তৃণমূল ছাত্র পরিষদের ২৪ তম প্রতিষ্ঠা দিবসে ধর্মতলার মেয়ো রোড থেকে বিজেপি এবং কেন্দ্রীয় সরকারকে তুলোধনা করলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজের আয়ের উৎস নিয়ে স্পষ্ট তথ্য তুলে ধরেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিবারের সম্পত্তি বৃদ্ধি নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা ইস্যুতে মুখ খুললেন তৃণমূল সুপ্রিমো। সিবিআই–ইডির হাতে ধৃত দলীয় নেতাদের নিয়ে সরব হলেন তিনি।
ঠিক কী বলেছেন তৃণমূলনেত্রী? এদিন মেয়ো রোডের সভা থেকে সরাসরি তিনি বলেন, ‘আমি ১ লক্ষ টাকা করে পেনশন ১২ বছর ধরে নিই না। কত টাকা হয়? হিসেব করুক ছাত্র–যুবরা। বই কেন বিক্রি করি, তা নিয়ে প্রশ্ন। বুকফেয়ারে খোঁজ নিয়ে দেখুন, কোন বই বেস্টসেলার। লিখে দেখান না একহাজার কবিতা। ওগুলো কি আমার সম্পত্তি? আমরা সবাই আলাদা আলাদা পরিবার। মায়ের দায়িত্ব ছিল আমার। সকলের পরবর্তী প্রজন্ম হয়েছে, তারা উপার্জন করেছে। আমার তো সব ডকুমেন্ট দেওয়াই আছে। আমি বলি, এই মামলা ইন্টারন্যাশনাল আদালতে হোক।’
আজ, সোমবার সরাসরি বিরোধীদের একসারিতে বসিয়ে তুলোধনা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি সুর সপ্তমে চড়িয়ে বলেন, ‘যারা খালি নেই নেই বলছে। অপপ্রচার করে বেড়াচ্ছে শিক্ষা নিয়ে। আদালতে বিচারাধীন মামলা নিয়ে আমি কোনও কথা বলব না। আমাদের আমলে কত ছেলেমেয়েরা শিক্ষকের চাকরি পেয়েছে আর সিপিআইএমের আমলে কী হয়েছে? পয়সা নিয়েছো আর চাকরি দিয়েছো। ওই গদ্দার অধিকারীরাই আমায় বলত। ওরাই সিস্টেমটা জানে। পার্টির নামে বদনাম করা হচ্ছে। এখনও বিচার হয়নি। মিডিয়া ট্রায়াল চলছে। একটু সময় দিতে হবে। স্কুল এবং কলেজ নিয়ে মাত্র ১০ বছরে আমরা এক লাখ ৬৩ হাজার ৯৬৩ চাকরি দিয়েছি। আকাশবাবু, প্রকাশবাবু, বিকাশবাবুদের কাছে অভিযোগ গিয়েছে মাত্র ২০০–২৫০টা।’
তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সামনে পুরো পর্দাফাঁস করে দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ইডি–সিবিআই থেকে শুরু করে বিজেপি তথা কেন্দ্রীয় সরকারকে নিশানা করেন তিনি। আর বলেন, ‘ইডি–সিবিআই দিয়ে বাড়ি বাড়ি থেকে টাকা লুট করা হচ্ছে। তৃণমূল কংগ্রেসের নামে বদনাম করা হচ্ছে। পার্থও চোর, কেষ্টও চোর, ববিও চোর, অভিষেকও চোর, মমতাও চোর। সাধু কে? বিজেপির সবাই সাধু? আমাকে জিজ্ঞাসা করা হচ্ছে, আমার কত সম্পত্তি? প্রজাদারি জমিতে থাকি আমরা। ৭০ বছর ধরে বাবা থাকতেন। আমি আর আমার মা থাকতাম। বাকি ভাই–বোনেরা সব নিজেদের আলাদা সংসার আলাদা বাড়ি। ১৯৯১ সালের পর থেকে কোনওদিন এক্সিকিউটিভ ক্লাসে চড়িনি। ১২ বছর ধরে কোনও টাকা নিইনি। বড় বড় কথা বলা হচ্ছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কিছু বলে না তাই? আমি রাজনীতিতে এসেছিলাম সমাজসেবা করব বলে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গায়ে কালি লাগানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।’