ওড়িশার রেল দুর্ঘটনাকে ধামাচাপা দিতেই পশ্চিমবঙ্গে পুর নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অভিযান চালাচ্ছে সিবিআই। এমনই দাবি করলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর দাবি, ওড়িশার ভয়াবহ দুর্ঘটনার তদন্ত না করে পশ্চিমবঙ্গের একাধিক পুরসভায় অভিযান চালাচ্ছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। মমতা বলেন, ‘পুলওয়ামা দেখেননি? তৎকালীন রাজ্যপাল বলে কী বলে দিয়েছেন? আজকেও ব্যাপারটা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য দুর্ঘটনার তদন্ত হল না। সব সাফ হয়ে গেল।’ সঙ্গে তিনি বলেন, ‘আত্মার আত্মীয়রা উত্তর দেবে।’
ওড়িশার ট্রেন দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের আর্থিক সহায়তা প্রদানের মঞ্চ থেকে মমতা দাবি করেন, ওড়িশার রেল দুর্ঘটনার বিষয়টি ধামাচাপা দিতে চাইছে কেন্দ্রীয় সরকার। তিনি বলেন, ‘আমি ভেবেছিলাম যে বলব না। বাধ্য করেছে পরিস্থিতি আমায়। এত বড় একটা দুর্ঘটনা, সেটাকে কীভাবে ধামাচাপা দেওয়া যায়, সেটার প্রচেষ্টা চলছে। যে পরিজনরা সব হারিয়েছেন, তাঁরা এদের কাছে কৈফিয়ৎ চান। সত্য তথ্য বেরোক। কেন দুর্ঘটনা হল? কেন এতজন মারা গেলেন? বিংশ শতাব্দীর (একবিংশ শতাব্দী) সবথেকে বড় দুর্ঘটনা।’
আরও পড়ুন: Balasore rail accident: মৃতদের পরিবারকে ২০০০ টাকার নোট দিল TMC, ‘কালো টাকা সাদা করার’ অভিযোগ BJP–র
মমতা আরও বলেন, ‘সিবিআই কী করবে? ক্রিমিনাল কেস হলে তো সিবিআই করবে। পুলওয়ামা দেখেননি? তৎকালীন রাজ্যপাল বলে কী বলে দিয়েছেন? আজকেও ব্যাপারটা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য দুর্ঘটনার তদন্ত হল না। সব সাফ হয়ে গেল। কোনও তথ্যপ্রমাণ নেই। আমি চাই যে সত্যিটা সামনে আসুক। রেল দুর্ঘটনার তদন্ত না করে সকাল থেকে সিবিআইকে (পশ্চিমবঙ্গে) পাঠিয়ে দিয়েছে দিল্লি। কলকাতার ১৪ থেকে ১৬ টা পুরসভায় ঢুকে গিয়েছে (সিবিআই)। নগরোন্নয়ন দফতরে ঢুকে গিয়েছে সিবিআই। এবার কি বাথরুমেও ঢুকবে?’
উল্লেখ্য, পুরনিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে বুধবার সল্টলেকে রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরে অভিযান চালায় সিবিআই। তারপর রাজ্যের একাধিক পুরসভায় অভিযান চালানো হয়। যে তালিকায় আছে কাঁচরাপাড়া, কামারহাটি, নিউ ব্যারাকপুর, দক্ষিণ দমদম, টিটাগড়ের মতো পুরসভা। যে পুরনিয়োগ মামলায় গত মার্চে অয়ন শীলকে গ্রেফতার করেছিল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। কেন্দ্রীয় সংস্থার দাবি, পুরসভার বিভিন্ন পদের চাকরি বিক্রির জন্য 'চার্টরেট' তৈরি ছিল অয়নের। সেই দর অনুযায়ী বিক্রি হত চাকরি। সেই মামলার প্রেক্ষিতেই আজ নথি ঘেঁটে দেখতে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালায় সিবিআই।
ওড়িশার ট্রেন দুর্ঘটনা
সন্ধ্য়ায় বাহানগা বাজার রেল স্টেশনের কাছে আকরিক লোহা বোঝাই মালগাড়িকে ধাক্কা মেরেছিল আপ শালিমার-চেন্নাই সেন্ট্রাল করমণ্ডল এক্সপ্রেস। যে ট্রেন ঘণ্টায় প্রায় ১৩০ কিলোমিটার বেগে ছুটে যাচ্ছিল। মালগাড়ি আকরিক লোহা এবং করমণ্ডলের প্রবল গতির জেরে দুর্ঘটনার অভিঘাত ভয়াবহ হয়। লাইনচ্যুত হয়ে যায় চেন্নাইগামী করমণ্ডলের এক্সপ্রেসের ২১ টি কোচ। কয়েকটি ছিটকে গিয়ে অন্য লাইনে পড়ে।
ওই লাইনে ততক্ষণে চলে আসে ডাউন SMVT বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস। করমণ্ডল এক্সপ্রেসের কোচে ধাক্কা মারে সেই ট্রেন। কয়েকটি কোচ লাইনচ্যুত হয়ে যায়। তার জেরে ভয়াবহ পরিস্থিতি হয়। দুমড়ে-মুচড়ে যায় একাধিক কোচ। দুর্ঘটনার অভিঘাত এতটাই বেশি ছিল যে প্রায় ৩০০ জন মানুষের মৃত্যু হয়। আহত হয়েছেন ১,১০০-র বেশি মানুষ।
(এই খবরটি আপনি পড়তে পারেন HT App থেকেও। এবার HT App বাংলায়। HT App ডাউনলোড করার লিঙ্ক https://htipad.onelink.me/277p/p7me4aup)