গড়িয়া শ্মশানকাণ্ড নিয়ে ফের একবার রাজ্য সরকারকে বিঁধলেন পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। শনিবার তিনি একগুচ্ছ টুইটে রাজ্য সরকারের ভূমিকার সমালোচনা করেছেন তিনি। সঙ্গে কলকাতার মুখ্য প্রশাসক ফিরহাদ হাকিম তাঁর সঙ্গে দেখা না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তিনি। এদিন রাজ্যপাল লিখেছেন, ‘ওই ঘটনার জন্য অবিলম্বে ক্ষমা চাওয়া উচিত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের।’
গড়িয়া শ্মশানের মৃতদেহ নিয়ে রাজ্যের স্বারষ্ট্রসচিবের কাছে তথ্য তলব করেছিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। শনিবার তাঁকে রাজভবনে গিয়ে তথ্য দেন কলকাতা পুরসভার কমিশনার বিনোদ কুমার। তার পর টুইটে রাজ্যপাল লেখেন, ‘কলকাতা পুরসভার কমিশনার বিনোদ কুমার আমাকে ১৪টি মৃতদেহ সৎকারের নিদারুণ কাহিনী শুনিয়েছেন। হাসপাতালে ভর্তি থেকে সৎকার পর্যন্ত তাদের সঙ্গে কী কী ঘটেছে সেব্যাপারে আমাকে অবগত করেছেন তিনি। সঙ্গে এই ঘটনায় গাফিলতি হয়েছে বলে স্বীকার করেছেন তিনি।‘
এর পরই মুখ্যমন্ত্রীকে আক্রমণ করে রাজ্যপাল লিখেছেন, ‘মৃতদেহ সৎকারের ওই বর্বর ও নৃশংস পদ্ধতি দেখে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমালোচনায় মুখর হয়েছেন সবাই। দেহগুলিতে হুক বাঁধিয়ে যে ভাবে বারবার টানাটানি করা হয়েছে তাতে আমাদের প্রাচীন সংস্কার ভূলুণ্ঠিত হয়েছে। এজন্য সমাজের কাছে তাঁর ক্ষমা চাওয়া উচিত।’
এই ঘটনায় ফিরহাদ হাকিমের ভূমিকারও সমালোচনা করেছেন তিনি। রাজ্যপাল লিখেছেন, ‘কলকাতা পুরসভার প্রশাসকের অবস্থান আমার কাছে অকল্পনীয়। তাঁর দায়িত্বের ব্যাপারে তিনি সতর্ক নন। পুর কমিশনারের মাধ্যমে তাঁকে অবিলম্বে দেখা করতে বলেছি। উনি এলে আমফানের জেরে কলকাতাবাসীকে যে অসহনীয় যন্ত্রণা পোহাতে হয়েছে তা নিয়েও আলোচনা করব।’
বলে রাখি, গত বুধবার গড়িয়া শ্মশানে ১৪টি বেওয়ারিশ লাশ কলকাতা পুরসভার কর্মীরা দাহ করতে গেলে স্থানীয়রা বাধা দেন। তাদের দাবি, ওই লাশ করোনায় মৃতদের। যদিও সরকারের তরফে স্পষ্ট জানানো হয়, NRS মেডিক্যাল কলেজের মর্গে থাকা বেওয়ারিশ লাশ সেগুলি।
স্থানীয়দের বিক্ষোভে লাশগুলি আবার গাড়িতে ভরে নিয়ে চলে যান পুর কর্মীরা। তখনকার এক ভিডিয়োয় দেখা যায় একটি দেহের চোয়ালে হুক আটকে উলটো করে টানতে টানতে নিয়ে যাচ্ছে এক পুরকর্মী। এই ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়লে চাঞ্চল্য ছড়ায়।