এবার মাদারিহাটও গিয়েছে তৃণমূলের দখলে। এবার এই একটি কেন্দ্রকে ঘিরে কিছুটা হলেও স্বপ্ন দেখেছিল বিজেপি। কিন্তু বাস্তবে কাজের কাজ কিছু হল না। এই কেন্দ্রটিও হাতছাড়া হল। সবথেকে বড় কথা হল তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর থেকে এই চা বাগানের ভোটে বিশেষ ভাগ বসাতে পারছিল না। মূলত এই চা বাগানের ভোট ছিল গেরুয়ার দখলে। কিন্তু এবারের উপনির্বাচন যেন সব হিসেবকে ওলটপালট করে দিয়েছে।
এবারের উপনির্বাচনে দেখা গিয়েছে চা বাগানের ভোটে বিরাট ধস। ডুয়ার্সের অন্তত ২৪টি বাগানের ভোটে ধস নেমেছে। এদিকে কেন এমন পরিণতি হল তা নিয়ে ভেবে কূলকিনারা করতে পারছেন না বিজেপি নেতৃত্ব। তবে এর পেছনে একাধিক কারণ নিয়ে ইতিমধ্যেই দলের নীচুতলায় আলোচনা শুরু হয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম হল নেতৃত্বের অভাব। যোগ্য নেতৃত্বের অভাব। সেই সঙ্গেই চা বাগান এলাকায় ভোটে ধস নামার একটা বড় কারণ হল সরকারি একাধিক প্রকল্প।
সরকারি একাধিক প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছেন চা বাগানের শ্রমিকরা। চা সুন্দরী প্রকল্প, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার সহ একাধিক প্রকল্পের সুবিধা পেয়েছেন চা বাগানের শ্রমিকরা। আর তার প্রতিদানও দিয়েছেন তাঁরা।
বিজেপি সাংসদ মনোজ টিগ্গা জানিয়েছেন, চা বাগানে বিজেপির ভোট ভাঙাতে একই পরিবারের একাধিক ব্যক্তিকে পাট্টা দেওয়া হয়েছে। যা বেআইনি। তৃণমূলের এই ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে আমরা পালটা প্রতিরোধ করতে পারিনি। সেই সঙ্গেই তিনি জানিয়েছেন, ভোটের আগে এই এলাকায় প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার ৬০ হাজার টাকা তৃণমূল বিলি করে। এর বাইরেও ৪০ হাজার টাকা পরিবার পিছু দেওয়া হয়।
কার্যত আর্থিক সুবিধার মাধ্য়মে তৃণমূল ভোট ভাঙিয়েছে বলে দাবি বিজেপির। সেই সঙ্গেই জন বারলা ইস্যু কার্যত উড়িয়ে দিয়েছেন বিজেপি নেতৃত্ব। এবার ভোটে আগে থেকেই বেসুরো গাইছিলেন জনবারলা। সেটাকে ভোটে পরাজয়ের কারণ বলতে রাজি নন মনোজ টিগ্গা।
বিজেপি নেত্রী অগ্নিমিত্রা পাল এর আগে বলেছিলেন, সামান্য কিছুটা হলেও হতে পারে। তবে মানুষের একটা মাইন্ডসেট হয়ে গিয়েছে। ২০২৬ সালের আগে তৃণমূলকে সরানো যাবে না এমন একটা মনোভাব হয়ে গিয়েছে। তাছাড়া সর্বত্র সন্ত্রাস করেছে তৃণমূল।
২০১১ সালের বিধানসভা ভোট। মাদারিহাটে ২৯ হাজারে হেরে গিয়েছিল তৃণমূল। বিগত লোকসভা ভোটে বিজেপি মাদারিহাটে মাত্র ১১ হাজার ভোটে এগিয়ে ছিল। অর্থাৎ ভোটের ব্যবধান ক্রমশ কমিয়ে ফেলছিল তৃণমূল। আর এবার একেবারে মাদারিহাট আসন দখলই করে ফেলল তৃণমূল।