রোজকার বঞ্চনা। টানা লড়াই। পুলিশের তাড়া। এসবের মধ্যেই এই মহানগরীর বুকে এসএসসি আন্দোলনের মঞ্চে জন্ম নিয়েছে প্রেম। খুকুমণি আর মিঠুন। খুকুমণির দোলইয়ের বাড়ি পূর্ব মেদিনীপুরের হলদিয়াতে। আর নদিয়ার চাপড়ার বাসিন্দা মিঠুন বিশ্বাস। আন্দোলনের মঞ্চেই দেখা হয়েছিল তাঁদের। এরপর একটা একটা করে দিন গিয়েছে। আরও কঠিন হয়েছে আন্দোলন। নিঝুম দুপুরে গোটা কলকাতা যখন বিশ্রাম নিয়েছে সুখী গৃহকোণে, তখনও পিচগলা রাস্তায় দাঁড়িয়ে স্লোগান তুলেছেন মিঠুন আর খুকুমণি।
এই কলকাতার রাজপথে জন্ম নিয়েছে লড়াই। জন্ম নিয়েছে একসঙ্গে বাঁচার স্বপ্ন। আর জন্ম নিয়েছে প্রেম। সেই প্রেমের টানেই কাছাকাছি এসেছেন মিঠুন আর খুকুমণি। ২০২০ সালে তাঁদের দেখা। ২০২১ সালে প্রেমের সম্পর্কে আবদ্ধ হন তাঁরা। এরপর পাশাপাশি বসে সুখ দুঃখের কথাবার্তা। অন্যের জন্য মন কেমন করা। আন্দোলন মঞ্চে না এলে ফোন করে জিজ্ঞাসা করা। মেয়ো রোড থেকে আন্দোলন গিয়েছে সেন্ট্রাল পার্কে। পরে সেই আন্দোলন যায় গান্ধী মূর্তির পাদদেশে। এরপর অগস্টে বিয়ে করেন তাঁরা।
দুজনের জীবনেই অনিশ্চয়তার মেঘ। দুজনেই রোজ আসেন লড়াইয়ের ময়দানে। আর সেই বঞ্চনার বিরুদ্ধে লড়াইতে নেমে এক হয়েছে দুটি মন। আর সেখান থেকেই প্রেম। তবে বেকার ছেলের সঙ্গে বিয়ে দিতে চায়নি খুকুমণির পরিবার। নদিয়ায় সামান্য কিছু জমি আর টিউশন করে সংসার চলে মিঠুনের। কিন্তু মেয়ের জেদের কাছে হার মেনেছে পরিবারের আপত্তি। দুজনেই বিশ্বাস করেন অনিশ্চয়তার মেঘ একদিন কাটবেই। চাকরি তাঁরা পাবেনই। সেই ভোরের আশাতেই দিন গুনছেন মিঠুন-খুকুমণি।