গোটা দেশের পাশাপাশি করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়েছে বাংলায়। সেই কারণে রবিবারই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে সে প্রসঙ্গে চিঠি লিখেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। তার মধ্যে থেকে করোনার দাপট বৃদ্ধির কারণ হিসেবে চিঠিতে তিনটি বিষয় তুলে ধরেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
মমতা তাঁর চিঠিতে যে বিষয়গুলি উল্লেখ করেছিলেন সেগুলি হল, করোনার ভ্যাকসিন, রেমডেসিভির, টসিলিজুম্যাবের মতো প্রয়োজনীয় ওষুধ ও অক্সিজেন পর্যাপ্ত মাত্রায় এই রাজ্যে সরবরাহের বিষয়ে তিনি কেন্দ্রের হস্তক্ষেপের আবেদন জানিয়েছেন। চিঠিতে তিনি লিখেছেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতিতে মহামারী মোকাবিলার জন্য যুদ্ধকালীন তৎপরতায় আমাদের সামর্থ্য উল্লেখ্যযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করতে হবে।’
গত ২৪ ফেব্রুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রীকে একটি চিঠি দিয়েছিলেন মমতা। সেই চিঠিতে মানুষের মধ্যে বিনামূল্যে টিকা দিতে রাজ্যের তহবিল থেকে ভ্যাকসিন কিনে সেগুলি বিতরণ করার জন্য কেন্দ্রের কাছে অনুমতি চেয়েছিলেন তিনি। তাঁর অভিযোগ, রাজ্য এখনও সেই প্রয়োজনীয় ছাড়পত্র পায়নি। তিনি নিজের চিঠিতে উল্লেখ করেছেন, রাজ্যের জনসংখ্যার ঘনত্ব বিশেষ করে কলকাতা শহরের জনসংখ্যা অনেক বেশি। সেক্ষেত্রে দ্রুত গতিতে প্রচুর পরিমাণে টিকাকরণের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।
তবে কেন্দ্রের তরফে যে ভ্যাকসিনের ডোজ সরবরাহ করা হয়েছে, সেগুলো ‘দুর্লভ এবং ভুল’ যা রাজ্যের টিকাকরণ প্রকল্পগুলোকে প্রভাবিত করেছে। তিনি আরও বলেন, ‘ সেক্ষেত্রে কেন্দ্রের সরবরাহের অনিশ্চয়তার জন্য টিকাকরণের প্রকল্পগুলো ভুগছে।’
তিনি জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই ২.৭ কোটি মানুষের টিকাকরণ হয়ে গিয়েছে। আরও ৫.৪ কোটি ভ্যাকসিনের প্রয়োজন রয়েছে। সেক্ষেত্রে দ্রুত এই ঘাটতি পূরণ করতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেছেন যে, এ রাজ্যে রেমডেসিভির ও টেসিলিজুমাভের মতো টিকার সরবরাহ অত্যন্ত সীমিত। প্রত্যেকদিন রেমডেসিভিরের ৬,০০০ ও টেসিলিজুমাভের মাত্র ১,০০০ শিশি পাওয়া যায়। টেসিলিজুমাভের সরবরাহ না থাকার কারণে সেটি পাওয়া যায় না। যত দ্রুত সম্ভব এই প্রয়োজনীয় টিকাগুলোর সরবরাহ যাতেঅবিচ্ছিন্নভাবে হয়, সেজন্য প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি। এছাড়াও এরাজ্যে অক্সিজেনের ঘাটতির কথা উল্লেখ করে আক্রান্ত রোগীদের জন্য অক্সিজেনের সরবরাহ মসৃণ করতেও তিনি কেন্দ্রের কাছে আবেদন জানিয়েছেন। এমনকী, অক্সিজেনের সরবরাহ নিশ্চিত করতে তিনি সেলের সঙ্গেও বৈঠক করেছেন বলে জানিয়েছেন। সেল কর্তৃপক্ষ পর্যাপ্ত মাত্রায় অক্সিজেন সরবরাহের জন্য আশ্বাস দিয়েছেন বলেও জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।