প্রতিবারের মতো বিশাল জনসভা নয়, এবার ভার্চুয়াল ভাবেই শহিদ দিবস পালন করবে তৃণমূল কংগ্রেস। পরের বছর বিধানসভা ভোট। তাই এই দিনটা তৃণমূলকে খালি ছেড়ে দিচ্ছে না বিজেপি। তারা পালন করবে প্রহসন দিবস বলে জানিয়েছেন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ।
এবছর ব্লক স্তরে জমায়েত করতে বলেছেন তৃণমূলনেত্রী। নিজের অফিসে বসে বক্তব্য রাখবেন মমতা। সারা রাজ্যে অসংখ্য স্ক্রিন ফিট করা হয়েছে তৃণমূলের তরফ থেকে দলনেত্রীর বক্তব্য শোনার জন্য। প্রতিবছর এই দিন খুব বড় অনুষ্ঠানে ১৩ জন যুব কংগ্রেস কর্মীর মৃত্যুর কথা স্মরণ করা হয় যারা ১৯৯৩ সালে পুলিশের গুলিতে মারা গিয়েছিলেন। তখন কংগ্রেসে ছিলেন মমতা। সময় বদলেছে, নিজের দল করেছেন তিনি। কিন্তু ২১ জুলাইটি কার্যত হয়ে উঠেছে তাঁর ট্রেডমার্ক ইভেন্ট। এরপর রাজনীতির পটচিত্রে পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে সিঙ্গুর , নন্দীগ্রাম ইত্যাদি জায়গায় যারা মারা গিয়েছেন, তাদের পরিবারও এসেছেন শহিদ দিবসের অনুষ্ঠানে।
সেই রাজনৈতিক হত্যার অস্ত্রেই যদিও তৃণমূলকে বিঁধতে চাইছে বিজেপি। গেরুয়া দলের ৯৩ জন ২০১৩ সাল থেকে রাজনৈতিক সংঘর্ষে মারা গিয়েছে বলে এদিন বিজেপি একটি তালিকা প্রকাশ করেছে। এদিনটিকে তারা প্রহসন দিবস বলে পালন করবে।
দিলীপ ঘোষ বলেন যে বিরোধী নেত্রী হিসাবে মমতা সংগ্রামের কথা বলতেন। এখন তিনিই জনতার কণ্ঠরোধ করছেন, বলে তিনি অভিযোগ করেন। কীভাবে বিজেপি কর্মীরা মারা গিয়েছেন, বুকলেটে সেটি বিস্তারিত লেখা আছে।
বিজেপির এই সিদ্ধান্তের নিন্দা করেছেন তৃণমূল নেতা তথা রাজ্যের মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। যে সব দলের নেতারা কোনও সংগ্রাম করেনি, তারাই এরকম কথা বলতে পারেন, বলে অভিযোগ করেন শোভনবাবু। তিনি বলেন যে শহিদদের জন্য সারা জীবন কাজ করেছেন মমতা।
দিলীপ ঘেোষ অবশ্য বলেন যে তিনি শহিদদের অপমান করছেন না। শুধু মনে করেন শহিদ দিবস পালন করার নৈতিক অধিকার হারিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন চোপড়ায় তরুণীর মৃত্যু ও হেমতাবাদের বিজেপি বিধায়কের মৃত্যু নিয়েও প্রশ্ন করেন তিনি। আইন শৃঙ্খলা থেকে আমফান, সিইএসসি-র বিল, সবেতেই রাজ্য সরকার ব্যর্থ বলে অভিযোগ করেন বিজেপি সভাপতি।
সাধারণত এইদিন পরবর্তী কয়েক মাসের রাজনৈতিক কার্যকলাপ কী কী হবে,তার দিকনির্দেশ দিয়ে দেন তৃণমূলনেত্রী। তবে করোনা পরিস্থিতি যেভাবে ঘোরালো হচ্ছে, সেখানে তৃণমূল কীভাবে ভোটের আগে প্রচার করবে, তার কিছুটা ইঙ্গিত মমতার মঙ্গলবারর বক্তব্যে ইঙ্গিত মিলবে বলে ওয়াকিবহাল মহলের অভিমত।