জুনিয়র চিকিৎসকরা দাবি করেছিলেন সরাতে হবে বিনীত গোয়েলকে। এনিয়ে দিনের পর দিন ধরে আন্দোলন। অবশেষে সোমবার তাঁদের দাবি মেনে নিয়েছেন বাংলার মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। এবার কলকাতা পুলিশের কমিশনার পদে বসছেন মনোজ ভার্মা। পুলিশের অন্দরে বেশ রাফ অ্যান্ড টাফ অফিসার বলেই পরিচিত তিনি। মঙ্গলবার সিপির চেয়ারে বসেন মনোজ ভার্মা। দায়িত্ব বুঝিয়ে দেন বিনীত গোয়েল।
মনোজ ভার্মা। বেশ কড়া অফিসার হিসাবেই পরিচিত তিনি। নানা কঠিন পরিস্থিতি মোকাবিলার অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁর। সহজে হার মানেন না। সেই মনোজকেই এবার কলকাতা পুলিশের কমিশনার পদে বসালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। বাম জমানাতেও বিরোধীদের শায়েস্তা করতে তাঁর জুড়ি পাওয়া যেত না। সেই সময় তিনি বিরোধীদের চক্ষুশূল ছিলেন। এমনকী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেও কটাক্ষ করতেন মনোজ ভার্মাকে নিশানা করে। তবে ক্ষমতার বদলের সঙ্গে সঙ্গে বদলে গিয়েছে অনেক কিছুই।
বাম জমানার বিরোধী নেত্রী ছিলেন মমতা। এখন তিনিই শাসক। তিনিই মুখ্য়মন্ত্রী। আর একসময়ের মমতার অপছন্দের অফিসার মনোজ ভার্মাকে এবার কলকাতা পুলিশ কমিশনার পদে বসালেন মমতা।
এবিপি আনন্দের প্রতিবেদন অনুসারে জানা গিয়েছে, ৬ অক্টোবর ২০১০ সালে, ‘সিপিএমের বড় দালাল’ বলে মনোজ ভার্মাকে কটাক্ষ করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। আর সেই মনোজকেই বসালেন কলকাতা পুলিশ কমিশনারের চেয়ারে।
সোমবারই বিনীতকে সরানোর কথা ঘোষণা করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। সেই মতো তিনি পদক্ষেপ নেন। আর সোমবার রাতেই তিনি জানিয়ে দেন, বিনীত নিজেই কলকাতার পুলিশ কমিশনারের পদ থেকে সরতে চেয়েছিলেন। তাঁকে বরখাস্ত করা হল। '(জুনিয়র ডাক্তারদের) চার নম্বর দাবি ছিল যে সিপি বিনীত গোয়েলকে সরিয়ে দিতে হবে। বিনীত নাকি আগেই ওদের কাছে স্বীকার করেছিল যে আমি পদত্যাগ করতে চাই। কারণ আমার মনে হচ্ছে যে তোমরা যখন আমার উপরে আস্থা রাখতে পারছো না, (তাই আমি ইস্তফা দিতে চাই), তোমাদেরও যেমন পরিবার আছে, আমারও আছে। এটা ওরা আমায় মিটিংয়ে বলল।'
এবার মনোজ ভার্মা বসলেন কলকাতা পুলিশের কমিশনারের চেয়ারে। পশ্চিমবঙ্গে বামফ্রন্ট সরকারের শেষলগ্নে পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার ছিলেন মনোজ। তখন জঙ্গলমহলের মাওবাদীদের প্রবল দাপট ছিল। সেইসময় মাওবাদীদের দমন করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন মনোজ। ‘কাউন্টার ইনসার্জেন্সি ফোর্স’-রও দায়িত্ব পালন করেছিলেন। এমনকী এই মনোজকে নিশানা করে একটা সময় আক্রমণ শানিয়েছিলেন খোদ মমতা। তখন বাম জমানা। আর সেই মনোজকে কলকাতা পুলিশের কমিশনারের চেয়ারে বসাল রাজ্য সরকার।