একুশে জুলাইয়ের মঞ্চে একটি চিরকূট পেয়ে উষ্মাপ্রকাশ করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রবিবার বৃষ্টিস্নাত ধর্মতলায় তাঁর ভাষণের মধ্যেই দোলা সেনের সঙ্গে কথা বলে মমতার সামনে একটি চিরকূট রেখে যান মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। নিজের ভাষণের মধ্যেই চোখ বোলাতে থাকেন মমতা। তারপর মাথা ঘুরিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি এটা নিজে পড়েছি। এটা ঠিক আছে। কোনটার কথা বলছো? কোনটার কথা বলছো? সাম্যের গান গাই। ইকবালই তো বলেছে।’ মমতার প্রশ্নের প্রেক্ষিতে কেউ কিছু একটা বলতে থাকেন। তারপর মমতা বলেন, ‘ওটা নজরুলের (লেখা) নয়। ওটা (ইকবালেরই) লেখা। এগুলো আমায় নতুন করে শেখাবে না। এসব গান আমার মুখস্থ।’
কী নিয়ে সেরকম কথা বলেন মমতা?
মমতা ঠিক কী বিষয় নিয়ে সেই কথাটা বলেছেন, তা অবশ্য স্পষ্ট নয়। কিছুক্ষণ আগে 'সারে জাহাঁ সে আচ্ছা হিন্দুস্তান হামারা'-র লেখক নিয়ে তিনি যে মন্তব্য করেছিলেন, সেটার প্রেক্ষিতেই সম্ভবত এই কথাটা বলেন তৃণমূল সুপ্রিমো। সেইসময় তিনি বলেছিলেন, ‘নজরুল ইসলাম লিখেছিলেন, সারে জাহাঁ সে আচ্ছা হিন্দুস্তান হামারা।’ যা নিয়ে মমতাকে খোঁচা দেন বিজেপি নেত্রী কেয়া ঘোষ।
যদিও পরবর্তীতে মমতা যে মন্তব্য করেছেন, তা থেকে মনে হচ্ছে যে দীর্ঘ ভাষণের মধ্যে মুখ ফসকে বলে ফেলেছিলেন যে ‘নজরুল ইসলাম লিখেছিলেন, সারে জাহাঁ সে আচ্ছা হিন্দুস্তান হামারা।’ যে বিষয়টা একেবারেই অভাবনীয় কিছু নয়। দীর্ঘ ভাষণের মধ্যে সেটা হতেই পারে বলে সংশ্লিষ্ট মহলের মত।
একুশে জুলাইয়ের সভা নিয়ে মমতা
পরবর্তীতে একুশে জুলাইয়ের সমাবেশ নিয়ে মমতা বলেন, 'একুশে জুলাই বাংলার ইতিহাসে রক্ত ঝরা একদিন। আজকের দিনে আমার দলের অক্লান্ত এবং সংঘবদ্ধ সৈনিকেরা যেভাবে তিলোত্তমার রাজপথ সবুজের রঙে রাঙিয়ে তুললেন প্রতিবারের মতো, তা অভাবনীয়, অকল্পনীয়। এই স্বতঃস্ফূর্ত জন-আবেগ কেবলমাত্র ভালোবাসার বদলেই পাওয়া যায়।
‘মানুষের সেবায় মগ্ন হতে হবে আমাদের সকলকে’
তিনি আরও বলেন, ‘আজ আমি ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে এবং চারটি বিধানসভা উপনির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের উপর পুনরায় ভরসা রাখার জন্য বাংলার আপামর জনতাকে আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি। এই জয় মা-মাটি-মানুষের জয়। মানুষের এই আশীর্বাদকে পাথেয় করে বিনয়ী হয়ে মানুষের সেবায় মগ্ন হতে হবে আমাদের সকলকে।’
‘এই দলে বিত্তবানের জায়গা নেই, আছে বিবেকবানের জন্য স্থান’
সঙ্গে তিনি বলেন, 'যেখানে আমরা জিতেছি এবং যেখানে কাঙ্ক্ষিত জয় আসেনি, সর্বত্রই আমাদের মাথানত করে মানুষের পাশে থাকতে হবে। কারণ তৃণমূল কংগ্রেস মানুষের সামাজিক বন্ধু, মানুষের পাহারাদার। এই দলে বিত্তবানের জায়গা নেই, আছে বিবেকবানের জন্য স্থান। সর্বোপরি, আমাদের দলে অন্যায়, দুর্নীতির কোনও স্থান নেই।'