স্কুলের শিক্ষক–শিক্ষিকাদের মধ্যে বাল্যবিবাহ, শিশুপাচার, লিঙ্গ–বৈষম্য এবং শিশুদের উপর হিংসার মতো সামাজিক ব্যাধির বিরুদ্ধে প্রচার করবে রাজ্য সরকার। এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আর তা করতে ব্যবহার করা হবে শর্টফিল্ম এবং ফ্লিপচার্ট। আর এই নারী, শিশু উন্নয়ন এবং পরিবারকল্যাণ দফতরের ইতিবাচক এই নির্দেশকে ঘিরে বিস্তর বিতর্ক শুরু হয়েছে। কারণ এই সচেতনতা প্রচার কর্মসূচি যখন হওয়ার কথা তখন মাধ্যমিক পরীক্ষা চলার কথা। ওই রুটিনের সঙ্গে এই প্রচার কর্মসূচির সংঘাত লাগতে চলেছে। তাই শিক্ষক–শিক্ষিকাদের একাংশের মধ্যে ক্ষোভ দানা বেঁধেছে।
তবে বিষয়টি নিয়ে এখনও সুরাহা হয়নি। তাই পরিবারকল্যাণ দফতরের প্রধান সচিবের পক্ষ থেকে প্রত্যেক জেলার পরিবারকল্যাণ অধিকরণে এই সচেতনতা কর্মসূচির নির্দেশ পৌঁছে গিয়েছে। আর এখন সেখান থেকে সেই নির্দেশই স্কুলগুলিতে গিয়ে পৌঁছচ্ছে। তাই শিক্ষক–শিক্ষিকাদের প্রশ্ন, এমন কর্মসূচি কেমন করে নেওয়া সম্ভব? স্কুলের কন্যাশ্রী ক্লাব, অঙ্গনওয়ারি–সহ নানা চাইল্ড কেয়ার ইনস্টিটিউশনকে এই কর্মসূচিতে অংশ নিতে বলা হয়েছে। আর সেই বার্তা পেয়ে এখন সকলের মধ্যে ধন্দ তৈরি হয়েছে। শিক্ষকদের মধ্যে তা মারাত্মক আকারে বেড়েছে। শিক্ষক–শিক্ষিকারদের প্রশ্ন, পরীক্ষার দায়িত্ব তাঁরা সামলাবেন নাকি প্রশিক্ষণ নেবেন?
আরও পড়ুন: ‘এটা শুধু ইকোনমিক ব্লকেড নয়, বিট্রেয়ালও’, বাজেট আলোচনায় কেন্দ্রকে তোপ কাকলির
এদিকে একাধিক স্কুল শিক্ষক–শিক্ষিকারা সম্পূর্ণ ধোঁয়াশার মধ্যে পড়ে গিয়েছে। তাই তাঁদের বক্তব্য, মাধ্যমিক পরীক্ষার দায়িত্ব সামলাব নাকি প্রশিক্ষণ নেব? এই বিষয়টি নিয়ে অল পোস্ট গ্র্যাজুয়েট টিচার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন একটি চিঠি লিখেছে দফতরের প্রধান সচিবকে। তাতে দাবি করা হয়েছে, মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার তারিখের কথা মাথায় রেখে তার আগে, পরে এবং মাঝামাঝি সময়ে এই প্রশিক্ষণের সূচি ফেলা হোক। ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হচ্ছে মাধ্যমিক পরীক্ষা। যা চলবে ২২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। আর এই সচেতনতা প্রশিক্ষণ শিবির দু’ধাপে পড়েছে ১ থেকে ১৫ ফেব্রুয়ারি এবং ১৬ থেকে ৩১ ফেব্রুয়ারি। অথচ এই ফেব্রুয়ারি মাস শেষ হচ্ছে ২৮ তারিখে!
অন্যদিকে এই তারিখ দেখে বোঝা যাচ্ছে বিরাট একটা ভুল হয়ে গিয়েছে। যা বিজ্ঞপ্তিতে ছাপা পর্যন্ত হয়ে গিয়েছে। ভুল করেই এই ৩১ ফেব্রুয়ারি উল্লেখ করা হয়েছে অর্ডারে। শিক্ষক সংগঠন তাদের চিঠিতে এই ভুলও দূর করার কথা লিখেছেন। তার সঙ্গে নয়া অর্ডার জারির দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। মাধ্যমিক পরীক্ষার মধ্যেই এই সচেতনতা শিবির পালন করা বেশ কঠিন। তাই সেইসব তারিখ পরিবর্তন করার কথা উল্লেখ করা হয়েছে ওই চিঠিতে। এই বিষয়ে মতামত মেলেনি দফতরের মন্ত্রী শশী পাঁজার পক্ষ থেকে।