মধুরেণ সমাপয়েৎ। বিধানসভার বাদল অধিবেশনের শেষ দিনে বেনজির সৌজন্যের সাক্ষী থাকল পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা। এদিন স্পিকারের বাতিল করে দেওয়া বিরোধী দলনেতার সংশোধনী গৃহীত হল মুখ্যমন্ত্রীর অনুরোধে। একযোগে পশ্চিমবঙ্গের উন্নয়ন অঙ্গিকারবদ্ধ হল শাসক ও বিরোধী।
আরও পড়ুন - অখিল যা বলেছেন তা শ্লীলতাহানির সামিল, FIR করুন, মহিলা রেঞ্জারকে পরামর্শ সুকান্তর
পড়তে থাকুন - BJPর বিরুদ্ধে বঙ্গভঙ্গের অভিযোগ তুলে উত্তরবঙ্গের মুখ বন্ধ করার চেষ্টা করছে TMC
সোমবার অধিবেশনের শেষ দিনে রাজ্য ভাগের বিরুদ্ধে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় প্রস্তাব পেশ করে শাসকপক্ষ। সেই প্রস্তাবের ওপর আলোচনার সময় সংশোধনী পেশ করেন শুভেন্দু অধিকারী। বলেন, এই প্রস্তাবে কিছু মানুষের ব্যক্তিগত মতকে বিজেপির অবস্থান বলে দাবি করা হয়েছে। যা রাজনৈতিক উদ্দেশপ্রণোদিত। এছাড়া কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদারের বক্তব্য বিকৃত করা হয়েছে প্রস্তাবে। বিজেপি রাজ্য ভাগের কঠোর বিরোধী। কারণ শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়, প্রমথরঞ্জন ঠাকুরদের উদ্যোগেই পশ্চিমবঙ্গ তৈরি হয়েছে।
এর পর শুভেন্দুবাবু প্রস্তাবে একটি লাইন অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানান। তিনি বলেন, ‘অখণ্ড অবিভক্ত পশ্চিমবঙ্গের উন্নয়নে আমরা সবাই অঙ্গীকারবদ্ধ’ এই লাইনটি প্রস্তাবে অন্তর্ভুক্ত করা হোক। কিন্তু স্পিকার শুভেন্দুবাবুকে বলেন, নিয়ম মেনে সংশোধনী না আনায় এখন এই বদল করা সম্ভব নয়।
এর পর বলতে ওঠেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, শুভেন্দু অধিকারীর পেশ করা সংযোজন অবশ্যই প্রস্তাবে অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে। মুখ্যমন্ত্রীর ভাষণ শেষ হতেই শুভেন্দুবাবুর কাছে আসেন পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। শুভেন্দুবাবুর সঙ্গে কথা বলে নতুন করে প্রস্তাবটি লেখেন তিনি। এর পর রাজনৈতিক অংশ বাদ দিয়ে শুভেন্দুবাবুর উল্লেখ করা পংতি যোগ করে প্রস্তাবটি পেশ করা হয়। সর্বসম্মতিতে গৃহীত হয় সেই প্রস্তাবে।
এখানেই শেষ নয়, এতদিন রাজ্য সংগীতে উঠে দাঁড়াতে অনিচ্ছা প্রকাশ করলেও সোমবার বিধানসভায় রাজ্য সংগীত ও জাতীয় সংগীতের সময় উঠে দাঁড়ান বিজেপি বিধায়করা। শাসক বিধায়কদের সঙ্গে গলা মেলান তাঁরা।
এই প্রথম বিধানসভায় শুভেন্দু অধিকারীর নাম উচ্চারণ করলেন মমতা। সঙ্গে তাঁর প্রস্তাব গ্রহণও করলেন তিনি। এদিন মমতা বলেন, আমাদের মধ্যে সৌজন্যের অভাব হবে কেন? রাজ্যের উন্নয়নে সবাইকে একযোগে ব্রতী হতে হবে।
আরও পড়ুন - নার্সিং প্রবেশিকা পরীক্ষায় ছাত্রীদের গোপনাঙ্গ থেকে উদ্ধার হল মোবাইল ফোন
বিধানসভা কক্ষ থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে শুভেন্দুবাবু বলেন, ‘বিজেপি প্রথম থেকেই রাজ্য ভাগের বিরোধী। আমরা আজ বিধানসভায় সেটা স্পষ্ট করে দিয়েছি। শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের পশ্চিমবঙ্গকে বিজেপি ভাগ হতে দেবে না। কিন্তু রাজ্য সরকারকেও রাজ্যের সমস্ত অংশের উন্নয়নে সমানভাবে জোর দিতে হবে।’