বাংলাদেশে বিশেষ সামরিক বাহিনী মোতায়েনের পক্ষে সওয়াল করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার বিধানসভা অধিবেশনের সময় পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী জানান, বাংলাদেশে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তা যেন রাষ্ট্রসংঘে উত্থাপন করে কেন্দ্রীয় সরকার। পড়শি দেশে রাষ্ট্রসংঘের বিশেষ শান্তিরক্ষা বাহিনী পাঠানোর প্রস্তাব পেশ করার আর্জিও জানান মুখ্যমন্ত্রী। যে বাহিনী কোনও দেশকে সংঘাতের রাস্তা থেকে শান্তির পথে ফিরিয়ে আনার কাজ করে। আর সেই বাহিনী পাঠানোর অর্থ হল যে বাংলাদেশে সংঘাতের পরিবেশ তৈরি হয়েছে, যা সামলানোর ক্ষমতা নেই মহম্মদ ইউনুসের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের। ফলে রাষ্ট্রসংঘের বিশেষ শান্তিরক্ষা বাহিনী পাঠানোর অর্থ হল বাংলাদেশের সুরক্ষা বাহিনীর উপরে অনাস্থাপ্রকাশ করা।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর মতে, এই মুহূর্তে বাংলাদেশে রাষ্ট্রসংঘের বিশেষ শান্তিরক্ষা বাহিনী মোতায়েন করা দরকার। সেইসঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, বাংলাদেশে যে ভারতীয়রা আক্রান্ত হচ্ছেন, তাঁদের এই রাজ্যে ঠাঁই দিতে তৈরি আছেন। তাঁদের খাদ্যের কোনও অসুবিধা হবে না বলেও আশ্বাস দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
কেন্দ্রের পরামর্শ মেনেই চলবে রাজ্য, জানালেন মমতা
তবে বাংলাদেশের ঘটনা নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের ভূমিকায় পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী উষ্মাপ্রকাশ করেছেন। ক্ষোভের সুরে তিনি জানিয়েছেন, ১০ দিন হয়ে গেল। কিন্তু পুরো বিষয়টি নিয়ে চুপ করে আছে কেন্দ্রীয় সরকার। অথচ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর দল প্রতিদিন মিছিল করছে। মিছিল করার অধিকার আছে। সীমান্ত আটকে দেওয়ারও হুঁশিয়ারি দিয়েছে। কিন্তু এটা মাথায় রাখতে হবে যে সীমান্তের বিষয়টা কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে আছে। আর রাজ্য সরকার কেন্দ্রের পরামর্শ মেনেই চলবে।
মোদী বা জয়শংকরের বিবৃতি দেওয়া উচিত, দাবি মমতার
সেইসঙ্গে বাংলাদেশ নিয়ে সংসদে প্রধানমন্ত্রীকে বিবৃতি দেওয়ার দাবি তুলেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর বক্তব্য, এখন এমনিতেই সংসদে অধিবেশন চলছে। তাই বাংলাদেশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বিবৃতি দেওয়া উচিত। কূটনৈতিক বা অন্য কোনও কারণে যদি তিনি বিবৃতি না দেন, তাহলে বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে সংসদে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকরের মুখ খোলা উচিত বলে জানান পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী।
মোদী বা জয়শংকর সরাসরি কিছু না বললেও বাংলাদেশে হিন্দুদের উপরে অত্যাচার এবং হিন্দু সন্ন্যাসী তথা বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণদাসের গ্রেফতারির ঘটনায় কড়া ভাষায় প্রতিক্রিয়া দিয়েছে নয়াদিল্লি। বাংলাদেশে হিন্দু-সহ সংখ্যালঘুদের উপরে যেরকম হামলার ঘটনা ঘটছে, তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে।