একুশের নির্বাচনের ঠিক আগে তিনি বলেছিলেন, সংগঠন মজবুত আছে। আর যেটুকু বাকি আছে তা করে এই জেলায় তৃণমূল কংগ্রেসকে শূন্য নামিয়ে আনব। নির্বাচন শেষ হয়ে গিয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার গঠন হয়ে গিয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রামে তৃণমূল কংগ্রেসকে শূন্যে নামিয়ে আনা যায়নি। রাজ্যে বিজেপির সংগঠন নেই বলেই দাবি করেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। পরিবর্তে হুঙ্কার ছেড়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। কিন্তু দেখা গেল প্রদীপের তলায় অন্ধকারই বেশি। শুক্রবার সেই কথা কার্যত স্বীকার করে নিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
এই বিষয়ে এবার শুভেন্দু একটি পরিসংখ্যানও দেন। তিনি বলেন, ‘বিজেপির পক্ষে সমর্থন রয়েছে প্রচুর। ৩৮.১৩ শতাংশ ভোট পেলে কেন্দ্রে সরকার গড়া যায়। কিন্তু এখানে আমরা এত ভোট পাওয়ার পরেও বিধায়ক সংখ্যা বাড়াতে পারিনি। ৪৭ শতাংশের বেশি ভোট একত্রিত হয়েছে বিপরীত দিকে। রাজ্যে ৭৭ হাজার বুথ রয়েছে। যার মধ্যে ১২ হাজার বুথে কমিটি তৈরি করা খুব কঠিন। এটা যদি আমরা তৈরি করতে না পারি, তা হলে আমরা একটা বড় অংশের আসনে জিতব কিন্তু সরকার গড়তে পারব না।’ এই কথা তিনি নিজে মুখে স্বীকার করেছেন।
বিধাননগরে সুকান্ত সন্ধ্যায় শুভেন্দু বলেন, ‘আমি আশা করব নতুন রাজ্য সভাপতি এই বিষয়ে খানিকটা যত্নবান হবেন। এই সরকারকে সরাতে হলে বুথ স্তরে সংগঠন মজবুত করতে হবে। আমি দলে নতুন। পুরনো সাংগঠনিক বিষয় জানি না। কিন্তু আমাদের সাংগঠনিক দুর্বলতার কারণেই নির্বাচনী রাজনীতিতে বিজেপি ধাক্কা খেয়েছে।’ তবে নয়াদিল্লি গিয়ে যখন জেপি নড্ডার সঙ্গে তিনি বৈঠক করেছিলেন তখন সংগঠন মজবুত আছে বলেই জানিয়েছিলেন শুভেন্দু বলে সূত্রের খবর।
কিন্তু তিনি পুরনো বিজেপির সাংগঠনিক বিষয় জানেন না বলায় অনেকে মনে করছেন শুভেন্দু এই কাজ থেকে নিজেকে সরিয়ে নিচ্ছেন। তাই সুকৌশলে সুকান্ত মজুমদারের ঘাড়ে দায়িত্ব চাপিয়েছেন। তবে নিজের সম্পর্কে শুভেন্দু বলেন, ‘বিজেপিতে তিন ধরনের কর্মী ও নেতা আছেন। একদল আদর্শগত কারণে রয়েছেন। আর একদল বিজেপি সরকার গড়বে ভেবে নাম লিখিয়েছিলেন। বাকি একটা অংশ নৈতিক কারণে লড়াই করার জন্য সব ছেড়ে এসেছেন। এরপরও একটা অংশ আছে যাঁরা বিনা স্বার্থে মনে করেছেন নরেন্দ্র মোদীই সঠিক নেতা এবং বিজেপিই সঠিক মঞ্চ। ওখানে যাই, বাংলাকে বাঁচাই। ওই দলে আমি পড়ি। এখন অবশ্য বিজেপি সরকার গড়েনি বলে একটা অংশ পালাই বলছেন।’