পশ্চিমবঙ্গের তিনবারের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার আগে কয়েক দশক ধরে বিরোধী রাজনীতি করে ঘাম ঝরিয়েছেন। এমনকী দশবছর ক্ষমতায় থাকার পর তৃতীয়বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার লড়াইটাও বেশ কঠিন ছিল। তবে শেষ পর্যন্ত নিজে হেরে হলেও দলকে জিতিয়ে আনেন। তবে তৃতীয় দফায় দলের একাধিক নেতার দুর্নীতিতে প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছেন তৃণমূলের সর্বাধিনায়ক। তবে মানুষের আস্থার ওপর ভর করেই যে তিনি রাজনীতি করেন, তা সুন্দরবনে গিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছেন মমতা। বুধবার গভীর রাতে মমতার ফেসবুকে পোস্টেও সেই মন্ত্রই ফুটে ওঠে।
সুন্দরবন সফর শেষে গতরাতে এক দীর্ঘ পোস্টে মমতা লেখেন, ‘মোর নাম এই বলে খ্যাত হোক, আমি তোমাদেরই লোক।’ তৃণমূল নেত্রী লেখেন, ‘গ্রাম বাংলার সাথে আমার নাড়ির বন্ধন অচ্ছেদ্য গ্রন্থিতে আবদ্ধ। আজ উত্তর ২৪ পরগনা সফরে সেই বন্ধন আরও সুদৃঢ় হল। বাংলার মানুষ পরিচিত অতিথি-বৎসল হিসেবে। আজ এই জেলার খাঁপুকুরে আবারও সেই অভিজ্ঞতা হল। এক স্থানীয় বাসিন্দাকে আমি জিজ্ঞাসা করি, 'আপনারা কী খাচ্ছেন?' তাঁরা জবাব দেন, 'ভাত, ট্যাংরা মাছের ঝাল, আলু ওলের তরকারি।' আমিও মহানন্দে তাঁদের সাথে বসে পড়ি মধ্যাহ্নভোজে। তাঁরা আমাকে চামচ এগিয়ে দেন ভাত খেতে। আমি বলি, 'আমি তো চামচে খাই না! আপনাদের মতো হাত দিয়েই খাই।' সেই সময় সবার আন্তরিকতা ও ভালোবাসা দেখে আমার মনে হয়, আমি তাঁদের পরিবারেরই একজন। গ্রামের বাড়ির দাওয়ায় বসে প্রাণের আলাপচারিতার সঙ্গে এই খাবারের স্বাদ অমৃতসম। পাশাপাশি তাঁদের সাথে হাত লাগলাম ঝাঁটা বোনায়। তাঁদের শিল্পসত্ত্বা দেখে আমি মুগ্ধ'।’
মুখ্যমন্ত্রী আরও লেখেন, ‘স্কুল ও কলেজ পড়ুয়াদের সঙ্গেও অন্তরঙ্গ বার্তালাপ হয়। সবার মধ্যে বিতরণ করা হয় শীতবস্ত্র। টাকি গভর্নমেন্ট কলেজের নতুন বিল্ডিং-এর জন্য ১ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। নতুন প্রজন্মই বাংলার আলোর দিশারী। আমি দৃঢ়প্রত্যয়ী, তাঁদের অধ্যবসায়, প্রতিভা ও ঐকান্তিক প্রচেষ্টা বাংলাকে নিয়ে যাবে এক অনন্য উচ্চতায়। বাংলা আমাদের গর্ব, রাজ্যবাসী আমার প্রাণের দোসর। প্রশাসনিক ব্যস্ততার ফাঁকে এই সব দিনযাপনই আমার চরৈবেতি মন্ত্র। মানুষের ভালোবাসাই রাজ্যের উন্নয়নে আমৃত্যু অক্লান্ত পরিশ্রম করে যেতে আমায় প্রেরণা জোগাবে।’