে অভিযান চালায় পুলিশ।
একেবারে হাইটেক পদ্ধতিতে কলকাতার বুকে বসে ভুয়ো কলসেন্টার খুলে চলছিল এই প্রতারণা চক্র। নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমে পড়েন লালবাজারের গোয়েন্দা কর্তারা। তখনই গোপন সূত্রে ভুয়ো কলসেন্টার চালানোর খবর পান। কয়েকদিন আগে শহরের বুকে কত কলসেন্টার চলছে তা জানতে স্থানীয় থানাগুলিকে রিপোর্ট দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়। সেখান থেকেই উঠে আসে নানা তথ্য। কারণ শহরের সব থানাই এই রিপোর্ট জমা করে দেয়। তারপর গুন্ডাদমন শাখা অভিযান চালায় বালিগঞ্জ এলাকায়। সেখানেই ধরা পড়ে ১৯ জন। একটি ফ্ল্যাটে বসে প্রতারণার কাজ চলছিল। সেখান থেকে প্রচুর মোবাইল, ল্যাপটপ ও অন্যান্য ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী উদ্ধার করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর।
আরও পড়ুন: লক্ষ্মীর ভাণ্ডার নিয়ে কুকথা ব্যুমেরাং হয়েছে, সিপিএমের এরিয়ে সম্মেলনের দলিলে স্বীকার
ধৃতরা নর্টন অ্যান্টিভাইরাস এবং অন্যান্য সংস্থার কর্মচারী হিসাবে নিজেদের পরিচয় দিত। যাতে সহজে তাদের টিকি কেউ ছুঁতে না পারে। পুলিশের জেরায় উঠে এসেছে, বালিগঞ্জের অফিসে বসে আমেরিকায় ফোন করে সফটওয়্যার আপডেট করার নামে প্রতারণা চলত। ল্যাপটপের কন্ট্রোল নিয়ে নিত এই প্রতারকরা। তারই সঙ্গে গিফট কার্ডের নামে টাকাও হাতিয়ে নেওয়া হতো। এই চক্রের মূল টার্গেট ছিলেন মার্কিন নাগরিকরা। সফটওয়্যার ইনস্টল করার নামে মেশিন হ্যাক করে তথ্য চুরি করত। তার পর ক্রেতাদের শতাধিক ডলারের গিফট কুপন কিনতে বাধ্য করত। সেই অর্থ যেত চক্রের মূল পান্ডার অ্যাকাউন্টে।
এছাড়া কদিন আগেই আন্তর্জাতিক সাইবার প্রতারণা চক্রের হদিশ মেলে বিধাননগরে। গ্রেফতার করা হয় চক্রের তিনজন মাথাকে। পুলিশ জানতে পারে, দুবাইতে বসেই এই যাবতীয় প্রতারণার কারবার চালাত তারা। সোমবার রাতে লালবাজারের গোয়েন্দারা সেখানে অভিযান চালিয়ে মোট ১৯ জনকে গ্রেফতার করে। সকলে একসঙ্গে থেকে বেআইনি কলসেন্টার চালাত। ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয় রাউটার, ল্যাপটপ, মোবাইল। সেসব বাজেয়াপ্ত করে ফ্ল্যাটটি সিল করা হয়েছে। এই প্রতারণা চক্রের মাথা কে সেটার খোঁজে তদন্তকারীরা কাজ করছেন।