আরজি করের নির্যাতিতা পরিবারের দয়ায় মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সিতে বসে নেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনই মন্তব্য করলেন পশ্চিমবঙ্গের মন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার প্রেক্ষিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতার ইস্তফার দাবি তোলেন নির্যাতিতার বাবা। পালটা ফিরহাদ দাবি করেছেন, অন্য কারও পাল্লায় পড়েছেন চিকিৎসকের বাবা। তাঁকে দিয়ে রাজনীতি করানো হচ্ছে। আর তাঁকে দিয়ে যা বলানো হবে, সেটাই যদি বলে দেন, তাহলে আরজি করের নির্যাতিতা পরিবারের উপর থেকে সাধারণ মানুষের সহানুভূতি উঠে যাবে বলে ‘সতর্ক’ করে দেন ফিরহাদ।
এক্তিয়ারের মধ্যে পড়ে না, এমন কিছু বলবেন না, হুংকার ফিরহাদের
রাজ্যের মন্ত্রীর কথায়, 'অত্যন্ত সহানুভূতি আছে ওঁনার (আরজি করের নির্যাতিতা চিকিৎসকের বাবা) প্রতি। কিন্তু তা বলে পুত্রীশোকে এমন কিছু বলা উচিত নয়, যেটা ওঁনার এক্তিয়ারের মধ্যে পড়ে না। উনি এখন হয়ে গিয়েছেন, যাঁদের পাল্লায় পড়েছেন, ওঁনারা পলিটিক্স করছেন তাঁকে নিয়ে। এটা ঠিক নয়। মুখ্যমন্ত্রী ওঁনার দয়ায় (ক্ষমতায় নেই) বা যে বামপন্থী দলগুলি আছে, মুখ্যমন্ত্রী ওই পদে বসে নেই। মুখ্যমন্ত্রী বসে আছেন (নিজের ক্ষমতায়)।'
কারও দয়ায় মমতা মুখ্যমন্ত্রী হননি, বার্তা ফিরহাদের
মমতার হয়ে সওয়াল করে ফিরহাদ বলেন, ‘(মমতা) ওই চেয়ারে (মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে) বসে আছেন, কারণ বাংলার মানুষ চেয়েছেন। কারও দয়ায় (মুখ্যমন্ত্রী চেয়ারে) বসে নেই। বাংলার মানুষের সমর্থন নিয়ে (ওই চেয়ারে) বসে আছেন। আপনি ওঁনাকে (আরজি করের নির্যাতিতা চিকিৎসকের বাবা) আবার বলব যে আপনি আপনার এক্তিয়ারের মধ্যে থাকুন।’
মানুষের সহানুভূতি নষ্ট হয়ে যাবে, তোপ ফিরহাদের
সেইসঙ্গে ফিরহাদ সতর্কবাণী দেন, ‘নিশ্চিতভাবে (মেয়ের জন্য) ন্যায়বিচার চান। সিবিআই যেভাবে (তদন্ত) করেছে, তাতে আমিও অত্যন্ত দুঃখিত। কিন্তু তার মানে এই নয় যে আপনাকে দিয়ে যা বলাবেন, সেটাই বলবেন। এটার (ফলে) আপনার (আরজি করের নির্যাতিতা চিকিৎসকের বাবা এবং তাঁর পরিবার) উপরে মানুষের যে সহানুভূতি আছে, সেটা নষ্ট হয়ে যাবে।’
তবে ফিরহাদ একা নন, আরজি করের নির্যাতিতা চিকিৎসকের বাবাকে আক্রমণ শানিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেস নেতা কুণাল ঘোষও। আসলে দিনকয়েক ধরে নির্যাতিতার বাবা মমতার পদত্যাগের দাবি তুলছেন। আর শনিবার তিনি জানান, মুখ্যমন্ত্রী পদে থাকার যোগ্যতা নেই মমতার। তাঁর মেয়ে একজন রাজ্য সরকারি কর্মচারী এবং একজন ছাত্রী ছিলেন। মেয়ের মৃত্যুর জন্য সম্পূর্ণভাবে মুখ্যমন্ত্রীই দায়ি। মেয়ের মৃত্যুর দায় সম্পূর্ণভাবে নিতে হবে মমতাকেই। আর মেয়ের ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় যে ন্যায়বিচার মিলছে না, সেটার জন্য মুখ্যমন্ত্রী পুরোপুরি দায়ি।