সম্প্রতি প্রশাসনিক সভয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের 'ধমক' শুনেছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। এহেন ব্রাত্যই এবার দল নিয়ে বিস্ফোরক দাবি করলেন। অকপটে মেনে নিলেন, দলে এখন দু'রকমের মত চলছে। উল্লেখ্য, ক'দিন আগেই 'শিল্পী বয়কট' নিয়ে নিজের মত প্রকাশ করেছিলেন কুণাল ঘোষ। তাঁর সাফ কথা ছিল, আরজি কর আন্দোলনের সময় যে শিল্পীরা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমালোচনা করেছিলেন, তাঁদের যেন বয়কট করা হয়। তবে সম্প্রতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আবার বলেন, এই ইস্যুকে কুণালের বক্তব্য দলের অবস্থান নয়। যদিও অভিষেকের এই দাবির পরপরই পালটা জবাব দিয়েছিলেন 'অভিষেক ঘনিষ্ঠ' কুণাল। জানিয়ে দেন, মমতা যদি বলেন, তাহলেই তিনি মানবেন যে 'ভুল' বলেছিলেন। এই সব বিতর্কের মাঝেই এবার দলের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি নিয়ে কিছুটা ধারণা দিলেন ব্রাত্য।
'শিল্পী বয়কট' ইস্যুতে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, 'দেখা যাচ্ছে যে দলে দু’রকম মত রয়েছে। আমাদের দল রেজিমেন্টেড নয়। অনেক খোলামেলা। তাই কেউ কারও কথা বলতেই পারেন।' এদিকে কুণালের 'শিল্পী বয়কটের' ডাককে 'খণ্ডন' করা অভিষেককে নিয়ে ব্রাত্যর বক্তব্য, 'দলে অভিষেকের স্থান আমার থেকে অনেক উঁচুতে। তাই অভিষেক ঠিক না কুণাল ঠিক, তা আমি বলতে পারব না। তবে দলের সদস্য হিসাবে বলতে পারি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতই আমার মত।' এরই সঙ্গে মমতার বিরোধিতা করা শিল্পীদের উদ্দেশে ব্রাত্য বলেন, 'আমার পরিচালিত দল মোদী সরকারের থেকে কোনও অনুদান নেয়নি। এখন যে শিল্পীরা এখানে সমালোচনা করেছিলেন, তাঁরাই ঠিক করুন যে রাজ্য সরকারের অনুগ্রহ নেবেন কি না। বিরোধিতাও করব, আবার অনুদানের জন্যে নাকে কাঁদব, দু'টো একসঙ্গে তো হতে পারে না।'
উল্লেখ্য, কুণালের পাশাপাশি ব্রাত্য বসুও 'অভিষেক ঘনিষ্ঠ' বলে পরিচিত দলের অন্দরে। লোকসভা ভোটের আগে ২০২৩ সালের একটা সময় যখন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় দলের সাংগঠনিক কার্যকলাপ থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছিলেন, তখন কুণালের পাশাপাশি অভিষেককে 'বোঝাতে' ময়দানে নেমেছিলেন ব্রাত্যও। সেই সময় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছিলেন, লোকসভা ভোটে তিনি শুধুমাত্র ডায়মন্ড হারবারেই সীমাবদ্ধ থাকবেন। বিমানে করে অভিষেকের সফরসঙ্গী হয়েছিলেন ব্রাত্য। তবে এহেন ব্রাত্য এখন 'কৌশলী'। দলে যে 'দু'টি মত' চলছে, তা অকপটে স্বীকার করছেন। সরাসরি অভিষেকের বক্তব্যকে সমর্থন করছেন না। বরং বুঝিয়ে দিয়েছেন, মমতার কথাই, তাঁর জন্যে 'শেষ কথা'।