এবারের বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন যে সার্বিকভাবে সফল, কার্যত সেই বার্তাই দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার নিজের এক্স হ্যান্ডেলে এই সংক্রান্ত একটি পোস্ট করেন তিনি। মমতা মনে করিয়ে দেন, বাংলাকে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যেই ২০১১ সালে রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধানের দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন তিনি।
তিনি লেখেন, '২০১১ সালে যখন আমি দায়িত্ব গ্রহণ করি, তখন আমি বাংলাকে সমৃদ্ধশালী এক ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য আমার জীবনের প্রতিটি ক্ষণ উৎসর্গ করার অঙ্গীকার করেছিলাম। আমার লক্ষ্য ছিল খুবই স্পষ্ট। আমি এমন এক বাংলা গড়ে তুলতে চেয়েছিলাম, যেখানে বাংলার প্রত্যেক বাসিন্দা গর্বের সঙ্গে বলতে পারবে - বাংলা আজ যা ভাবে, ভারত আগামিকাল তা ভাবে!'
এরপরই সরাসরি এবারের বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের সাফল্য তুলে ধরেন মমতা। তাঁর বার্তা, ২০১১ সালে যে স্বপ্ন পাথেয় করে তিনি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন, এবারের বাণিজ্য সম্মেলনের মঞ্চে সেই স্বপ্নকেই বাস্তবে পরিণত হতে দেখেছেন তিনি।
তাঁর দাবি, ইতিমধ্যেই রাজ্যের ১ কোটি ৭২ লক্ষ মানুষকে দারিদ্র্যসীমা থেকে বের করে আনা হয়েছে। এবং উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড ও সম্ভাবনার নিরিখে বাংলা নিজেকে একটি 'পাওয়ার হাউস' হিসাবে উন্নীত করতে সক্ষম হয়েছে।
মমতা জানিয়েছেন, এবারের বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে মোট ৪,৪০,৫৯৫ কোটি টাকার বিনিয়োগ প্রস্তাব পেয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। যা বাস্তবায়িত হলে উন্নয়ন তো হবেই, উপরন্তু - কর্মসংস্থানের অসংখ্য ক্ষেত্র ও সুযোগ তৈরি হবে। মমতা জানিয়েছেন, বিনিয়োগ টানার ক্ষেত্রে বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের এই সাফল্যে তিনি গর্বিত।
তাঁর আরও বার্তা, শিল্প স্থাপন এবং বাণিজ্যের সম্প্রসারণের নিরিখে নীতিনির্ধারক, বিভিন্ন কর্পোরেট সংস্থা এবং উদ্যোগপতিরাও যে বাংলার উপর আস্থা রাখছেন, সেটা স্পষ্ট। কারণ - মমতা নিজেই জানিয়েছেন, বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের মঞ্চে এই মানুষগুলির মাঝে দাঁড়িয়েই তিনি উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির সম্ভাবনাকে বাস্তব রূপ পেতে দেখেছেন।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার থেকেই বীরভূমের দেউচা পাচামিতে কয়লা খনি নির্মাণের একেবারে প্রথম পর্বের কাজ শুরু হয়। এর জন্য সেখানকার মানুষকে কুর্নিশ জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
অন্যদিকে, অশোক নগরে খনিজ তেলের অনুসন্ধানের প্রকল্প নিয়েও মমতা যে অত্যন্ত আশাবাদী, তাও স্পষ্ট করে দিয়েছেন। তাঁর মতে, এর ফলে আগামী দিনে ভারতের পেট্রোলিয়াম মানচিত্রেও আসন পাকা করে নেবে পশ্চিমবঙ্গ।
সবশেষে মমতা জানিয়েছেন, বাংলাকে নিয়ে একদিন তিনি যে স্বপ্ন দেখেছিলেন, তা আজ পূরণ হচ্ছে। আগামী দিনে বিশ্বব্যাপী উন্নয়নের অন্যতম শরিক ও নেতৃত্ব প্রদানকারী হিসাবে বাংলা নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করবে বলেও আশাপ্রকাশ করেছেন তিনি।