শহরে যে অপরাধ ঘটছে না তা কিন্তু নয়। কাউন্সিলরকে হত্যা করার ষড়যন্ত্র থেকে শুরু করে বেআইনি কারবার কলকাতা শহরেই ঘটেছে। সেখানে কলকাতা পুলিশে একটা অভাব দেখা যাচ্ছে। সেটি হল—পুলিশ কমিশনার থাকলেও স্থায়ী জয়েন্ট সিপি ক্রাইম বা গোয়েন্দা প্রধান নেই লালবাজারে। অথচ এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদ। অস্থায়ীভাবে চলছে বলে অভিযোগ। মহানগরীর অপরাধ দমনের সব দায়িত্বই বর্তায় এই পদের উপর। সেখানে জানা যাচ্ছে, প্রায় ১৫ মাস কেটে গেলেও এখনও এই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদের জন্য নাকি ডিআইজি পদমর্যাদার উপযুক্ত আইপিএস অফিসার খুঁজে পায়নি লালবাজার।
পুলিশের একটা সূত্র বলছে, অস্থায়ীভাবে গোয়েন্দা প্রধান দিয়ে কাজ চালানো হচ্ছে কলকাতা পুলিশে। যেখানে পূর্ণ সময়ের গোয়েন্দা প্রধান প্রয়োজন সেটা না পাওয়ায় নানা ধরণের সমস্যায় পড়তে হচ্ছে গোয়েন্দাদের। সেই সমস্যা প্রায় রোজই দেখা দিচ্ছে বলে অভিযোগ। ২০২৩ সালে ১০ নভেম্বর গোয়েন্দা প্রধান শঙ্খশুভ্র চক্রবর্তী সিআইডিতে বদলি হন। তার পর থেকে অস্থায়ী জয়েন্ট সিপি ক্রাইম পাচ্ছে কলকাতা পুলিশ। অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার–১ মুরলীধর শর্মা অস্থায়ীভাবেই এই পদের দায়িত্ব সামলেছেন। এমনকী ওয়াকার রাজা পর্যন্ত জয়েন্ট সিপি ক্রাইম পদে স্থায়ীভাবে আসেন। লোকসভা নির্বাচনের সময় আইপিএস অফিসার ওয়াকার রাজকে মুর্শিদাবাদ রেঞ্জের ডিআইজি করে দেয় নির্বাচন কমিশন।
আরও পড়ুন: দক্ষিণরায়ের মুখোমুখি বাঁকুড়ার কৃষক, একে অপরকে বুঝে নিতে তুমুল লড়াই, প্রাণে বাঁচলেন
তখন আবার অস্থায়ী গোয়েন্দা প্রধান হিসেবে আসেন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার –১ মুরলীধর শর্মা। তারপরই শহরের বুকে ঘটে যায় আরজি কর হাসপাতালে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার প্রেক্ষিতে উত্তাল পরিস্থিতি। বদলি হতে হয় তৎকালীন পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলকে। ২০২৪ সালের ১৯ নভেম্বর মুরলীধর শর্মাকে রাজ্য পুলিশে বদলি করা হয়। তখন আবার অস্থায়ী গোয়েন্দা প্রধান হিসেবে আসেন জয়েন্ট সিপি (ট্রাফিক) রূপেশ কুমার। তখন থেকে এই রূপেশ কুমারই অস্থায়ীভাবে গোয়েন্দা প্রধান হিসেবে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
কিন্তু বাংলাদেশে উত্তাল পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় সেখান থেকে অবৈধ পথে এপার বাংলায় চলে আসছেন নাগরিকরা। ঢুকে পড়ছে জঙ্গিরা। নিরাপত্তার অভাববোধ করছে কল্লোলিনী কলকাতা। এই শহর থেকে জঙ্গি ধরাও পড়েছে। তাই স্থায়ী গোয়েন্দা প্রধান প্রয়োজন লালবাজারে বলে অনেকের মত। কেন এখনও স্থায়ী গোয়েন্দা প্রধান মিলল না? তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। সূত্রের খবর, ডিআইজি পদমর্যদার বহু আইপিএস অফিসার গোয়েন্দা প্রধান পদে কাজ করতে আগ্রহী। এই খবর পৌঁছে গিয়েছে নবান্নে। তখনই বেশ কয়েকজন আইপিএস অফিসারের নাম নিয়ে চর্চা শুরু হয়। এবার স্থায়ী গোয়েন্দা প্রধান পেতে চলেছে লালবাজার বলে নবান্ন সূত্রে খবর।