সাংবাদিক বৈঠকেই পরিবহণ দফতরের কাজে উষ্মাপ্রকাশ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রীতিমতো ক্ষোভের সুরে মমতা জানান, ঢিমেগতিতে কাজ করেন পরিবহণ দফতরের আধিকারিকরা। আর এতটাই ‘আস্তে’ কাজ করেন যে ক্ষোভের সুরে পরিবহণ দফতরের কর্তাদের গাড়ি ছেড়ে 'সাইকেল' বা ‘১১ নম্বর গাড়ি’ ব্যবহার করার ‘পরামর্শ’ দেন মমতা। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ট্রান্সপোর্ট ডিপার্টমেন্টকে (পরিবহণ দফতর) বলব, অনেক রাস্তা আটকে আছে। স্বাভাবিকভাবেই ট্র্যাফিক জ্যাম (যানজট) হচ্ছে। আপনারা ট্রান্সপোর্ট ডিপার্টমেন্ট (পরিবহণ দফতর) খুব আস্তে চলেন। আপনাদের উচিত গাড়ি ছেড়ে দিয়ে সাইকেলে চলা বা ১১ নম্বর গাড়ি ইউজ করা। মানে পা। ট্রান্সপোর্ট ডিপার্টমেন্টকে (পরিবহণ দফতর) যে সিরিয়াসলি ট্যাকল করা উচিত, সেটা হচ্ছে না।’ সেইসঙ্গে ট্রামলাইন নিয়েও উষ্মাপ্রকাশ করেন মমতা। তিনি জানান যে ট্রাম হেরিটেজ। এসপ্ল্যানেডে ট্রাম চালানোও হচ্ছে। কিন্তু অনেক ট্রামলাইন পড়ে আছে, যেখানে ট্রাম চলে না। কিন্তু ট্রামলাইনের কারণে দুর্ঘটনা ঘটছে।
ট্রামলাইন নিয়েও মুখ খোলেন মুখ্যমন্ত্রী
তারইমধ্যে ট্রামলাইন নিয়েও পরিবহণ কর্তাদের উপরে উষ্মাপ্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। ট্রামলাইনের কারণে বাইকের টাকা পিছলে যাচ্ছে। আর তার জেরে তিনি বলেন, 'আমার ওখানে একটা ট্রামলাইন আছে। ট্রাম চলে না দীর্ঘদিন। ট্রামলাইন হেরিটেজ, ঠিক আছে। আমরা তো এসপ্ল্যানেডেরটা রেখে দিয়েছি। হাত দিইনি। কিন্তু মোমিনপুরের মোড় থেকে হাজরা মোড় পর্যন্ত একটা লাইন পড়ে আছে। ট্রাম তো চলে না। কিন্তু প্রায় সাত-আটজন মারা গিয়েছেন।'
‘মানুষ মারার জন্য আমায় কোর্টের রায় দেখাচ্ছো’
তিনি আরও বলেন, 'প্রতি বছর দু'তিনজন মারা যাচ্ছেন। এক-এক বছর চার-পাঁচজনও মারা গিয়েছেন। স্কুটার যাচ্ছে। ট্রামলাইনে স্কিড করে যাচ্ছে। পিছন থেকে গাড়ি এসে মেরে দিচ্ছে। আমি বলব যে অবিলম্বে (এই ব্যাপারটা সমাধান) করতে হবে। ট্রাম যখন চলেই না, (সেই পরিস্থিতিতে) পরিবহণ দফতর নিজের দায়িত্ব পালন করেননি। মানুষ মারার জন্য আমায় কোর্টের রায় দেখাচ্ছো? তোমরা কি ঠিকমতো ফাইটটা করেছো? নাকি ছেড়ে দিয়েছো?'
ট্রামলাইন তুলে দেওয়ার ইঙ্গিত মমতার?
চূড়ান্ত উষ্মাপ্রকাশ করে মমতা বলেন, 'আরে পরশুদিনও দু'জন মরতে মরতে বেঁচে গিয়েছে। রেগুলার ওই মোড়টায় হয়। আমার চোখের সামনে আমি দেখতে পাচ্ছি। স্কিড করে যাচ্ছে। আর পিছন থেকে গাড়ি এসে মেরে দিচ্ছে। আমার চোখে পড়েছে বলেই তো বলছি। এরকম নিশ্চয়ই অনেক জায়গায় আছে। কেন হবে এটা? মানুষের জীবনের দাম সবথেকে বেশি নাকি আমাদের ইগোর দামটা বেশি? কোনটা? আমি তো মনে করি যে মানুষের জীবনের দামের থেকে গুরুত্বপূর্ণ কিছু হয় না।'