বিজেপি–তে যাওয়ার পর থেকে দলের তেমন কোনও সভা বা মিছিলে দেখা যায়নি কলকাতার প্রাক্তন মেয়র তথা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী শোভন চট্টোপাধ্যায় ও তাঁর বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে। সম্প্রতি শোভনকে কলকাতার পর্যবেক্ষক বা অবজারভার করেছে বিজেপি। আর তাঁর বান্ধবী বৈশাখীকে সহ–আহ্বায়ক করা হয়েছে। আর তার পরই তাঁদের বড় দায়িত্ব দিয়েছে দল। সোমবার গেরুয়া পতাকা হাতে রাস্তায় নামছেন তাঁরা। আর তাতে ইতিমধ্যে বাধ সেধেছে লালবাজার। আর তার পরেই বৈশাখী সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন যে তিনি ব্যক্তিগত কারণে মিছিলে থাকছেন না।
জানা গিয়েছে, সোমবার খিদিরপুরের অরফ্যানগঞ্জ রোড থেকে শুরু হয়ে দক্ষিণ কলকাতার বিস্তীর্ণ অঞ্চল ঘুরে মুরলীধর লেন স্ট্রিটে দলের রাজ্য দফতরে যাবে বিজেপি–র মিছিল। নেতৃত্বে কৈলাস বিজয়বর্গীয় থাকলেও, এই রোড শো–র মূল আকর্ষণ শোভন–বৈশাখী। বাইক মিছিল করে রীতিমতো শহর দাপিয়ে বেড়াবে গেরুয়া শিবিরের এই বিশাল মিছিল। কিন্তু সেই মিছিলের অনুমতি দেয়নি পুলিশ। লালবাজার থেকে মিছিলের ওপর নিষেধাজ্ঞা জানিয়ে চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘৭০টি গাড়ি, এত বিশাল বড় রুট, এত মানুষ নিয়ে মিছিলের জেরে অবরুদ্ধ হয়ে পড়বে কলকাতা। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে করতে রাত হয়ে যাবে।’
বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, পুলিশের আপত্তি দেখে পূর্ব নির্ধারিত রুটের কিছুটি পরিবর্তনও করে বিজেপি। কিন্তু তার পরও নিজের অবস্থান থেকে পুলিশ সরেনি বলে জানা গিয়েছে। আর তার জেরেই ক্ষুব্ধ রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব। আশঙ্কা, সোমবার যদি পুলিশের কথা না মেনে বিজেপি রাস্তায় নামে তবে নবান্ন বা উত্তরকন্যা অভিযানের মতো গন্ডগোল হতে পারে। আর সেই আশঙ্কার পারদ আরও চড়িয়েছেন বিজেপি নেতা সায়ন্তন বসু। তাঁর কথায়, ‘বিজেপি মিছিল করলে কখনওই অনুমতি দেয় না পুলিশ। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মিছিল করতে তাতে পুলিশের কোনও আপত্তি থাকে না।’ সায়ন্তনের হুঁশিয়ারি, ‘প্রয়োজনে কালকের মিছিল বিনা অনুমতিতেই হবে।’ এর পাশাপাশি ব্যক্তিগত কারণে সোমবারের মিছিলে থাকতে পারবেন বলে ইতিমধ্যে দলের নেতৃত্বকে জানিয়েছেন বৈশাখী।
এদিকে, শোভন–বৈশাখীর এই রোড শো–কে ইতিমধ্যে কটাক্ষ করেছেন তাঁর স্ত্রী রত্না চট্টোপাধ্যায়। জানা গিয়েছে, খিদিরপুর থেকে শুরু হয় মাঝেরহাট ব্রিজ শুরুর আগের মোড় থেকেই নিউ আলিপুর এলাকা ঘুরে যাবে এই মিছিল। কাছাকাছি এলেও সেই মিছিল যাবে না শোভনের বিধানসভা এলাকা বেহালা পূর্বে। সেই প্রসঙ্গ টেনে রবিবার রত্না কটাক্ষ করে বলেন, ‘ওকে মিছিল নিয়ে বেহালায় আসতে অনুরোধ করুন। ও বেহালায় এলে আমি ওকে ভাল করে স্বাগত জানাতে পারতাম।’ এর পরই রত্নার আক্রমণ, ‘বেহালার মানুষ শোভনকে ভোট দিয়ে জিতিয়েছিলেন। সেই বেহালার মানুষকেই ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছিলেন তিনি।’