আরজি করে তরুণী চিকিৎসককে যৌন হেনস্থা করে খুনের ঘটনায় এই মুহূর্তে উত্তাল গোটা রাজ্য। অভিযুক্তের কড়া শাস্তি এবং নিরাপত্তার দাবিতে এখনও কর্মবিরতি চালিয়ে যাচ্ছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। সেই আবহে নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করে অপরাধীর কঠোর শাস্তির আশ্বাস দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এনিয়ে মুখ্যমন্ত্রী আগেই নির্যাতিতার বাবা মায়ের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন। সোমবার নির্যাতিতার বাড়িতে যান তিনি। মুখ্যমন্ত্রীকে কাছে পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন নির্যাতিতরা মা। তিনি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে এই নৃশংস কাজের সঙ্গে জড়িতদের কঠোর শাস্তির আর্জি জানান। মুখ্যমন্ত্রীও এবিষয়ে নির্যাতিতার বাবা-মাকে আশ্বস্ত করেন।
আরও পড়ুন: আরজি কর কাণ্ডে মমতা ডেডলাইন বেঁধে দিতেই 'নিজেদের মান' বাঁচাতে ঝাঁপ পুলিশের!
সোমবার বেলা কোন ১ টা নাগাদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল, বারাকপুরের পুলিশ কমিশনার অলোক রাজোরিয়া এবং পানিহাটির তৃণমূল বিধায়ক নির্মল ঘোষকে সঙ্গে নিয়ে নির্যাতিতার সোদপুরের বাড়িতে যান। এরপর মুখ্যমন্ত্রীকে দেখতে পেয়ে কাঁদতে কাঁদতে ছড়িয়ে ধরেন তরুণী চিকিৎসকের মা। তিনি জানান, মুখ্যমন্ত্রীর উপর তাঁর ভরসা রয়েছে। তখন বাড়িতে উপস্থিত অনেকের চোখে দিয়ে জল গড়িয়ে আসে। মুখ্যমন্ত্রী নিজেও শোকাক্রান্ত হয়ে পড়েন।
এদিকে, মুখ্যমন্ত্রী আসাকে কেন্দ্র করে ওই তিনতলা বাড়ির সামনে সংবাদ মাধ্যম এবং সাধারণ মানুষের ভিড় দেখা যায়। নির্যাতিতরা মা মুখ্যমন্ত্রীর উপর তাঁদের ভরসার কথা জানান। এরপর মুখ্যমন্ত্রী জানান, রবিবার আসার পরিকল্পনা থাকলেও শ্রাদ্ধের কারণে তা সম্ভব হয়নি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, নির্যাতিতার শিক্ষাগত ব্যাকগ্রাউন্ড ও চিকিৎসা শিক্ষার বিস্তারিত তথ্য জানার পাশাপাশি বাবা-মায়ের অভিযোগ জানতে চান। বিশেষ করে আরজি করে কারও প্রতি তাঁদের সন্দেহ বা অভিযোগ রয়েছে কিনা, তা সে বিষয়ে জানতে চান। একইসঙ্গে কলকাতা পুলিশ কমিশনার এবং পানিহাটির বিধায়ককে ডেকে তদন্তের অগ্রগতি ও পুলিশের পরিকল্পনা সম্পর্কে নির্যাতিতার পরিবারকে জানান মুখ্যমন্ত্রী।
নির্যাতিতার পরিবার জানায়, শুক্রবার সকালে আরজি কর হাসপাতালের অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপারের ফোনে তাঁদের মেয়ের আত্মহত্যার কথা জানতে পারেন। তবে এই কথায় তাদের সন্দেহ হয়েছিল। পরে তাঁরা হাসপাতালে যান। কিন্তু, সেখানে তাঁদের ২ ঘণ্টা বসিয়ে রাখা হয়। এই বিষয়টি তাঁরা মুখ্যমন্ত্রীকে জানান। তাঁরা আরও জানান, হাসপাতালের কিছু সিনিয়র ডাক্তার তাঁদের মেয়ের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করতেন। মুখ্যমন্ত্রী এসব অভিযোগ সিপি বিনীত গোয়েলকে খতিয়ে দেখতে বলেন। মুখ্যমন্ত্রী প্রায় ৪৫ বাড়িতে থাকার পর বেরিয়ে যান।