জন্মলগ্ন থেকে কারও ভাগ্যে 'কেস' খাওয়া লেখা হয়ে যায়। তিনি আজীবন শুধু 'কেস' খেয়ে গেলেন। কংগ্রেস, সিপিএম, বিজেপি এবার নিজের দল তৃণমূল আমলেও। এসএসকেএম তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে। তা নিয়ে প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়েই এমন মন্তব্য কামারহাটির বিধায়ক মদন মিত্রের।
পুলিশ সূত্রে খবর, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মদনের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৫০৯ এবং ৫০৬ ধারায় মামলা রুজু করেছে। শুক্রবার রাতে এক রোগী ভর্তিকে কেন্দ্র করে বিবাদ-বিসম্বাদের সূত্রপাত। শনিবার সারাদিন এ নিয়ে টানাপোড়েন চলে। সাংবাদিক বৈঠকে মদন মিত্র দল ছাড়ারও হুমকি দেন। পরে রাতে কুণাল ঘোষের সঙ্গে বৈঠকের পর সুর পাল্টান কামারহাটির বিধায়ক। তবে রোগী ভর্তি করতে গিয়ে তিনি যে কোনও অভব্য আচারণ করেননি তা আবারও জানিয়ে দেন।
এরই মধ্যে এসএসকেএম কর্তৃপক্ষের অভিযোগ দায়ের করার খবর শুনে তিনি তাঁর স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতেই বলেন,'সোনাপাচার, গরুপাচার বা কয়লাপাচারের জন্য কেস খাইনি। রোগীর চিকিৎসা করাতে গিয়ে কেস খেয়েছি। যিনি ভালো মনে করেছেন কেস করেছেন। ছাত্র পরিষদ করার সময় সিদ্ধার্থশঙ্কর রায়ের আমলে কেস খেয়েছি, সিপিএমের আমলে কেস খেয়েছি, বিজেপি কেস দিয়েছে, এবার তৃণমূলের সময় খেলাম।'
যে রোগীকে তিনি এসএসকেএম-এ ভর্তি করানোর জন্য এনেছিলেন তাঁকে মেডিক্যালে ভর্তি করানো হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী নিজে উদ্যোগী হয়ে তাঁর ভর্তির ব্যবস্থা করেছেন। সেই কারণে মদন মিত্র ধন্যবাদ জানান মুখ্যমন্ত্রীকে। তাঁকেই দেখতে গিয়ে মদন এই মন্তব্য করেন।
এফআইআর নিয়ে মদন মিত্রের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায়, বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য বলেন, 'সিপিএম জমানায় যখন তৃণমূলের ঝান্ডা ধরার কেউ ছিল না, তখন একটা লোককে দেখা যেত প্রতিদিন দুপুর বারোটা নাগাদ ঝান্ডা কাঁধে ১০-১২ জন লোক নিয়ে মিছিল করতে এবং মমতা ব্যানার্জি জিন্দাবাদ স্লোগান দিতে। তিনিই মদন মিত্র। একটা সময় বলা হল এসএসকেএম মানে মদন মিত্র। তাঁর যদি এই অবস্থা হয় তবে বিরোধীদের কী হবে।'
সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী এবিপি আনন্দকে বলেন,'মদন মিত্র জন্মলগ্ন থেকে তৃণমূলের নেতা। বিধায়ক হিসেবে মানুষের পাশে থাকেন। এটা ওঁর স্টাইল। সোনা, গরু, কয়লাপাচারে নাম আসেনি যদিও। কিন্তু গন্ডগোল হচ্ছে যে, তৃণমূল দলটাই চুরি, লুটেরাদের দল। পুরনোদের মধ্যে অভিমান ধরা পড়ছে। তিনি আশঙ্কা করছেন, পরিবারের উপর চাপসৃষ্টি হবে। মদনের সঙ্গে এমন হলে সাধারণ মানুষের কী হবে?'