আরজি কর হাসপাতালের ঘটনার জেরে নবান্ন অভিযান হয়েছিল। তাতে পুলিশের উপর আক্রমণ নেমে আসে। পুলিশের গাড়ি লক্ষ্য করে ইট ছোড়া হয়। তাতে এক পুলিশ অফিসারের বাঁ–চোখ মারাত্মকভাবে জখম হয়েছে। ওই চোখটি নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। এমনকী দেবাশিস চক্রবর্তী নামের ওই সার্জেন্ট দৃষ্টিশক্তি হারাতে পারেন বলে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। নবান্ন অভিযানের দিন এই ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়েছে পুলিশ। তাই এবার আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করার কাজে ব্যবহৃত পুলিশের সব গাড়ির সামনে এবং পিছনে—সমস্ত জানলায় শক্ত প্রতিরোধক জাল লাগানোর নির্দেশ দিল লালবাজার।
এই জাল লাগানো থাকলে ইট ছুড়লেও তাতে গাড়ির এবং গাড়িতে থাকা পুলিশের কোনও ক্ষতি হবে না। এই নতুন ভাবনা এবার বাস্তবায়িত করতে চলেছে কলকাতা পুলিশ। ইতিমধ্যেই লালবাজারের ট্রান্সপোর্ট বিভাগের পক্ষ থেকে সমস্ত থানা, সহকারি নগরপাল এবং ডিভিশনের উপ–নগরপালদের কাছে এই নির্দেশ পাঠানো হয়েছে। এই নির্দেশ পালন করা হয়েছে কিনা সেটা আগামী ১০ সেপ্টেম্বর তারিখের মধ্যে জানাতে হবে লালবাজারের ট্রান্সপোর্ট বিভাগে রিপোর্ট দিয়ে। আন্দোলনকারীদের ইটের আঘাত থেকে পুলিশকর্মীদের বাঁচাতে এখন কলকাতা পুলিশের বেশ কিছু প্রিজন ভ্যান এবং গাড়িতে এমন লোহার জাল লাগানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: ‘উনি যা বলেছেন তা অত্যন্ত পরিণত মস্তিষ্কেরই কথা’, মমতার মন্তব্যে সমর্থন শত্রুঘ্নর
পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজের ডাকে নবান্ন অভিযান শান্তিপূর্ণ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তা একেবারেই শান্তিপূর্ণ ছিল না বলে পুলিশের অভিযোগ। তাই ইট–পাটকেল থেকে শুরু করে লাঠি, বোতল ছোড়া হয়েছে বলে অভিযোগ। আন্দোলনকারীদের ছোড়া ইটের আঘাতে পুলিশকর্মীরা জখম হয়েছেন। একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হলেও বাকিদের রক্ত ঝরেছে। এমনকী পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। মোটরবাইকে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ। এমন পরিস্থিতিতে এবার থেকে আগাম সুরক্ষা নেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে।
লালবাজারের পক্ষ থেকে সাম্প্রতিক এই নির্দেশে বলা হয়েছে, সুরক্ষার জন্যই পুলিশের গাড়িতে এই লোহার জাল লাগাতে হবে। যাতে আগামী দিনে ডিউটি করার সময় কোনও বিক্ষোভ–আন্দোলন থেকে ইট ছোড়া হলে পুলিশকর্মীরা জখম হবেন না। নবান্ন অভিযানের দিন আন্দোলকারীদের হামলায় জখম হয়েছেন ৩৬ জন পুলিশকর্মী। তাঁদের মধ্যে দেবাশিস চক্রবর্তী–সহ পাঁচজনের অবস্থা বেশ গুরুতর। শহরের নানা হাসপাতালে এই পুলিশকর্মীদের চিকিৎসা চলছে বলে খবর।